‘মৃত্যুকুম্ভ’ বিতর্কে মমতার পাশে শংকরাচার্য, যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি

১৪৪ বছরের কোনও বিষয় ছিল না? সবটাই সরকারের মিথ্যা প্রচার?

February 21, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ১৪৪ বছরের কোনও বিষয় ছিল না? সবটাই সরকারের মিথ্যা প্রচার? কুম্ভে সরকারের ব্যবস্থাকে ‘কুব্যবস্থা’ ছাড়া কিছুই বলাই যায় না। বিস্ফোরক মন্তব্য জ্যোতির্মঠের শঙ্করাচার্য অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতীর।

মহাকুম্ভকে ‘মৃত্যুকুম্ভ’ বলে মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি তাঁর মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব। তবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থন করেছেন শংকরাচার্য স্বামী অভিমুক্তেশ্বরানন্দ সরস্বতী। প্রকৃত ব্যবস্থাপনার করা হয়নি বলেই যোগী প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন তিনি।

তিনি বলেন, “৩০০ কিলোমিটার জ্যাম, খারাপ ব্যবস্থা নয় তো আর কী? যারা গিয়েছেন ২৫-৩০ কিলোমিটার হাঁটতে হয়েছে, কুব্যবস্থা নয়তো আর কী? স্নানের জলে, মল জল মিশে রয়েছে। বৈজ্ঞানিকরা বলছেন এই জল স্নানের অযোগ্য, সেখানেই আপনারা কোটি কোটি ভক্তকে স্নান করতে বলছেন। তাঁরা নিজের শ্রদ্ধা-ভক্তি থেকে স্নান করছেন সেটা আলাদা বিষয়, কিন্তু এটা সরকারের কাজ ছিল, নালা-নর্দমার জল যাতে কিছুদিন না এসে পড়ে তা লক্ষ রাখা।”

আরও বলেন, “১২ বছর আগে থেকে জানতেন কুম্ভ আসছে, কেন ব্যবস্থা করলেন না। সকলে জানতেন আমাদের কাছে কতটুকু জায়গা রয়েছে, তাহলে সেই হিসাবে ব্যবস্থা করা উচিত ছিল। কত লোক মারা গিয়েছন। আমি কারও পক্ষ বা বিপক্ষে কথা বলছি না, যা সত্যি তাই বলছি।”

১৪৪ বছর পরে মহাকুম্ভের আয়োজনকেও মিথ্যা প্রচার বলেছেন শঙ্করাচার্য। তিনি বলেন, “কোনও পরিকল্পনা নেই তার উপরে মিথ্যা প্রচার। ১৪৪ বছর ১৪৪ বছর করে বলা হচ্ছে। ১৪৪ বছরের কোনও বিষয় নেই। মিথ্যা প্রচার করে মানুষকে আকর্ষণ করা হয়েছে।”

শঙ্করাচার্যের কথায়, “আপনার কাছে যখন খাবার নেই তখন লোককে খাওয়ানোর জন্য নিমন্ত্রণ করবেন কেন? মুখ্যমন্ত্রী কেন বললেন না আমাদের কাছে এত একর জমি আছে, এত একর রাস্তা আছে, এই গাড়ি রাখার জায়গা আছে। দয়া করে এই পরিমাণ লোক আসুন। দয়া করে তাঁর বেশি কেউ আসবেন না, যাতে কোনও অব্যবস্থা ছড়িয়ে পরে এবং মানুষের মৃত্যু হয়।”

আধিকারিকদের কাজ নিয়েও প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “ব্যবস্থা কী? কেন আধিকারিকরা আছেন? তাঁদের কাজ কী? কেন ওঁদের অতিরিক্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়? এই কাজগুলো করার জন্যই তো! সুব্যবস্থার আয়োজন করাই দায়িত্ব।”

সরকারি ব্যবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ শঙ্করাচার্য বলেন, “অন্ধের মতো মানুষকে আসতে বলা হয়েছে। আসুন, আসুন করে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এর পরে কেউ দেখার নেই কী হচ্ছে। সেতু বানানো হয়েছে, কিন্তু তা বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। কোনও সমস্যায় পড়লে কাউকে বার করার জন্য বিকল্প রাস্তার বন্দোবস্ত নেই।”

মৃত্যুকে লুকিয়েছেন, বিস্ফোরক মন্তব্য শঙ্করাচার্যের। তিনি বলেন, “ভিড় সামলানোর কোনও পরিকল্পনা নেই, আতিথেয়তা ভাল নয়। শুধু তাই নয়, লোক মারা গিয়েছে, আপনারা সেই মৃত্যুকে লুকোনোর কাজ করেছেন। যা ঘোর অপরাধ।”

উল্লেখ্য, প্রয়াগরাজে মহাকুম্ভে একের পর এক দুর্ঘটনা ঘটে চলেছে। কখনও পদপিষ্ট হয়ে পুণ্যার্থীদের মৃত্যু হচ্ছে। কখনও আগুন লাগছে। কখনও আবার মহাকুম্ভের পথে ট্রেনে উঠতে গিয়ে হুড়োহুড়িতে প্রাণ যাচ্ছে সাধারণ মানুষের। মহাকুম্ভে একের পর এক দুর্ঘটনা নিয়ে বিধানসভা থেকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “মহাকুম্ভের কথা বলে লাভ নেই। ওটা এখন মৃত্যুকুম্ভ হয়ে গিয়েছে।”

তাঁর এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চলছে জোর শোরগোল। তবে শংকরাচার্যের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, “শংকরাচার্যও ব্যবস্থাপনার সমালোচনা করেছেন। তাহলে বিজেপি, সুকান্ত বলুন যা বলছেন তিনি তা ভুল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্যে মহাকুম্ভের গরিমা নষ্ট হয়নি। অব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি ওই কথা (মৃত্যুকুম্ভ) বলেছেন।”

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen