আজ আম্বেদকর জয়ন্তী, মনে করিয়ে দেওয়া যাক তাঁর কিছু বিখ্যাত উক্তি
দলিতদের হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে আনার গান্ধীজির প্রচেষ্টার জবাবে আম্বেদকার বলেন, একবার তিক্ত হয়ে যাওয়া কোন কিছুই আর তার মিষ্টত্ব ফিরে পায় না।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ডঃ বি আর আম্বেদকরের জন্ম হয় ১৪ই এপ্রিল ১৮৯১ সালে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর জেলায় মৌ নামে একটি গ্রামে। ওনার বাবার নাম রামজি সকপাল এবং মায়ের নাম ছিল ভীমা বাই। স্ত্রীর নাম ছিল রামাভাই আম্বেদকর।
১৯৪৭ সালের ১৫ই আগষ্ট ভারত স্বাধীন হওয়ার পরে বি আর আম্বেদকর ভারতবর্ষের প্রথম আইনমন্ত্রী হন। তিনি ভারতবর্ষের জন্য নতুন আইন রচনা করেন যা ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি ভারতের সংবিধান হিসাবে সারাদেশে গৃহীত হয়।
বাবা সাহেব আম্বেদকর একজন আইনবিদ, অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ এবং সমাজ সংস্কারক হিসেবে পরিচিত।
রইল ড: ভীম রাও আম্বেদকরের কিছু বিখ্যাত উক্তি ও বক্তব্যের অংশ:
১। গান্ধী যখন শুরুতে মন্দির প্রবেশাধিকার বিল নিয়ে আম্বেদকারের সমর্থন চান এবং পরবর্তীতে তা প্রত্যাখ্যান করেন, তখন আম্বেদকার গান্ধীকে চিঠিতে লেখেন যে এই প্রথম হিন্দুত্ববাদে আমার ঘৃণা আসেনি। আমি জানি ওরা ভুল আদর্শে বিশ্বাসী। হিন্দুত্ববাদের সাথে আমার মতবিরোধ আদর্শগত।
২। দলিতদের হিন্দুধর্মে ফিরিয়ে আনার গান্ধীজির প্রচেষ্টার জবাবে আম্বেদকার বলেন, একবার তিক্ত হয়ে যাওয়া কোন কিছুই আর তার মিষ্টত্ব ফিরে পায় না। সবকিছু বদলানো নায়। কিন্তু বিষকে অমৃতে পরিণত করা যায় না।
৩। ১৯৪৫- এ আম্বেদকার দাবি করেন, আমি হিন্দু হয়ে জন্মেছি কারণ তাতে আমার কোন হাত ছিল না। কিন্তু হিন্দু হয়ে আমি মরব না।
৪। ১৯৫৬ সালের ১৪ ই অক্টোবর নাগপুরে বুদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করার সময় আম্বেদকার বলেন, ‘আমার জন্মগত ধর্ম যা বর্ণবাদ এবং বৈষম্যের প্রতীক তা পরিত্যাগ করে আজ আমার পুনর্জন্ম হল’।
৫। তাঁর কিছু বিখ্যাত উক্তিঃ
“আমার ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশে কোন বিশ্বাস নেই, না আমি কখনো তাদের পুজো করব”।
“আমার ঈশ্বরের অবতার রাম এবং কৃষ্ণেও কোন বিশ্বাস নেই, না আমি কখনো তাদের পুজো করব”।
“আমার গৌরী, গণেশ এবং অন্যান্য দেবতাতেও বিশ্বাস নেই, না আমি কখনো তাদের পুজো করব”।
৬। তিনি আরো বলেন, উচ্চবর্ণের হিন্দুরা সর্বদা শিক্ষা, শক্তি এবং সম্পদকে নিজেদের মধ্যেই রাখতে চায়। তারা মুসলিম এবং নীচু বর্ণের হিন্দুদের ক্ষমতা- প্রতিপত্তি এবং শিক্ষার অধিকার থেকে সর্বদা বঞ্চিত করতে চায়।
৭। মুসলিম লিগ এবং হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে কোন তফাৎ খুঁজে পাননি আম্বেদকার।
৮। সাভারকারের বক্তব্যেরও বহুবার প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করেছেন আম্বেদকার।
৯। তিনি কিছু প্রশ্নও তুলেছিলেন হিন্দুত্ববাদ নিয়ে। সেগুলি হল,
- হিন্দুদের অন্যদের গোমাংস খাওয়ায় সমস্যা কোথায়?
- যদি এতোই অসুবিধে তাহলে তা একদম প্রথম থেকে ছিলনা?
- তাহলে তা পরবর্তীতে অস্পৃশ্য হল কেন?
- যদি আগে হিন্দুরা গোমাংস খেত তাহলে তারা ছাড়লো কেন?
১০। দেশভাগের সময় আম্বেদকার লেখেন, “হিন্দুত্ববাদ নিঃসন্দেহে আগামীতে দেশের সবচেয়ে বড় বিপর্যয় হিসেবে দেখা দেবে। হিন্দু ধর্ম স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের বিপদ। হিন্দু রাজকে যেকোন মূল্যে প্রতিরোধ করতে হবে”।