স্ট্রিট ফুড ফেস্টিভ্যালে মজবে কলকাতা

February 18, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

হাতে গ্লাভস, মাথায় টুপি, গায়ে অ্যাপ্রন। এমন পোশাকে তিনি হাজির নানপুরি-সব্জি নিয়ে। কেউ খাবার নিতে এলে পরিবেশবান্ধব প্লাস্টিকের থালায় তা তুলে দিচ্ছেন ক্রেতাদের হাতে। না, তিনি কোনও ফাইভ স্টার হোটেলের শেফ নন। ইনি, বিমল বেড়া। ডালহৌসি এলাকায় ফুটপাথের খাবার বিক্রেতা!

কয়লার আঁচে সেঁকা রুটি নেই? না, স্যর। আমরা এখন মেশিনে রুটি তৈরি করি। স্বাদও ভালো। পরিবেশেরও কোনও ক্ষতি হয় না। ক্রেতাকে বললেন রমেশ সাহা। তিনি ডালহৌসি চত্বরে ফুটপাথে রুটি-সব্জি বিক্রি করেন।

https://www.facebook.com/apishpararkhabar/videos/184496389472570/

মঙ্গলবার শহরের একটি প্রেক্ষাগৃহে এ ভাবেই দেখা গেল ডালহৌসি চত্বরের ফুটপাথের খাবার বিক্রেতাদের। অফিসপাড়া হকারদের এই ভোলবদল হল কী ভাবে? হ্যাঁ, ভোলবদলই বটে। সৌজন্যে, গত ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া বিশেষ কর্মশালা। ওই কর্মশালায় পাওয়া তালিমের মাধ্যমে এ ভাবেই নিজেদের বদলে ফেলেছেন এই এলাকার প্রায় দুশো খাবার বিক্রেতা। যেখানে পরিচ্ছন্নতা, অগ্নিনিরাপত্তা, খাদ্য সুরক্ষা, দক্ষতা, ব্র্যান্ডিং, বিপণন দক্ষতার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ওই হকারদের।

শুধু তাই নয়, ফাইভ স্টার হোটেলের থেকে তাঁরা যে কোনও অংশে কম যান না, তা শহরবাসীকে জানান দিতে এই হকারদের জন্য আরও একটি বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী, ২২ ফেব্রুয়ারি ডালহৌসি চত্বরে একটি স্ট্রিট ফুড ফেস্টিভ্যালের আয়োজন হচ্ছে। যেখানে তাঁদের তৈরি একাধিক আইটেম নিয়ে হাজির হবেন ওই চত্বরে খাবার বিক্রি করা হকাররা। শহরে ফুটপাথের হকারদের জন্য এমন উদ্যোগের নজির আগে নেই।

মাত্র ২০ টাকার বিনিময়ে আজও ডালহৌসি এলাকায় খিচুরি-সব্জি-পাঁপড় বিক্রি করেন শঙ্কর সাহা। তিনি বলছেন, ‘ভাবিনি, আমাদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা হবে। স্বাস্থ্যকর খাবারের পাশাপাশি বিক্রেতার কাছে তা কী ভাবে তা আরও গ্রহণযোগ্য করে তোলা যায়, সেটাও শিখেছি।’ ফাস্টফুড বিক্রেতা তরুণ ভুঁইমালি বলছিলেন, ‘আগে আমরা কাঠ-কয়লার উনুন ব্যবহার করতাম। এখন গ্যাস-ওভেনে রান্না করি। প্রশিক্ষণ না-এলে জানা হত না, ওই কাঠ-কয়লার মাধ্যমে বাতাসে কত দূষণ ছড়িয়েছি।’ খুশি ওই এলাকার হকার নেতা শামিম আহমেদও। তাঁর বক্তব্য, ‘এই প্রশিক্ষণ হকারদের পাশাপাশি ক্রেতাদের জন্যও সুখবর। কেননা, ক্রেতাদেরও এবার আরও ভালো মানের খাবার উপহার দিতে পারবেন হকাররা।’

https://www.facebook.com/apishpararkhabar/videos/186496865784605/

এই ভোলবদলের নেপথ্যে রয়েছে দ্য বেঙ্গল চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টি এবং এক্সাইড ইন্ডাস্ট্রিজ। সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে রেডিও মির্চি-সহ বেশ কিছু বেসরকারি সংস্থা। এই সমস্ত সংস্থার উদ্যোগে ‘আপিস পাড়ার খাবার’ নামে একটি প্রকল্পে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে হকারদের। দ্য বেঙ্গল চেম্বার অফ কর্মাস অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টির ডিরেক্টর জেনারেল শুভদীপ ঘোষ বলছেন, ‘এই প্রশিক্ষণের মধ্যে দিয়ে ফুটপাথের খাবার বিক্রেতারাই শুধু উপকৃত হবেন, এমন নয়। ওঁদের আধুনিক এবং উন্নত করার মধ্যে দিয়ে শহরের পর্যটন ব্যবস্থা আরও এগিয়ে যাবে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen