সমীক্ষার নামে ফোনে ‘SIR’ তথ্য সংগ্রহ? হিন্দিভাষী সংস্থার প্রশ্নে ক্ষুব্ধ সাধারণ মানুষ

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২:৪০: ২৬শের ভোটের আগে ফের হিন্দিভাষী ‘সমীক্ষা’ ঘিরে বিতর্ক। রাজ্যে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা SIR পর্ব শুরু হতেই রাজনীতিতে নতুন উত্তাপ। বিভিন্ন এলাকায় মানুষ ফোন পাচ্ছেন এমন কিছু সংস্থা থেকে, যারা নিজেদের ‘সমীক্ষক’ বা ‘মার্কেট রিসার্চ কোম্পানি’র প্রতিনিধি বলে দাবি করছে। কিন্তু সেই ফোনে করা প্রশ্ন শুনেই সন্দেহ বাড়ছে ভোটারদের মধ্যে।
ফোনে করা প্রশ্নগুলো ঘুরে ফিরে একাধিক ব্যক্তিগত তথ্যের দিকে। যেমন, ‘আপনার কি জাতি শংসাপত্র আছে?’, ‘বাড়ি নিজের নামে? দলিল আছে তো?’, ‘২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম ছিল?’- সবই সরাসরি এসআইআর বা ভোটার তালিকা যাচাই সংক্রান্ত বিষয়। অথচ আধার বা ভোটার আইডি (Voter ID) সংক্রান্ত প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না। এখানেই সন্দেহের সূত্রপাত।
ফোন আসছে মূলত একটি নির্দিষ্ট নম্বর থেকে- ৮০৬৫৯০৬৯১১। প্রশ্নগুলো বেশিরভাগ সময় ভাঙা বাংলা মিশিয়ে হিন্দিতে করা হচ্ছে। প্রথমেই জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, “আপনি কোন ভাষায় স্বচ্ছন্দ?” তারপর ধীরে ধীরে প্রশ্ন ঘুরে যাচ্ছে রাজনীতির দিকে, “আপনার এলাকার বিধায়ক কেমন কাজ করছেন?”, “তৃণমূলের পরিষেবা কেমন?”- যার মধ্য দিয়ে শাসক দলের বিরুদ্ধে মনোভাব যাচাইয়ের ইঙ্গিত মিলছে বলে মনে করছেন অনেকে।
এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ একাধিক বাসিন্দা জানিয়েছেন, প্রথমে সাধারণ সার্ভে মনে হলেও পরবর্তীতে প্রশ্নগুলো হয়ে উঠছে ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক। এক বাসিন্দার অভিযোগ, “সার্ভের নামে বারবার ফোন করে বিরক্ত করা হচ্ছে। বিষয়টি থানায় জানিয়েছি।”
আরও কয়েকজন জানান, “এই ধরনের ফোনে ব্যক্তিগত প্রশ্ন করা হচ্ছে, খুবই অস্বস্তিকর।” অন্য এক জনের কথায়, “মার্কেট রিসার্চ কোম্পানির নামে ফোন করে রাজনৈতিক সমর্থনের কথা জানতে চাওয়া হচ্ছে। এটা অযৌক্তিক।”
তৃণমূলের অন্দরে দাবি, বিজেপি (BJP) ভোটার তালিকা (Voter List) সংশোধনের নামে এই ধরনের সংস্থা ব্যবহার করছে। যদিও ফোনে সংস্থার নাম, ঠিকানা বা কর্তৃপক্ষের পরিচয় জানতে চাওয়া হলে স্পষ্ট উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। এতে সন্দেহ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।
তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, নির্বাচনের সময় এ ধরনের সমীক্ষা বা ফোনকল সাধারণ ঘটনা হলেও ব্যক্তিগত তথ্য চাওয়া হলে সতর্ক থাকা প্রয়োজন। তাদের পরামর্শ, “যে কোনও সমীক্ষায় অংশ নেওয়ার আগে সংস্থার নাম ও উদ্দেশ্য যাচাই করে নেওয়া উচিত। ব্যক্তিগত নথি বা ভোট সংক্রান্ত তথ্য কখনওই ফোনে শেয়ার করা ঠিক নয়।”