যশের মোকাবিলায় প্রস্তুতি তুঙ্গে দুই ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরে

আজকের মধ্যে সব শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

May 23, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ঘূর্ণিঝড় যশের ‘চোখ’ ঠিক কোথা দিয়ে বয়ে যাবে, তা নিয়ে চলছে জোর চর্চা। তবে প্রস্তুতিতে খামতি রাখতে চাইছে না উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা প্রশাসন। দফায় দফায় বৈঠক, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা ইত্যাদি নিয়েই শনিবার ব্যস্ত থাকলেন তিন জেলার জেলাশাসক। ঝড়ের প্রভাবে সুন্দরবন এলাকায় সব থেকে বেশি ক্ষতি হতে পারে, এই আশঙ্কা মাথায় রেখেই কাজে নেমেছে প্রশাসন। একে ঘূর্ণিঝড়, সঙ্গে দোসর করোনা— হাসপাতাল এবং সেফ হোম মিলিয়ে ওই অঞ্চলে অন্তত ৩০০ বেড বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 


পাথরপ্রতিমা, গোসাবা, কুলতলির বিস্তীর্ণ এলাকায় বাঁধ নির্মাণের কাজ চলছে। আজকের মধ্যে সব শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। উত্তর ২৪ পরগনায় ৭০টি নদী বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সেই কাজ শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, বসিরহাটে দুর্বল নদী বাঁধ সারাইয়ের কাজ চলছে। বিপর্যয় মোকাবিলায় বসিরহাট সহ জেলার বিভিন্ন ব্লকে টিম গঠন করা হয়েছে। জেলা ও মহকুমা স্তরে কন্ট্রোল রুম তৈরি করা হয়েছে। জেলার ২২টি ব্লকে সিভিল ডিফেন্সের পৃথক দল থাকছে। এনডিআরএফের একটি দল হাসনাবাদে ও অন্য একটি দলকে সন্দেশখালির ধামাখালিতে রাখা হয়েছে। 


উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ইতিমধ্যে এনডিআরএফ দল পৌঁছে গিয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। পাথর প্রতিমা ও গোসাবার দ্বীপাঞ্চলগুলিতে অস্থায়ীভাবে পানীয় জলের ট্যাঙ্ক পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, তিন জেলাতেই দ্রুততার সঙ্গে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছতে শুরু করেছে।
সুন্দরবন এলাকায় বর্তমানে সেফ হোমে সাড়ে তিনশোর মতো বেড রয়েছে। সেটা বাড়িয়ে সাড়ে পাঁচশো করা হবে। অন্যদিকে, হাসপাতালগুলিতে ১১০টির মতো বেড বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে। পাথর প্রতিমা, নামখানা ব্লকের মৌসুনী দ্বীপ, সাগর, গোসাবায় সেফ হোমের সংখ্যা বাড়ছে। শনিবার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে কাকদ্বীপ মহকুমায় সব আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক পি উলগানাথন। কোনও মৎস্যজীবী বা ট্রলার যাতে সমুদ্রে না থাকে, সে ব্যাপারে ব্লক ও মহকুমা প্রশাসনকে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। 


এদিকে, যশ মোকাবিলায় পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় প্রায় ৮০ হাজার মানুষকে সরানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুজালি পুরসভার প্রায় ১৫-১৬ হাজার বাসিন্দাকে নদীর ধার থেকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি রামনগর ১ ও ২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। জেলাশাসক বলেন, উপকূলবর্তী এলাকা থেকে মানুষজনকে নিরাপদ জায়গায় সরানোর জন্য প্রায় ২০০টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। আমরা সব রকম প্রস্তুতি নিয়েছি। গাছ উপরে গেলে দ্রুত সরানোর জন্য পঞ্চায়েতকে উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এদিকে, তিন জেলাতেই কৃষি বিভাগ থেকে মাইকিং করা হয়েছে। এখনও মাঠে ফসল থাকলে, তা যেন তুলে নেওয়া হয়, এটাই মূলত গ্রামে প্রচার করা হচ্ছে। 
পূর্ব মেদিনীপুরে বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় কন্ট্রোল রুম চালু করেছে। প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ইতিমধ্যেই মজুত করা হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen