কংগ্রেসে ফের ‘বিদ্রোহের’ আঁচ! দিগ্বিজয়-থারুর জুটিতে সিঁদুরে মেঘ দেখছে হাইকমান্ড?

December 30, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৪৫: প্রবল শৈত্যপ্রবাহে গোটা উত্তর-পশ্চিম ভারত যখন কাঁপছে, তখন কংগ্রেসের (Congress) সদর দপ্তরে উষ্ণতা বাড়াচ্ছে নতুন এক ‘বিদ্রোহের’ গুঞ্জন। রাজনৈতিক মহলের মতে, ফের সংগঠিত হচ্ছে রাহুল গান্ধী (Rahul Gandhi) বিরোধী শিবির। আর এই শিবিরের নেতৃত্বে উঠে আসছে দিগ্বিজয় সিং, শশী থারুর এবং মধ্যপ্রদেশের ‘ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি’ কমল নাথের মতো প্রবীণ নেতাদের নাম।

কেরলের সাংসদ শশী থারুর (Shashi Tharoor) বরাবরই তাঁর স্বাধীনচেতা মন্তব্যের জন্য পরিচিত। তবে সাম্প্রতিক সমীকরণে তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাজ্যসভার সাংসদ তথা মধ্যপ্রদেশের প্রবীণ নেতা দিগ্বিজয় সিংয়ের (Digvijaya Singh) নাম। গত কয়েকদিনে দিগ্বিজয়ের সোশ্যাল মিডিয়া কার্যকলাপ এবং তাকে থারুরের সমর্থন- সব মিলিয়ে দলের অন্দরে নতুন মেরুকরণের ইঙ্গিত স্পষ্ট।

ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। নিজের X হ্যান্ডলে (সাবেক টুইটার) লালকৃষ্ণ আডবাণীর পায়ের কাছে নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) বসে থাকার একটি ছবি পোস্ট করেন দিগ্বিজয় সিং। সেখানে তিনি আরএসএস-র (RSS) সাংগঠনিক শক্তির প্রশংসা করেন, যা কংগ্রেসের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানের সঙ্গে বেশ বেমানান। এর ঠিক দিন সাতেক আগেও তিনি দলের পরিকাঠামো এবং রাহুল গান্ধীকে (Rahul Gandhi) নিশানা করে একটি পোস্ট করেছিলেন। তাঁর স্পষ্ট দাবি ছিল, দলের সংগঠনে ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন, যা শীর্ষ নেতৃত্ব বুঝতে ব্যর্থ হচ্ছেন।

রবিবার কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে দিগ্বিজয়ের সেই সুরেই সুর মেলালেন শশী থারুর (Shashi Tharoor)। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘আমিও চাই দলের সংগঠন আরও সুদৃঢ় হোক।’’ অতীতে এই দুই নেতাকে সচরাচর একে অপরের প্রশংসা করতে দেখা যায়নি। তাই হঠাৎ এই যুগলবন্দি এবং দুই নেতার নিশানায় রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব থাকায়, সিঁদুরে মেঘ দেখছে হাইকমান্ড।

প্রশ্ন উঠছে, এই বিরুদ্ধ স্রোতে কি শুধু দিগ্বিজয় আর থারুরই সাঁতার কাটছেন? নাকি নেপথ্যে রয়েছেন আরও অনেকে? সূত্রের খবর, দলের ‘বিদ্রোহী’দের তালিকা খুঁজতে গিয়ে রীতিমতো কাটাকুটি খেলতে হচ্ছে শীর্ষ নেতৃত্বকে। সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম (P Chidambaram) এবং কমল নাথের (Kamal Nath) মতো হেভিওয়েট নেতারাও। তবে হাইকমান্ডের কপালে বিশেষ ভাঁজ ফেলেছে বাংলার প্রাক্তন সাংসদ অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Ranjan Chowdhury) সাম্প্রতিক কার্যকলাপ। শীর্ষ নেতৃত্বের অনুমোদন ছাড়াই তিনি প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে একাধিক চিঠি লিখেছেন এবং মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন। অধীরের এই ‘একলা চলো’ নীতি ভালো চোখে দেখছে না দল।

এর আগে গুলাম নবি আজাদের (Ghulam Nabi Azad) নেতৃত্বে ‘জি-২৩’ ভুক্ত নেতারা যে বিদ্রোহের আগুন জ্বালিয়েছিলেন, বহু কষ্টে তাতে রাশ টেনেছিল হাইকমান্ড। কিন্তু বছরের শেষে এসে দিগ্বিজয়-থারুর অক্ষ এবং নেপথ্যে থাকা প্রবীণ নেতাদের প্রচ্ছন্ন সমর্থন কি ফের নতুন কোনও রাজনৈতিক ঝড়ের জন্ম দেবে? নাকি শৈত্যপ্রবাহের মতোই এই বিদ্রোহও সাময়িক? সেদিকেই এখন তাকিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen