ফের চার বিজেপি বিধায়কের তৃণমূলে যোগদানের জল্পনা
গত সপ্তাহে, বিধায়করা কলকাতায় বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানও এড়িয়ে যান।
Authored By:

ভবানীপুর, সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর বিধানসভা উপনির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের পরেই আরও চারজন বিজেপি বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন বলে এখন জল্পনা তুঙ্গে। খড়গপুরের হিরণ চ্যাটার্জি, দার্জিলিং থেকে নীরজ জিম্বা, কোচবিহার উত্তর থেকে সুকুমার রায় এবং সোনামুখীর বিধায়ক দিবাকর ঘরামি গেরুয়া শিবির ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে নাম লেখাতে পারেন, এখন এই খবরেই উত্তাল রাজনৈতিক মহল।
বিজেপির সূত্রে জানা গেছে, এই চারজন বিধায়ক গত কয়েক দিনে বেশ কয়েকটি দলীয় কর্মসূচিতে অনুপস্থিত ছিলেন। গত সপ্তাহে, বিধায়করা কলকাতায় বিজেপির নতুন রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানও এড়িয়ে যান।
সুকান্ত মজুমদার সোমবার বলেন, “আমি এখনও বিশ্বাস করি যে, কোনও নেতা আমাদের দল ছাড়বেন না। আমি আবার আমাদের সকল আইন প্রণেতাকে আমাদের সাথে থাকার জন্য অনুরোধ করব। কিন্তু যদি তারা তা করেন তাহলে আমরা কোন সমস্যার সম্মুখীন হব না। ভোটাররা দলের সাথে সংযুক্ত থাকে, নেতাদের সাথে নয়। যারা আমাদের আদর্শে বিশ্বাস করেন তারা আমাদের ছেড়ে যাবেন না। কোন ব্যক্তির প্রতি নয়, একটি দলের প্রতি মানুষের আনুগত্য রয়েছে। ”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দলীয় নেতা দাবি করেছেন যে কিছু বিধায়ক ব্যক্তিগত কারণে দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছেন না।
সূত্র থেকে জানা গেছে, বিজেপির রাজ্য নেতৃত্ব কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে এই চার বিধায়কের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন পাঠিয়েছিল। সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার কয়েক দিন পরেই দলত্যাগ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব সুকান্তকে নেতা এবং বিধায়কদের দলত্যাগ রোধ করানোর নির্দেশ দিয়েছে।
এর মাঝেই রায়গঞ্জের বিজেপির বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী ঘোষণা করেন যে রায়গঞ্জের সাংসদ দেবশ্রী চৌধুরীর সঙ্গে মতবিরোধের কারণে তিনি দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। মে মাসে রাজ্য নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পর থেকে মুকুল রায় সহ চার বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। গত মাসে, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং দলের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয়ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন দলে যোগদান করেছেন।
গেরুয়া শিবির প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জন্য পর্যবেক্ষক ও সহ- পর্যবেক্ষক নিয়োগ করেছে। দিনহাটায় কোচবিহারের সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক বিজেপির পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করবেন এবং জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত কুমার রায় সহ-পর্যবেক্ষক হিসেবে। রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার শান্তিপুরে পর্যবেক্ষক হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন এবং অনুপম দত্ত সহ-পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করবেন। খড়দহে ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং পর্যবেক্ষক হিসেবে থাকবেন এবং পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতো গোসাবায় পর্যবেক্ষক হিসেবে কাজ করবেন।
এ বিষয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “আমরা উপনির্বাচনের জন্য আমাদের নেতাদের দায়িত্ব দিয়েছি এবং তারা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছেন। দলীয় কৌশল নিয়ে আলোচনা করার জন্য বৈঠক করা হয়েছে। আমরা প্রতিটি আসনে আমাদের পূর্ণ শক্তি দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব। দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে আমাদের প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হবে। ”
প্রসঙ্গত, দিনহাটা ও শান্তিপুরে উপনির্বাচন হওয়ার কারণ এই দুই আসনের বিধানসভা প্রতিনিধি নিশীথ প্রামাণিক এবং জগন্নাথ সরকার তাদের সংসদীয় আসন ধরে রাখার জন্য নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরও বিধায়ক হিসেবে শপথ নেননি। বিজয়ী তৃণমূল প্রার্থীদের মৃত্যুর কারণে খড়দহ ও গোসাবায় উপনির্বাচন হচ্ছে।