শ্রাবন্তী, পায়েল, রুদ্রনীলের পেছনে ৪ কোটি খরচের হিসেব চায় বিজেপি নেতৃত্ব

দিল্লি পার্টি সূত্রে খবর, দলের কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা তাঁদের হাতেই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে যৎসামান্য টাকা খরচ করে, বাকিটা ওই নেতারা ব্যাগে পুরে ভিন রাজ্যে চম্পট দিয়েছেন বলেই অভিযোগ।

June 6, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

ভোট বিপর্যয়ের পর নির্বাচনী খরচের হিসেব কষতে বসেই মাথায় হাত রাজ্য বিজেপির। এবার নির্বাচনী তহবিল নয়ছয়ের অভিযোগে বেসামাল গেরুয়া পার্টি। বঙ্গ বিজেপি (BJP) সূত্রের দাবি, শুধু দক্ষিণ কলকাতার অন্তর্গত তিনটি আসনে জয় নিশ্চিত করতে প্রায় ৪ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। সেই তিনটি বিধানসভার নাম ভবানীপুর, বেহালা পূর্ব এবং বেহালা পশ্চিম। প্রার্থীরা হলেন তিন অভিনেতা-অভিনেত্রী—রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh), পায়েল সরকার (Payel Sarkar) এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায় (Srabanti Chatterjee)। নির্বাচনের দু’মাস আগে থেকেই প্রতিটি বিধানসভায় একাধিক কেন্দ্রীয় নেতাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দিল্লি পার্টি সূত্রে খবর, দলের কেন্দ্রীয় কোষাগার থেকে কোটি কোটি টাকা তাঁদের হাতেই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে যৎসামান্য টাকা খরচ করে, বাকিটা ওই নেতারা ব্যাগে পুরে ভিন রাজ্যে চম্পট দিয়েছেন বলেই অভিযোগ।

রাজ্যের এক শীর্ষ নেতা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কলকাতার ওই তিন কেন্দ্রের তারকা প্রার্থীদের গড়ে ৩০ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। পাশাপাশি, ওই তিন কেন্দ্রে অমিত শাহ, জে পি নাড্ডা, অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী সহ শীর্ষ নেতাদের রোড শোর জন্য ১৫ লক্ষ টাকা করে খরচ হয়। একেকটি বিধানসভা ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনের জন্য কমপক্ষে ১০ লক্ষ টাকা করে ব্যয় হয়েছে। ওই তিনটি কেন্দ্রের মোট বুথের সংখ্যা ১,২৬৪। ভোটের দিন প্রত্যেক বুথকর্মীদের হাতে অন্তত ৪ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে সেই ‘হাত খরচা’ বাবদই ব্যয় ৫০ লক্ষ টাকার বেশি। দলের এক নেতার কথায়, ভোটের আগে এই তিনটি কেন্দ্রের কনভেনার, মণ্ডল সভাপতি, জেলা কমিটির সদস্য সহ একাধিক নেতার জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে বরাদ্দ করেছিল দিল্লি। এরই সঙ্গে প্রতিটি কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা ভিন রাজ্যের নেতাদের হোটেল, খাওয়া, গাড়ি, সহকারীদের খরচ ইত্যাদি সামলাতে মাসে ২ লক্ষ টাকার বেশি ব্যয় হয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্র পিছু ১০-১৫টি গাড়ির খরচ ছিল মাসে ৫ লক্ষ টাকা।

দলীয় সূত্রে দাবি, বেহালা পূর্ব এবং পশ্চিম কেন্দ্রের জন্য নির্বাচনী অফিসের জন্য অন্তত ৬০ হাজার টাকা ব্যয়ে দু’টি বিয়েবাড়ি ভাড়া নেওয়া হয়। সেখানে প্রতিদিন কর্মীদের খাওয়া-দাওয়া বাবদ মাসে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ হতো। পথসভা কিংবা ছোট ছোট জনসভার জন্য প্রতি বিধানসভায় ২-৫ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রার্থীর জনসংযোগের জন্য বিজেপির পতাকা খাতে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা বিল হয়।

রুদ্রনীল ঘোষ অবশ্য জানিয়েছেন, ‘আমার কিছু জানা নেই। কারণ, দিল্লি থেকে প্রতিটি বিধানসভার জন্য সুনির্দিষ্ট কেন্দ্রীয় নেতা দায়িত্বে ছিলেন। তাঁরাই নির্বাচন সংক্রান্ত টাকা খরচ করতেন এবং হিসেব রাখতেন। প্রার্থী হিসেবে দল নির্বাচন কমিশনের বিধি মেনে যেটুকু টাকা দিয়েছে, তার প্রতিটি পয়সার হিসেব আমি ইতিমধ্যেই জমা দিয়েছি।’ পায়েল সরকার এবং শ্রাবন্তী চট্টোপাধ্যায়কে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁদের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen