খ্রিস্টধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি মোদী সরকারের বৈষম্য-বঞ্চনা নিয়ে প্রশ্ন করার সময় এসেছে, সওয়াল তৃণমূলের

কেন এফসিআরএ-কে খ্রিস্টধর্মীয়দের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, কেন মণিপুরের মানুষদের অবহেলা করা হচ্ছে, এসব নিয়ে কেন মোদী সরকারকে প্রশ্ন করা হবে?

January 3, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
গ্রাফিক: মানস মোদক

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সম্প্রতি দিল্লিতে ক্যাথলিক বিশপ’স কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়া (সিবিসিআই) আয়োজিত ক্রিসমাস উদযাপনে সামিল হয়েছিলেন মোদী। তারপরই মোদী আমলে ভারতে খ্রিস্টধর্মীয় সংখ্যালঘুদের প্রতি কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বৈষম্যমূলক আচরণের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুললেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। তাঁর মতে, কেন এফসিআরএ-কে খ্রিস্টধর্মীয়দের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, কেন মণিপুরের মানুষদের অবহেলা করা হচ্ছে, এসব নিয়ে কেন মোদী সরকারকে প্রশ্ন করা হবে?

শুক্রবার, নিজের এক লেখাতেও একই প্রশ্ন তোলেন তৃণমূল সাংসদ। তাঁর কথায়, “খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের মানুষের কণ্ঠস্বর কেন্দ্র সরকারের কাছে পৌঁছনো উচিত। কেন ক্রিসমাসকে ‘গুড গভর্ন্যান্স ডে’ হিসাবে পালন করার চেষ্টা হচ্ছে? কেন খ্রিস্ট সম্প্রদায়ের দ্বারা পরিচালিত সংস্থাগুলোর বিরুদ্ধে ‘ফরেন কন্ট্রিবিউশন রেগুলেশন আইন’কে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে? এবার মোদীকে প্রশ্ন করা উচিত। অনেক ক্রিসমাস চলে গিয়েছে। এবার জবাবদিহি চাওয়ার সময় এসেছে।”

ডেরেকের মতে, “কেন মণিপুরের মানুষকে অবহেলা করা হচ্ছে? কেন ধর্মান্তরণ-বিরোধী আইন পাশ করানোয় উৎসাহিত করা হচ্ছে? এটা কি সংবিধানের মৌলিক অধিকারের ১৪,১৫ এবং ২৫ নম্বর ধারার লঙ্ঘন নয়?” তৃণমূল সাংসদের প্রশ্ন, “কেন্দ্র সরকার ওয়াকফ সংশোধনী বিল নিয়ে জোর খাটাচ্ছে, এক ধর্মীয় সংখ্যালঘুর সঙ্গে অন্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বিরোধ বাঁধাচ্ছে, মূলত কেরলে এমন করা হচ্ছে। কেন বিদ্বেষ ভাষণের বিরুদ্ধে একটি পদক্ষেপও করে না মোদীর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার?”

ডেরেকের দাবি, সংখ্যালঘু পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আক্রমণ বাড়ছে। খ্রিস্টানদের প্রতি হিংসার ঘটনাও দেশে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, ২০১৪ সাল থেকে দু’বার জাতিসংঘের অনুমোদন খুইয়েছে। তার কারণ জানতে চেয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যসভার সাংসদ। পাশাপাশি স্মরণ করিয়েছেন ফাদার স্ট্যান স্বামীর কথাও। উল্লেখ্য, ৮৪ বছর বয়সী আদিবাসী অধিকার আন্দোলনের নেতা ও পাদ্রি স্ট্যান স্বামী ২০২১ সালের জুলাইয়ে বন্দিদশায় করোনা আক্রান্ত অবস্থায় হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে প্রয়াত হন। ২০২০ সালে ইউএপিএ আইনে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। মুম্বই জেলে আট মাস বন্দি ছিলেন তিনি। চিকিৎসার প্রয়োজনেও তাঁকে জামিন দেওয়া হয়নি।

ডেরেক বলেন, তাঁর রাজনৈতিক জীবনে, সাংসদ হিসাবে তিনটে মেয়াদে একাধিক বিষয়ে তিনি লিখলেও, নীরব না-থাকতে পারার দায় থেকে এই প্রথম তিনি চার্চ ও খ্রিস্ট ধর্ম নিয়ে লিখতে বাধ্য হলেন। প্রসঙ্গত, বিগত ডিসেম্বরের শুরুতে দেশের খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী সাংসদেরা ক্যাথলিক বিশপ’স কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল। সেখানে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যচার নিয়ে সাংসদেরা সরব হয়েছিলেন। মোদীর সঙ্গে চার্চ কর্তৃপক্ষের ঘনিষ্ঠতা, ছবি তোলা ইত্যাদি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। এহেন আচরণ বন্ধের দাবিও করা হয়। তারপরেও ক্যাথলিক বিশপ’স কনফারেন্স অফ ইন্ডিয়া আয়োজিত বড়দিনের অনুষ্ঠানে মোদী অতিথির আসন অলংকৃত করলেন। ডেরেকের মতে, যাঁরা সংবিধানের মর্যাদা ও সাংবিধানিক অধিকার রক্ষা করছেন না, এবার তাঁদের সঙ্গ ত্যাগ করা সুনির্দিষ্ট পন্থা খ্রিস্টধর্মীয় নেতাদের নেওয়া উচিত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen