আরাবল্লী ইস্যুতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা সুপ্রিম কোর্টের, সোমে শুনানির সম্ভাবনা

December 28, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৪.৩০: ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছিল আরাবল্লী পর্বতমালাকে, এমনই অভিযোগ পরিবেশ কর্মী ও আম জনতার। আরাবল্লী বাঁচাতে প্রতিবাদে সরব হয়েছে দেশবাসী। অভিযোগ, শিল্পপতি, কর্পোরেট বন্ধুদের জন্য উত্তর ও পশ্চিম ভারতের ফুসফুস আরাবল্লীকে শেষ করার ফন্দি এঁটেছে মোদী সরকার। যা নিয়ে তুঙ্গে বিতর্ক। এবার এই ইস্যুতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। সোমবার প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্তের বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হতে পারে বলে খবর।

দেশের সর্বোচ্চ আদালত একটি রায়ে সম্প্রতি জানিয়েছে, আরাবল্লী পাহাড়ের আশপাশে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ১০০ মিটারের কম উচ্চতার পাহাড়গুলিকে আর আরাবল্লী পাহাড়ের অংশ হিসাবে গণ্য করা হবে না। সেগুলি আর সংরক্ষণের আওতায় থাকবে না। আরাবল্লীর ৯০ শতাংশ পাহাড়ের উচ্চতাই ১০০ মিটারের নিচে। ফলে এই রায়ের জেরে কার্যত ধ্বংসের মুখে পড়বে এই প্রাচীন পর্বতশ্রেণি। সুপ্রিম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকার। উল্লেখ্য, আরাবল্লীর নয়া ‘সংজ্ঞা’ তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক। প্রস্তাবিত সেই সংজ্ঞাতেই শিলমোহর দিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

শীর্ষ আদালতের রায়ের পরই শুরু হয় বিতর্ক। হরিয়ানা, রাজস্থান, গুজরাতের সাধারণ বাসিন্দা-সহ পরিবেশপ্রেমীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। প্রসঙ্গত, ভারতে আরাবল্লীর গুরুত্ব অপরিসীম। আরাবল্লী পর্বতমালার জীববৈচিত্র দেশের সম্পদ। হরিয়ানা, গুজরাত, রাজস্থানের মতো অঞ্চলে জলের প্রধান উৎস, বহু আদিবাসী জীবন যাপনের জন্য আরাবল্লীর উপর পুরোপুরি নির্ভরশীল। আরাবল্লী থেকে উৎপন্ন চম্বল, সবরমতী ও লুনির মতো নদী কার্যত পশ্চিম ভারতের প্রাণ। আরাবল্লী ক্ষতিগ্রস্ত হলে দেশের বিস্তীর্ণ অংশের বাস্তুতন্ত্রে গুরুতর প্রভাব পড়বে। রাজস্থানের থর মরুভূমির বিস্তৃতি আটকায় আরাবল্লী। এই পর্বতমালা না-থাকলে দিল্লিও মরুভূমির কবলে চলে যেত। পরিবেশকর্মীদের দাবি, আরাবল্লী যদি খনি, রিয়েল এস্টেটের মতো কর্পোরেটদের হাতে পড়ে তবে ভয়ংকর দূষণ তো হবেই, জীববৈচিত্র ধ্বংস হবে। ভূগর্ভস্থ জলের ভাণ্ডার কমবে। জলসংকট চরম আকার নেবে।

অভিযোগ, কয়লা ও নির্মাণ শিল্পে ব্যবহৃত পাথরের জন্য আরাবল্লীতে খনন চালানোর আইনি পথ অনুকূল করছে মোদী সরকার। আরও অভিযোগ, এতদিন যে এলাকাগুলি আরাবল্লী পাহাড়শ্রেণি রূপে গণ্য হয়ে এসেছে, নয়া নিয়মে তা আর সংরক্ষণের আওতায় থাকবে না। আরাবল্লীর ৯০ শতাংশই সুরক্ষাহীন হয়ে পড়বে। রাজস্থান, গুজরাত ও দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত আরাবল্লীতে অবাধে খনন চালানো হবে। এই পরিস্থিতিতে শুরু হয় আন্দোলন। চাপের মুখে পড়ে গত বুধবার নতুন নির্দেশ দেয় কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রক সংশ্লিষ্ট সমস্ত রাজ্যকে আরাবল্লীতে নতুন করে খননের ইজারা প্রদানের উপর সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারির নির্দেশ দেয়। এবার সুপ্রিম কোর্ট পদক্ষেপ করল।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen