সেনাবাহিনীতে লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে কেন্দ্রকে সরাসরি দোষারোপ সুপ্রিম কোর্টের
বুধবার ছিল এই মামলার শুনানি।

‘সমস্যাটা আপনাদের মানসিকতার। এটা বদলান। আমাদের নির্দেশ জারি করতে বাধ্য করবেন না।’ সেনাবাহিনীতে লিঙ্গবৈষম্যের বিরুদ্ধে এভাবেই বুধবার কেন্দ্রীয় সরকারকে সরাসরি কাঠগড়ায় দাঁড় করাল সুপ্রিম কোর্ট। সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলাদের সমানাধিকার প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ একটি নির্দেশ গত ফেব্রুয়ারি মাসে জারি করেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং বিচারপতি অজয় রস্তোগির বেঞ্চ জানিয়েছিল, ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমি অর্থাৎ এনডিএ’র পরীক্ষায় সমান সুযোগ দিতে হবে মহিলাদের। তারপরও টনক নড়েনি নরেন্দ্র মোদি সরকারের। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর এনডিএর পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। সেই তারিখ বদলে ১৪ নভেম্বর পরীক্ষা হতে চলেছে। অথচ, তাতে বসার সমানাধিকার ভারতীয় নারী সমাজ পাচ্ছেন না! এই মর্মেই সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেন আইনজীবী কুশ কালরা। দাবি করেন, কেন্দ্রের এই লিঙ্গবৈষম্যসুলভ আচরণে সংবিধানের ১৪, ১৫, ১৬ এবং ১৯ অনুচ্ছেদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।
বুধবার ছিল এই মামলার শুনানি। সর্বোচ্চ আদালতের ফেব্রুয়ারি মাসের নির্দেশ কেন মানা হয়নি, সেই প্রসঙ্গ তুলে তীব্র অসন্তোষ ব্যক্ত করেন বিচারপতি এস কে কওল এবং বিচারপতি হৃষিকেশ রায়ের বেঞ্চ। বিচারপতিরা সাফ জানান, ‘আদালতের পর্যবেক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।’
কেন্দ্রের তরফে অবশ্য অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল ঐশ্বর্য ভাটি সাফাই দেন, ‘ভারতীয় সেনাবাহিনীতে মহিলারা সমান সুযোগ পাচ্ছেন। কিন্তু সশস্ত্র বাহিনীতে অংশগ্রহণ করা বা না করায় মহিলাদের মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ণ হয় না। এটা অন্য ধরনের প্রশিক্ষণের বিষয়। এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তা জড়িয়ে রয়েছে।’ তবে কেন্দ্রের এই সাফাইয়ে আদালত সন্তুষ্ট হয়নি। বেঞ্চ সাফ জানায়, ‘এটা আপনাদের মানসিকতার সমস্যা। সেনাবাহিনীতে মহিলাদের স্থায়ী যোগদানের ব্যাপারে বিচারপতি চন্দ্রচূড় সিংয়ের বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল। তারপরও আপনারা একইভাবে চলছেন কীভাবে? এটা অত্যন্ত বিস্ময়কর।’