পাশে বসে খেলেও ‘ব্যস্ত’অমিত শাহকে বলতেই পারলেন না সমস্যার কথা

তবে আনন্দও কম হচ্ছে না। ‘খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাড়িতে বসিয়ে স্ত্রীর হাতের রান্না করা খাবার খাওয়াতে পেরেছি। এ তো বিরাট পাওয়া’, বললেন বিভীষণ।

November 6, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

‘কথা হয়েছিল তবু কথা হল না’! আশা ভোঁশলের বিখ্যাত এই গানের প্রথম কলিই যেন সত্যি হয়ে গেল বিভীষণের জীবনে। বিভীষণ হাঁসদা (bibhishan Hasda)। আপাতত যিনি চতুরডিহির সেলিব্রিটি। হবে নাই বা কেন! খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসে তাঁর বাড়িতে বসে পাত পেড়ে খেয়েছেন। তবু বিভীষণের খেদ যাচ্ছে না। কেন? কারণ তিনি ভেবেছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দু’টো মনের কথা কইবেন। গ্রামের সমস্যার কথা জানাবেন। বাড়িতে অসুস্থ মেয়ে, জানাবেন সেকথাও। কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ব্যস্ততায় সব মাটি হয়ে গেল। সৌজন্যের বাক্য বিনিময় ছাড়া কিছুই হল না। তাই আক্ষেপ যাচ্ছে না বিভীষণের। তবে আনন্দও কম হচ্ছে না। ‘খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাড়িতে বসিয়ে স্ত্রীর হাতের রান্না করা খাবার খাওয়াতে পেরেছি। এ তো বিরাট পাওয়া’, বললেন বিভীষণ।

অমিত শাহ বাড়িতে মধ্যাহ্নভোজে (Lunch) আসবেন। সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পরেই নিজের ও গ্রামের কিছু সমস্যার কথা তাঁকে জানাবেন বলে মনে মনে ঠিক করে রেখেছিলেন বিভীষণ। কথামতো বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁর বাড়িতে হাজির হন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তাঁর পাশে বসেই একসঙ্গে দুপুরের খাবার খান। কিন্তু অমিত শাহ তাঁর বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া পর প্রথম প্রতিক্রিয়াতেই আক্ষেপ ফুটে ওঠে বিভিষণের কথায়। তিনি বলেন, আমাদের গ্রামে পানীয় জলের সমস্যা রয়েছে। আমার মেয়েটাও অসুস্থ। সে ডায়াবেটিসে ভুগছে। ভেবেছিলাম, এসব কথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানাব। কিন্তু সেই সুযোগ আর হল না!

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিজের হাতে রান্না করে খাওয়াতে পেরে অবশ্য বিভীষণবাবুর স্ত্রী মণিকা খুবই খুশি। তিনি বলেন, এত বড় মাপের একজন মানুষ আমাদের বাড়িতে এসে আমার হাতের রান্না খেয়ে প্রশংসা করবেন, তা কখনও কল্পনাও করতে পারিনি।

এদিন সকাল ঠিক ১১টা ১০ মিনিটে অমিত শাহ (Amit Shah) হেলিকপ্টারে করে বাঁকুড়ায় আসেন। প্রথমেই পোয়াবাগানে বীরসা মুণ্ডার মূর্তিতে মালা দেন। পরে রবীন্দ্রভবনে কর্মী বৈঠক করেন। দুপুর ২টো ৫০ নাগাদ রবীন্দ্রভবন থেকে চুতুরডিহি গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেন। তার আগেই স্বরষ্ট্রমন্ত্রীর জন্য মাটির উনুনে এবং মাটিরই হাঁড়িতে ভাত, মুসুর ডাল, শাকভাজা, আলুভাজা, পটলভাজা, বেগুনভাজা, আলুপোস্ত ও পাঁচমেশেলি সবজি রান্না করেন মণিকাদেবী। গড়েন রুটিও। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বাড়িতে যাওয়ার পর আদিবাসী রীতি মেনে প্রথমেই তাঁর পা ধুইয়ে দেন। পরে বাড়ির দুয়ারে আসন পাতেন মণিকাদেবী। আসনের সামনে রাখা চৌকির উপরে কলা পাতার উপরে কাঁসার থালা ও তার উপরে শালপাতা দিয়ে রান্না করা খাবার সাজিয়ে দেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর পাশে বসেই বিভীষণকে খেতে বলেন। একই সঙ্গে বসে খান মুকুল রায়, দিলীপ ঘোষ, কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। অতিথিদের খাবার পরিবেশন করেন হাঁসদা পরিবারের পাঁচ মেয়ে। অমিত শাহ এদিন মিষ্টি ছাড়া প্রায় সবই খেয়েছেন। মধ্যাহ্নভোজ সেরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি খুব তৃপ্তি সহকারে আদিবাসী বোনদের রান্না করা খাবার খেয়েছি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen