Sukanta Majumdar: শিখ অফিসারের পাগড়িতে চটি ছুঁড়ে বিতর্কে সুকান্ত মজুমদার, ক্ষুব্ধ শিখ সম্প্রদায়

এক শিখ পুলিশ অফিসারের পাগড়ি লক্ষ্য করে চটির কাটআউট ছুঁড়ে মেরেছেন সুকান্ত মজুমদার। শিখ সম্প্রদায়ের এক সংগঠন তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

June 15, 2025 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:০১: রাজ্য রাজনীতিতে নতুন করে বিতর্কের ঝড় তুললেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ও বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)। শুভেন্দু অধিকারীর পর এবার তিনিও জড়ালেন ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে। এক শিখ পুলিশ অফিসারের পাগড়ি লক্ষ্য করে চটির কাটআউট ছুঁড়ে মেরেছেন সুকান্ত মজুমদার। সেই সূত্রে শিখ সম্প্রদায়ের এক সংগঠন তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ (police complaint) দায়ের করেছে এবং জানিয়েছে, তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাইলে ভবিষ্যতে বড়সড় আন্দোলনের পথে হাঁটবে তারা।

ঘটনা শুরু হয় মহেশতলায়, গত বুধবার (Wednesday), যেখানে একটি দোকানকে ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং রাস্তা অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১৬৩ ধারা জারি করে পুলিশ।

এর পরের দিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (Thursday), ঘটনাস্থলে পৌঁছন সুকান্ত মজুমদার ও বিজেপি কর্মীরা। কিন্তু পুলিশ তাঁদের পথ আটকে দেয়। এরপর সুকান্ত কালিঘাটে পুজো দিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। সেসময়ই তাঁকে পুলিশ গ্রেপ্তার (arrest) করে এবং প্রিজন ভ্যানে (prison van) তোলা হয়। অভিযোগ, সেই সময় সুকান্ত একটি হাওয়াই চপ্পলের (slipper) ছবি দেওয়া কাটআউট (cutout) ছুঁড়ে দেন, যা গিয়ে লাগে এক শিখ পুলিশকর্মীর পাগড়িতে (turban)।

শিখ ধর্মে পাগড়ির গুরুত্ব অপরিসীম। এটা শুধুমাত্র পোশাক নয়, বরং একজন শিখের আত্মসম্মান, সংস্কার ও ধর্মীয় পরিচয়ের প্রতীক। ফলে এই ঘটনাকে শিখ সম্প্রদায়ের একাংশ ‘চরম অবমাননা’ হিসেবে দেখছেন।

ঘটনার একটি ভিডিও কলকাতার শ্রী গুরু সিং সভার অফিসিয়াল ফেসবুক (Facebook) পেজে শেয়ার করা হয়। তাতে দেখা যায়, প্রিজন ভ্যানে দাঁড়িয়ে সুকান্ত মজুমদার চটি ছুঁড়ে মারছেন শিখ পুলিশ কর্মীর পাগড়ি লক্ষ্য করে। ভিডিও ভাইরাল হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে শিখ সম্প্রদায়ের একাধিক সংগঠন।

শ্রী গুরু সিং সভা একটি বিবৃতি দিয়েও জানিয়েছে যে, সুকান্ত মজুমদারের এই অবমাননাকর কীর্তি শুধু শিখ সম্প্রদায় নয়, ভারতের সংবিধান বিরোধী। একই সঙ্গে বলা হয়েছে, এটি বাঙালি সংস্কৃতির অপমান, কারণ বাঙালিরা কোনো ভুল করে তৎক্ষণাৎ ক্ষমা চান, কিন্তু সুকান্ত মজুমদার কোনো ক্ষমাপ্রার্থনা না করে বাংলাকে এবং বাঙালিদেরও অপমান করেছেন।

শিখেরা সাফ জানিয়েছে, সুকান্ত যদি প্রকাশ্যে ক্ষমা না চান (public apology), তাহলে রাজ্যজুড়ে তারা প্রতিবাদে নামবে এবং বৃহত্তর আন্দোলন শুরু করবে। ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগও জমা দেওয়া হয়েছে।

তৃণমূল কংগ্রেস (TMC) তাদের অফিসিয়াল পেজে লিখেছে, ‘”সুকান্ত মজুমদারের এই কাজ শিখ ধর্মাবলম্বীদের পবিত্র সংস্কারে আঘাত করেছে। এটা অত্যন্ত লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়। তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’”

রাজ্য রাজনীতিতে ধর্মীয় ভাবাবেগকে ঘিরে বারবার বিতর্ক তৈরি হয়েছে। তবে একজন সাংসদের কাছ থেকে এমন আচরণে ক্ষুব্ধ রাজ্যের শিখ সম্প্রদায়। এখন দেখার, বিজেপি বা সুকান্ত মজুমদার এই বিতর্ক নিয়ে কী অবস্থান নেন এবং তিনি ক্ষমা চান কিনা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen