হঠাৎ ঝাপসা দেখা? চশমা নয়, রেটিনা হতে পারে আসল দোষী

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৩:১৭: অনেকেই ভাবেন—দূর বা কাছে ঝাপসা দেখলে নিশ্চয়ই চশমার পাওয়ার বাড়ছে। কিন্তু রেটিনায় ছিঁড়ে যাওয়া, রক্তক্ষরণ, প্রদাহ বা ‘রেটিনোপ্যাথি’র মতো সমস্যা চোখে পাওয়ার বদলের মতোই ঝাপসা দেখার অনুভূতি তৈরি করতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, রেটিনার সমস্যা যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে, চিকিৎসার সম্ভাবনা তত বেশি। দেরি হলে স্থায়ী দৃষ্টিক্ষতি পর্যন্ত হতে পারে।
রেটিনার কোন কোন সমস্যায় ঝাপসা দেখা দিতে পারে?
১. রেটিনাল ডিটাচমেন্ট (Retinal Detachment):
রেটিনা চোখের ভিতর থেকে আলগা বা আলাদা হয়ে গেলে হঠাৎ ঝাপসা দেখা, চোখের সামনে কালো দাগ বা আলো ঝলকানি দেখা দিতে পারে। এটি জরুরি চিকিৎসার বিষয়।
২. ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি:ডায়াবেটিস থাকলে রেটিনার রক্তনালিতে ক্ষতি হয়। ফলে দৃষ্টিশক্তি কমে যায়, চোখে কুয়াশাচ্ছন্ন ভাব দেখা দেয়, কখনও দ্বিগুণ দেখা পর্যন্ত হতে পারে।
৩. ম্যাকুলার ডিজেনারেশন:বয়স বাড়লে অনেকের রেটিনার মধ্যবর্তী অংশ ‘ম্যাকুলা’ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে মাঝের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায় এবং পড়া বা মুখ চেনার ক্ষমতায় সমস্যা দেখা দেয়।
৪. রেটিনাল ইনফ্লেমেশন বা ইনফেকশন: চোখে প্রদাহ বা সংক্রমণ হলে দৃষ্টি দুর্বল হয়ে যেতে পারে। আলোতে তাকালে ব্যথা, চোখ লাল হওয়া, ঝাপসা দেখা—এসবই এর লক্ষণ।
কীভাবে বুঝবেন সমস্যা চশমার পাওয়ার না রেটিনার?
হঠাৎ দৃষ্টিশক্তি কমে গেলে।
পাওয়ার পরিবর্তন সাধারণত ধীরে ধীরে হয়। হঠাৎ ঝাপসা দেখলে তা রেটিনার সমস্যা হতে পারে।
আলো ঝলকানি দেখা দিলে।
চোখ বন্ধ করলেও আলো ঝলকানি দেখা রেটিনা-সংক্রান্ত বিপদের ইঙ্গিত।
চোখের সামনে ভেসে বেড়ানো কালো দাগ (floaters)
হঠাৎ অনেকগুলো দাগ দেখা দিলে তা রেটিনাল টিয়ার বা ডিটাচমেন্টের লক্ষণ হতে পারে।
মাঝখানটা ঝাপসা কিন্তু পাশে পরিষ্কার দেখা।
এটি ম্যাকুলার সমস্যার চিহ্ন।
কখন ডাক্তার দেখাবেন?
হঠাৎ দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে গেলে।
চোখে কালো দাগ, জাল বা ছায়া দেখলে।
আলো ঝিলিক দেখলে।
ডায়াবেটিস থাকলে বছরে অন্তত একবার রেটিনার পরীক্ষা।
চোখে ব্যথা, লালভাব ও আলোতে কষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।
রেটিনার সমস্যা যত তাড়াতাড়ি ধরা পড়ে, দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করার সম্ভাবনা ততই বেশি।
চোখে ঝাপসা দেখলেই চশমা পাল্টানোর আগে একবার রেটিনা পরীক্ষা করানো জরুরি। কারণ, অনেক সময় যত্নে রাখা একটি পরীক্ষা আপনার দৃষ্টিশক্তি স্থায়ী ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারে। চোখ আপনার অমূল্য—তাই ঝুঁকি নয়, সচেতনতাই আপনাকে নিরাপদ রাখবে।