১০০ দিনের কাজ নিয়ে কেন্দ্রের নীরবতা, উপেক্ষিত হাই কোর্টের নির্দেশ? ক্ষুব্ধ রাজ্য
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সাম্প্রতিক পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্যের আধিকারিকরা এই বিষয়টি সরাসরি উত্থাপন করেন।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৪০: একশো দিনের প্রকল্পে কেন্দ্রের নীরবতা ঘিরে বিতর্ক। হাই কোর্টের স্পষ্ট নির্দেশ থাকতেও এখনও বাংলায় ১০০ দিনের কাজ শুরু হয় নি। এ বিষয়ে কেন্দ্রের নীরবতা অব্যাহত। কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের সাম্প্রতিক পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্যের আধিকারিকরা এই বিষয়টি সরাসরি উত্থাপন করেন। আগামী ১ অগস্ট থেকে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। সেই প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান জানতে চাওয়া হয়। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি। জট যেমন ছিল, তেমন রয়েই গিয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্যেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন রাজ্যের গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার (Pradip Mazumdar)। তিনি মনে করছেন, বাংলার সঙ্গে কেন্দ্রের ব্যবহার পুরোপুরি পক্ষপাতদুষ্ট। তাঁর বক্তব্য, দেশের অন্য ডবল ইঞ্জিন সরকার চালিত রাজ্যগুলিতে মনরেগা প্রকল্পে বড়সড় দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও সেখানে কাজ বন্ধ হয়নি, বরং অর্থ বরাদ্দও চলেছে স্বাভাবিকভাবে। অথচ বাংলার ক্ষেত্রে মাত্র কয়েক কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলে দীর্ঘদিন ধরে প্রকল্পের অর্থ আটকে রাখা হয়েছে। তাঁর মতে, এটি একপাক্ষিক ও বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।
মন্ত্রী আরও অভিযোগ করেন, গুজরাতে মনরেগা প্রকল্পে (MGNREGA) দুর্নীতির ঘটনায় এক স্থানীয় মন্ত্রী ও তাঁর দুই পুত্র গ্রেফতার হলেও কেন্দ্র সেখানকার বিরুদ্ধে তেমন কোনও কড়া পদক্ষেপ নেয়নি। বিহারেও দুর্নীতির পরিমাণ ১৫ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে, তবু সেখানেও কার্যত নীরব রয়েছে কেন্দ্র। তাঁর বক্তব্য, এই অবস্থায় স্পষ্ট যে বাংলাকে ইচ্ছাকৃতভাবে নিশানা করা হচ্ছে।
পর্যালোচনা বৈঠকে রাজ্যের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব পি উলগানাথন এবং অর্থসচিব প্রভাত মিশ্র। জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় সচিব শৈলেশ কুমারের সঙ্গে পৃথকভাবে বাংলার বকেয়া নিয়ে বৈঠকের পরিকল্পনা থাকলেও তা শেষ পর্যন্ত হয়নি। তবে দপ্তরের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা হয় এবং সেখানে রাজ্যের পক্ষ থেকে বকেয়ার হিসেব সহ প্রাসঙ্গিক নথিপত্র তুলে ধরা হয়।
তবুও কেন্দ্রের তরফে কোনও সুনির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতি মেলেনি। ফলে হাইকোর্টের নির্দেশ কার্যকর হবে কি না, তা নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা। কেন্দ্রের এই নীরবতা ঘিরে রাজ্য সরকারের তরফে ক্ষোভ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে।