ছাব্বিশের আগে ‘মানভঞ্জনে’ খোদ শাহ! ভোটের বঙ্গে ফের দিলীপকে সম্মুখসমরে আনছে দিল্লি?

December 31, 2025 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:২৫: বঙ্গ বিজেপিতে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দীর্ঘদিন ধরেই কোণঠাসা। নেতৃত্বের আচরণে তাঁর অভিমান ভাঙাতে বুধবার কলকাতায় দলের সাংসদ ও বিধায়কদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। সেখানে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ডাকা হয় দিলীপ ঘোষকে (Dilip Ghosh)। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কি ফের পুরনো সেনাপতির ওপর আস্থা ফিরছে দিল্লির?

বঙ্গ বিজেপির ইতিহাসে দিলীপ ঘোষ যে অন্যতম সফল রাজ্য সভাপতি, তা একবাক্যে স্বীকার করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাঁর জমানাতেই বাংলায় বিজেপির সংগঠন তৃণমূল স্তরে শিকড় ছড়িয়েছিল। বিশেষ করে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে (প্রদত্ত তথ্যে ২০১৮ উল্লেখ থাকলেও মূলত ২০১৯-এর ফলাফল) বাংলা থেকে ১৮টি আসনে পদ্ম ফোটানোর নেপথ্যে দিলীপ ঘোষের ‘দাবাং’ রাজনীতির অবদান অনস্বীকার্য। কিন্তু সময়ের চাকা ঘুরতেই দলে নতুন মুখের ভিড় বেড়েছে, আর ক্রমশ পেছনের সারিতে চলে গিয়েছেন পোড় খাওয়া নেতারা। বিগত কয়েক মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) বা অমিত শাহের কলকাতা সফরে বা জনসভায় সেভাবে দেখা যায়নি দিলীপ ঘোষকে, যা নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষোভও উগরে দিয়েছিলেন তিনি।

তবে দিলীপ ঘোষ আড়ালে চলে যাওয়ার পর থেকেই বাংলায় বিজেপির নির্বাচনী গ্রাফ নিম্নমুখী। একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবি হয়েছে গেরুয়া শিবিরের। দলের নিচুতলার কর্মীদের একাংশ এবং রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দিলীপ ঘোষের মতো লড়াকু নেতার অভাবেই সংগঠনে ভাটা পড়েছে। সম্প্রতি তমলুকের বিজেপি সাংসদ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও (Abhijit Gangopadhyay) দিলীপের হয়ে ব্যাট ধরেছিলেন। তিনি স্পষ্টই জানান, “দিলীপ ঘোষের আমলেই ১৮ সাংসদ, এটা ভুললে চলবে না। উনি সামনে না থাকলে প্রচারে খামতি থাকছে। ওনার মধ্যে এখনও সেই আগুন আছে।” অর্থাৎ হারানো জমি ফিরে পেতে যে দিলীপের ‘ম্যাজিক’ প্রয়োজন, তা অনুভব করতে শুরু করেছেন দলের বর্তমান সাংসদরাও।

এই প্রেক্ষাপটে বুধবারের বৈঠকটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। দলীয় সূত্রে খবর, মঙ্গলবার রাতেই বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা সুনীল বনশল (Sunil Bansal) ফোন করেন দিলীপ ঘোষকে এবং শাহের বৈঠকে উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানান। সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করে বুধবার সকালেই বৈঠকে হাজির হন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি।

রাজনৈতিক মহলের ধারণা, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে বঙ্গ বিজেপির কোন্দল মেটাতে মরিয়া কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সংগঠনকে চাঙ্গা করতে এবং কর্মীদের মনোবল বাড়াতে ফের দিলীপ ঘোষকে সম্মুখসমরে নিয়ে আসার পরিকল্পনা হতে পারে। অমিত শাহের এই উদ্যোগ দিলীপের অভিমান ভাঙিয়ে দলের ফাটল জোড়া লাগাতে পারে কি না, এখন সেটাই দেখার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen