সোনাগাছিতে SIR আতঙ্ক, নথি জোগাড়ে বিপাকে যৌনকর্মীরা, সমাধান চেয়ে কমিশনকে চিঠি

November 21, 2025 | 2 min read
Published by: Saikat

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৯:৪৫: সোনাগাছিতে এসআইআর আতঙ্ক! ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ায় (SIR) বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার যৌনকর্মী। ২০০২ সালের নথি জোগাড় করা তাঁদের পক্ষে কার্যত অসম্ভব। এ নিয়ে তীব্র উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ভোটার তালিকার সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার মাত্র ১৭ দিনের মাথায় শুক্রবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক (Chief Electoral Officer of the State) মনোজ আগরওয়ালকে (Manoj Agarwal) চিঠি লিখে সমস্যার সমাধান চেয়েছে যৌনকর্মী এবং তাঁদের সন্তানদের নিয়ে কাজ করা তিনটি সংগঠন-‘সোশ্যাইটি অফ হিউম্যান ডেভলপমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল অ্যাকশন’, ‘উষা মাল্টিপার্পাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এবং ‘আমরা পদাতিক’।

চিঠিতে যৌনকর্মীদের পক্ষ থেকে তিনটি বড় সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। প্রথমত, গ্রামাঞ্চল বা ভিনরাজ্য থেকে আসা যৌনকর্মীদের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ থাকে না, ফলে ২০০২ সালের নথি সংগ্রহ করা তাঁদের পক্ষে অসম্ভব। দ্বিতীয়ত, অনেকেই পরিস্থিতির চাপে পরিবার ও বাড়ি ছেড়ে এই পেশায় এসেছেন, তাঁরা নথি সঙ্গে আনেননি। তৃতীয়ত, সামাজিক কারণে অনেকেই পরিবারের কাছে তাঁদের পেশা গোপন রেখেছেন, ফলে পরিবারের নথি জোগাড় করাও সম্ভব নয়।

সংগঠনগুলির দাবি, কমিশন যেন যৌনকর্মীদের জন্য বিকল্প নথি বা পরিচয়পত্র (identity) নির্ধারণ করে। পাশাপাশি সোনাগাছিতে বিশেষ শিবির আয়োজন করে এনুমারেশন ফর্ম (Enumeration form) পূরণের ব্যবস্থা করা হোক। আর যাঁদের ভোটার কার্ড (Voter card) ইতিমধ্যেই রয়েছে, তা যেন বাতিল না করা হয়।

বর্তমানে সোনাগাছিতে প্রায় ১০ হাজার যৌনকর্মী রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় সাত হাজার স্থায়ীভাবে বসবাস করেন এবং অধিকাংশেরই ভোটার আইডি (Voter ID) রয়েছে। এক যৌনকর্মী জানান, ‘‘আমার স্বামী বহু বছর আগে ছেড়ে চলে গিয়েছে। সন্তানকে নিয়ে এই পেশায় আসতে হয়েছিল। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ নেই। ২০০২ সালের নথি জোগাড় করা আমার পক্ষে অসম্ভব।’’

‘আমরা পদাতিক’-এর সংগঠক মহাশ্বেতা মুখোপাধ্যায় (Mahasweta Mukherjee) স্মরণ করিয়ে দেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন রাজ্যের নির্বাচন কমিশনার দেবাশিস সেন উষা মাল্টিপার্পাস কো-অপারেটিভ সোসাইটির অ্যাকাউন্টকে নথি হিসাবে ধরে নিয়ে যৌনকর্মীদের ভোটার আইডি প্রদান করেছিলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ বারও কমিশন বিকল্প নথির ব্যবস্থা করুক, না হলে কয়েক হাজার যৌনকর্মী গভীর সংকটে পড়বেন।’’

যৌনকর্মীদের অনেকেই লক্ষ্মীর ভান্ডার, বিধবাভাতার মতো সরকারি প্রকল্পের সুবিধাভোগী। তাঁদের প্রশ্ন, সরকারি প্রকল্পের উপভোক্তা হওয়ার পরেও কেন নাগরিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে?

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen