গোদি মিডিয়ার লাইমলাইটে ‘পথকুকুর’ বিতর্ক, ভোট কারচুপি নিয়ে রাহুলের অভিযোগ ঘোরানোর চেষ্টা?
রাহুলকে নিজে থেকে অভিযোগ জমা দিতে বলেছে। অর্থাৎ দায়িত্বটা রাহুলের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২৩:৫০: রাহুল গান্ধীর ব্যক্তিগত বিশ্বাসযোগ্যতাকে আক্রমণ করা হচ্ছে, অন্য দিকে তাঁর তোলা প্রশ্নের ইস্যুগুলোর অভিমুখ এবং জনগণের মনোযোগ ঘোরাতে ‘পথকুকুর’ ইস্যু বা অন্যান্য বিতর্কিত বিষয় ঘিরে মূলধারার গণমাধ্যমে আলোচনা চালানো হচ্ছে। এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
রাহুল গান্ধী এক সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে ভোটার তালিকা ও নির্বাচনের অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন তার অভিযোগের তদন্ত শুরু না করে, রাহুলকে নিজে থেকে অভিযোগ জমা দিতে বলেছে। অর্থাৎ দায়িত্বটা রাহুলের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের।
তাঁদের মতে, ভোট কারচুপির অভিযোগটি আড়াল করতে মূল আলোচনার মনোযোগ সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এখন মিডিয়ার দৃষ্টি একেবারেই পথকুকুর বিতর্কের দিকে চলে গেছে। আসল সমস্যার দিকে কেউ নজর দিচ্ছে না।
দিন কয়েক আগে বিহারের সাসারামে ‘ভোটার অধিকার যাত্রা’ শুরুর সময় সাংবাদিক বৈঠকে রাহুল গান্ধী অভিযোগ করেছেন, নির্বাচন কমিশন তাকে টার্গেট করছে। তিনি বলেছেন, “যখন আমি ভোট চুরির অভিযোগ তুললাম, কমিশন আমাকে শপথপত্র জমা দিতে বলল। কিন্তু কয়েকদিন আগে বিজেপি নেতারা একই ধরনের অভিযোগ করেছেন, তাদের কাছে কোনো শপথপত্র চাওয়া হয়নি।”
কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সোশ্যাল মিডিয়ায় বলেছেন, “নির্বাচন কমিশন রাহুল গান্ধীকে হুমকি দিচ্ছেন। তবে রাহুল নিজে থেকে কিছু বলেননি। তিনি কেবল কমিশনের নিজের তথ্যের ত্রুটি তুলে ধরেছেন। আসলে কমিশন এখানে শুধু তাদের অক্ষমতা দেখাল না, একই সঙ্গে বিজেপির প্রতি পক্ষপাতিত্বও স্পষ্ট হয়ে গেল।”
তিনি আরও বলেন, রাহুল গান্ধী কর্ণাটকের এক আসনের ভোটের তথ্য দেখিয়ে ভোটচুরির অভিযোগ তুলেছিলেন। ঠিক একইভাবে বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুরও বিরোধীদের জেতা আসনে ভুয়ো ভোটার থাকার দাবি করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচন কমিশন রাহুলকে সাতদিনের মধ্যে হলফনামা আকারে তথ্য জমা দেওয়ার চ্যালেঞ্জ দিলেও অনুরাগ ঠাকুরকে কোনো চ্যালেঞ্জ দেয়নি। কংগ্রেস এই দ্বৈতমানের আচরণ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে।
রাজনৈতিক কলাকুশলীদের মতে, সাবেক উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের হঠাৎ গায়েব, বিমানবাহিনীর অভিযানের দাবি, প্রাক্তন কমিশনারের মাল্টায় বসবাস এবং সর্বশেষ পথকুকুর বিতর্ক, এসবই এখন বিভিন্ন মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রে। মার্কিন সাংবাদিক মার্ক মাসনিক এটাকে ‘স্ট্রেইস্যান্ড এফেক্ট’ বলেছেন, আজকাল সেন্সরশিপ মানে তথ্য আটকানো নয়। বরং তথ্য এমনভাবে ছড়িয়ে দেওয়া হয় যাতে মূল সমস্যা ঢেকে যায়।