তৃণমূলের পথেই JPC বয়কট সমাজবাদী পার্টি, AAP-র! বিরোধী রাজনীতির অভিমুখ ঠিক করছে মমতার দল?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৫১: জেলবন্দি মন্ত্রীদের অপসারণের জন্য সংবিধান সংশোধনী বিল (130th The Constitution Amendment Bill) এনেছে কেন্দ্র। এই বিলের বিরোধিতায় সরব বিরোধী শিবির। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একে Black Bill বলে আখ্যা দিয়েছেন। বিতর্কিত
সংবিধান সংশোধনী বিল সংক্রান্ত সংসদীয় যৌথ কমিটিতে (JPC) আগেই প্রতিনিধি না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় তৃণমূল কংগ্রেস। একই পথে হেঁটে সমাজবাদী পার্টি জানায় তারাও প্রতিনিধি পাঠাবে না। একই সুর শোনা গেল আম আদমি পার্টিতে।
একের পর এক বিরোধী দল এই কমিটি থেকে নাম সরিয়ে নেওয়ায় চাপে কংগ্রেস। অন্যদিকে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথেই হাঁটছেন দেশের বিজেপি বিরোধী শক্তিরা। কার্যত বাংলায় বসে মমতা ঠিক করে দিচ্ছেন বিরোধী রাজনীতির অভিমুখ। সম্প্রতি SIR ইস্যুতে ভারতের নির্বাচন কমিশনের দপ্তর ঘেরাওয়ের কর্মসূচি নিয়েছিল ইন্ডিয়া শিবির। একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে সেই ডাক দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তৃণমূল। ফলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলই যে বিরোধী শক্তির অলিখিত নিয়ন্ত্রক তা প্রমাণ হয়েছে সাম্প্রতিক ঘটনাক্রম থেকে।
আজ, রবিবার সংবিধান সংশোধনী বিলের বিরোধিতা করে এক ভিডিও বার্তায় AAP সাংসদ সঞ্জয় সিং জানিয়েছেন, তাঁদের কোনও প্রতিনিধি এই কমিটিতে থাকছে না। তিনি আরও বলেন, “মোদী সরকার অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক বিল নিয়ে এসেছে। এই বিলের লক্ষ্য হল অবিজেপি রাজ্য সরকারগুলিকে ভেঙে দেওয়া ও সরকার কেনা, বিরোধী নেতাদের জেলে বন্দি করা। দেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করতে এই বিল আনা হয়েছে। ফলে আম আদমি পার্টি সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই বিলের জন্য যে সংসদীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে সেই কমিটিতে আমাদের কোনও সদস্য থাকবেন না। দুর্নীতি দূর করতে এই বিল নয়, কারণ দুর্নীতির সঙ্গে বিজেপির রোমিও-জুলিয়েটের মতোই সম্পর্ক। দেশের সমস্ত দুর্নীতিগ্রস্ত নেতারা বিজেপিতে। দেশের সম্পত্তি ওরা আদানির হাতে তুলে দিচ্ছে। দুর্নীতি ওদের মজ্জায়। ফলে এই বিলের উদ্দেশ দুর্নীতি ধ্বংস করা নয়, দেশের গণতন্ত্রকে নষ্ট করা।”
এর আগে শনিবার তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন নিজের X হ্যান্ডলে জানিয়েছিলেন, তৃণমূল কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল সংক্রান্ত সংসদীয় যৌথ কমিটিতে কোনও প্রতিনিধি পাঠাবে না। এটা নাটক বলেই মনে করছেন তাঁরা। ডেরেক লেখেন, “মোদী -শাহ জেপিসিকে প্রহসনে পরিণত করেছে। সমস্ত জেপিসিতেই শাসক দলের সাংসদদের সংখ্যার আধিক্যর জেরে চেয়ারম্যান পদে বিজেপিরই কাউকে বসানো হয় এবং কমিটির যে চূড়ান্ত রিপোর্ট তৈরি করা হয় তা সর্বসম্মতিক্রমে নয় বরং বিরোধীদের দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ সংশোধনীও ভোটাভুটির মাধ্যমে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। চূড়ান্ত রিপোর্টে বিরোধীদের ডিসেন্ট নোট জুড়ে দেওয়া ছাড়া তাদের মতামতের কোনও প্রতিফলনই সেখানে থাকে না।”
প্রসঙ্গত, ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিলটিকে ৩১ সদস্যের সংসদীয় যৌথ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে। তৃণমূল, সমাজবাদী পার্টির পর এবার সেই কমিটি থেকে নিজেদের সরিয়ে নিল আপ। বিরোধীরা একে একে কমিটি থেকে নাম প্রত্যাহার করায় চাপ বাড়ছে হাত শিবিরের উপরে।