মহারাষ্ট্রে ফের মন্ত্রিসভার বৈঠক বয়কট শিন্ডে সেনার, বিপদে মহাযুতি সরকার?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৪৭: মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে আবারও নাটকীয় টানাপোড়েন। মহাযুতি সরকার গঠনের এক বছরও কাটেনি। এর মধ্যেই সঙ্কটে দেবেন্দ্র ফড়নবিশের (Devendra Fadnavis) নেতৃত্বাধীন মহায়ুতি সরকার। BJP-র বিরুদ্ধে তাদের দল ভাঙানোর অভিযোগ একনাথ শিন্ডের (Eknath Shinde) শিবসেনার। এই নিয়ে দুই শরিক দলের কোন্দল এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে মঙ্গলবার মহায়ুতি সরকারের সাপ্তাহিক মন্ত্রিসভার বৈঠক বয়কট করলেন শিবসেনার মন্ত্রীরা। শুধুমাত্র উপ-মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে এই বৈঠকে যোগ দেন।
সামনেই মহারাষ্ট্রের পুরসভাগুলির নির্বাচন। তার আগে বিভিন্ন জায়গায় তাদের নেতা-কর্মীদের ‘চোরাশিকার’ করছে BJP, এমনটাই শিবসেনার অভিযোগ। একের পর এক শিবসেনা নেতা দল ছেড়ে BJP-তে যোগ দিচ্ছেন।
গত বেশ কয়েকদিন ধরেই এই নিয়ে দুই শরিক দলের মধ্যে অশান্তি চলছিল। সম্প্রতি কল্যাণ-ডোম্বিভলিতে পূজা মাত্রে এবং দয়ানন্দ গায়কোয়াড নামে শিবসেনার দুই বড় নেতা তাদের শয়ে শয়ে সমর্থক নিয়ে BJP-তে যোগ দিয়েছেন।
এর পিছনে BJP-র রাজ্য সভাপতি রবীন্দ্র চহ্বনের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ। তিনি ডোম্বিভলিরই বাসিন্দা। এর পরেই ঘরের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসে পড়েছে।
তবে ফাটল মেরামতের কাজও শুরু হয়েছে। বয়কটকারী মন্ত্রী প্রতাপ সারনায়েক জানিয়েছেন, তাঁরা ফড়নবিশের সঙ্গে দেখা করে ক্ষোভের কথা বলেছেন এবং ‘এই ভুলগুলি নিচুতলায় হয়, সংশোধন করা হবে’।
যদিও উপ-মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ পাল্টা অভিযোগ করেছেন যে, উল্লাসনগরে শিবসেনাই প্রথম বিজেপির কর্মীদের ভাঙিয়েছিল। NCP সভাপতি তথা রাজ্যের আরও এক উপ-মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
অন্যদিকে, বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বাওয়ানকুলে মন্ত্রিসভার বৈঠক বয়কটের বিষয়টি অস্বীকার করে দাবি করেছেন, BJP-র মন্ত্রীর মতো শিবসেনার মন্ত্রীরাও স্থানীয় নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন।
তিনি বলেছেন, ‘কোনও দলই জোট শরিকদের কর্মীদের নিজেদের দলে নেবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষোভ থাকতে পারে।’
শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে) দলের আরও এক নেত্রী সুষমা আন্ধারে বলেছেন, ‘BJP শিন্দেকে ব্যবহার করবে এবং তার পরে তাঁকে রাজনৈতিক ভাবে পুরো শেষ করে দেবে।’
গত বছর মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে একনাথ শিন্ডেকে সরানোর পর থেকেই দলীয় অসন্তোষ ঘনীভূত হচ্ছিল। পাশাপাশি কংগ্রেস (Congress) এবং শরদ পাওয়ার গোষ্ঠীর এনসিপি (NCP) নেতাদের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে মহাযুতি সরকারে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছিল।
শিন্ডে, যিনি ২০২২ সালের বিদ্রোহের মাধ্যমে মহারাষ্ট্রের রাজনীতির মানচিত্র বদলে দিয়েছিলেন, এবার নিজের দলের মন্ত্রীদের নিয়ন্ত্রণে সমস্যায় পড়েছেন। জোটের অভ্যন্তরীণ সূত্র বলছেন, পোর্টফোলিও বণ্টন এবং নির্বাচনী কৌশল নিয়ে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ এখন চরমে পৌঁছেছে। আগামী দিনগুলোতে শিন্ডে এবং ফাদনবিসের মধ্যে বৈঠক হতে পারে, কিন্তু এই ‘মহা-নাটক’ কতদূর যাবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন চলছে।