করোনা আবহে গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে বিবেচনার ভার রাজ্য সরকারকে দিল হাইকোর্ট

তিনি এও জানান, ১৯৭৬ সালের গঙ্গাসাগর মেলা আইন অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য ও পুণ্যার্থীদের রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। ওই আইন অনুযায়ী সাগরমেলার পুরো এলাকা বা আংশিক অংশে সরকার জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতেই পারে।

January 6, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

করোনা আবহে গঙ্গাসাগর মেলা এবার করা উচিত হবে কি না, তা বিবেচনা করার ভার রাজ্য সরকারের হাতেই ছেড়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান বিচারপ্রতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ অ্যাডভোকেট জেনারেলকে বিষয়টি পর্যালোচনা করে আজ বৃহস্পতিবার সরকারের সিদ্ধান্ত জানাতে বলেছে।

ডাক্তার অভিনন্দন মন্ডল এই মেলা করা নিয়ে মামলাটি করেছিলেন। এদিন তার শুনানিতে ডাক্তারদেরই একটি সংগঠন মামলায় যুক্ত হওয়ার জন্য জোরালো আবেদন পেশ করে। সংগঠনটি জানায়, মেলা যেখানে হয় সেই জায়গাটি মকরসংক্রান্তিতে জনসমুদ্রের চেহারা নেয়। শুধু রাজ্যের নয়, সারা দেশ থেকেই পুণ্যার্থীরা আসেন সেখানে। তাঁরা মূলত ট্রেন, বাস, স্টিমারের মতো গণপরিবহণ ব্যবস্থার সাহায্যে সেই পুণ্যস্থলে পৌঁছান বা সেখান থেকে ফিরে যান। ফলে অতি সহজেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বেড়ে যাওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। আদালত সহ জনজীবনের বহু কাজ যখন ইন্টারনেটের সাহায্যে করা সম্ভব হচ্ছে, তখন পুজো দেওয়া বা ঠাকুরকে প্রণাম ও শ্রদ্ধা জানানোর জন্য কেন এমন ব্যবস্থার সাহায্য নেওয়া হবে না? সংগঠনের তরফে বলা হয়, রাজ্যে এখনই করোনা আক্রান্তের হার প্রায় ১৮.৯৭ শতাংশ। বিষয়টি ডাক্তারদের কাছেও চিন্তার কারণ হয়ে উঠছে। কারণ, তাঁরাও আক্রান্ত হচ্ছেন। তাই মেলা বন্ধ না হলে করোনার ছড়িয়ে পড়াও আটকানো যাবে না। সংগঠনটি আরও জানায়, ওমিক্রনের সঙ্গে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টেরও হদিশ মিলছে। এই সওয়াল সূত্রে বেঞ্চ ওই সংগঠনকে মামলায় যুক্ত হওয়ার অনুমতি দেয়।

অন্যদিকে, মূল মামলাকারীর আইনজীবী শ্রীজীব চক্রবর্তী আদালতকে জানান, ২ জানুয়ারি রাজ্যের বিজ্ঞপ্তিতেই বলা হয়েছে, কোনওরকম সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা ধর্মীয় জমায়েতে ৫০ জনের বেশি থাকতে পারবেন না। তাই ওই বিজ্ঞপ্তি অনুসারেই মেলা বন্ধ হওয়া উচিত। কারণ, সেখানে কমবেশি ১৮ লক্ষ মানুষের জমায়েত হয়ে থাকে। তিনি জানান, ৩ থেকে ৪ জানুয়ারিতেই কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ওদিকে মেলার জন্য রাজ্য পুলিস বাহিনীর প্রায় ৫০ শতাংশ সদস্যকে মেলার কাজে লাগানো হয়। ফলে তাঁদেরও করোনা আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে। তিনি এও জানান, ১৯৭৬ সালের গঙ্গাসাগর মেলা আইন অনুযায়ী জনস্বাস্থ্য ও পুণ্যার্থীদের রক্ষা করার দায়িত্ব সরকারের। ওই আইন অনুযায়ী সাগরমেলার পুরো এলাকা বা আংশিক অংশে সরকার জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি করতেই পারে। তাঁর দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেখানকার পুরো এলাকাতেই জমায়েতে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়া উচিত।

বেঞ্চ এই পরিপ্রেক্ষিতে জানতে চায়, মেলা কতটা এলাকা জুড়ে হয়। মামলাকারীর আইনজীবী জানান, প্রায় ৩৭২৮ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে মেলার আয়োজন করা হয়। বেঞ্চ এমতাবস্থায় এজি’র কাছে জানতে চায়, মেলা উপলক্ষে রাজ্য সরকার কী ধরনের পদক্ষেপ করছে বা নিতে চলেছে। বিশেষত বিপুল সংখ্যক মানুষের স্বাস্থ্যের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের ভাবনাচিন্তা কী, তা জানতে চায় আদালত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen