জলেই ছুটবে গাড়ি, যুগান্তকারী আবিষ্কার বর্ধমানের কৃষক পরিবারের সন্তান রিয়াজউদ্দিনের

বর্ধমানের কাটোয়ার বাঁধমুড়ো গ্রামের চাষির বাগবুল ইসলামের ছেলে শেখ রিয়াজউদ্দিনের আবিষ্কার এমনই আশার দেখাচ্ছে।

June 17, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
ছবিঃ ইন্টারনেট থেকে সংগৃহীত

জলেই এগোবে গাড়ি, ঘুরবে চাকা! অবাক হলেও ইহা সত্যি। আর এই আপাত অবাস্তব শ্রাব্য জিনিসটিকে বাস্তবায়িত করছেন এক বঙ্গ সন্তান। এবার জল থেকেই উৎপাদিত হাইড্রোজেনই বিভিন্ন যানবাহনের জ্বালানি রূপে ব্যবহৃত হবে। বর্ধমানের কাটোয়ার বাঁধমুড়ো গ্রামের চাষির বাগবুল ইসলামের ছেলে শেখ রিয়াজউদ্দিনের আবিষ্কার এমনই আশার দেখাচ্ছে।

জল থেকে উৎপন্ন হাইড্রোজেন দিয়েই গাড়ি চালানোর উপায় আবিষ্কার করে বেস্ট থিসিস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন তরুণ গবেষক। সেই সঙ্গে এই যুগান্তকারী আবিষ্কার তাকে এনে দিয়েছে স্বর্ণপদক। পাঞ্জাবের মোহালির ইন্সটিটিউট অব ন্যানো সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে তার গবেষণা ‘বেস্ট থিসিস অ্যাওয়ার্ড’ সম্মানে ভূষিত করেছে। এনে দিয়েছে আমেরিকা, সৌদি আরে গবেষণার করার আমন্ত্রণ। রিয়াজউদ্দিনের গবেষণা ইতিমধ্যে দেশ-বিদেশে সাড়া ফেলে দিয়েছে। আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির ন্যানো জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে তার গবেষণা। রিয়াজউদ্দিন আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি ও সৌদি আরবের কিং আবদুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে পোস্ট ডক্টরেট করার ডাক পেয়েছেন।

জল থেকে হাইড্রোজেন উৎপাদন করে, মোটর চালানোই হল তার গবেষণার মূল বিষয়। তার কথায়, জল থেকে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপাদন হয়। সেই হাইড্রোজেনকে ব্যবহার করে বিদেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন ফুয়েল কার চালানো হচ্ছে। কিন্তু জলকে ভেঙে হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন উৎপন্ন করতে যে অনুঘটকের দরকার পড়ে তা অত্যন্ত খরচ সাপেক্ষ ব্যাপার। কিন্তু টিন, নিকেল, কপার ইত্যাদির মতো সহজলভ্য ধাতুগুলিকে অনুঘটক রূপে ব্যবহার করেও সহজেই জলকে ভেঙে হাইড্রোজেন উৎপাদন যায়। এর খরচ অত্যন্ত কম। উৎপাদিত হাইড্রোজেনের মধ্যমে সহজেই হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল তৈরি করা সম্ভব।

হাইড্রোজেন ফুয়েল সেল গাড়ির ব্যাটারি সৌরশক্তির দ্বারা চার্জ হবে। সেক্ষেত্রে বিদ্যুতের খরচও হবে না। তরুণ গবেষকের মতে, আগামীতে হাইড্রোজেনের মাধ্যমেই গাড়ি চলবে। এই কাজে গবেষক কৌশিক ঘোষের সাহায্য পেয়েছেন বলেও জানাচ্ছেন তিনি।

প্রসঙ্গত, ছোটবেলা থেকেই রিয়াজউদ্দিন অত্যন্ত মেধাবী। গ্রামের স্কুলে পড়াশোনার পর বর্ধমান আল আমিন মিশন থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন তিমি। এরপর আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর হন। এরপর সর্বভারতীয় নেট ও গেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে মোহালির ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে পিএইচডি করছেন তিনি। বিগত সাড়ে পাঁচ বছর যাবৎ তিনি ন্যানো সায়েন্স নিয়ে গবেষণা করছেন। ছেলের যুগান্তকারী আবিষ্কারে খুশি রিয়াজউদ্দিনের পরিবারসহ গোটা গ্রাম।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen