স্বদেশী আন্দোলনে বঙ্গমাতা ও তার ইতিহাস 

বাংলার উপর আক্রমনকে প্রতিহত করতে অসংখ্য গান-কবিতা-গল্প-উপন্যাস রচিত হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখীবন্ধন উৎসবের সূচনা করেন।

August 7, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

১৯০৫ সাল। ব্রিটিশের শাসনদণ্ড বাংলাকে দুটুকরো করে দেয়। এ এক চরম রাজনৈতিক সংকট। প্রতিবাদে মুখর হয় সারা বাংলা, সাধারণ মানুষ থেকে শিল্পী-সাহিত্যিক বঙ্গভঙ্গের প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন। বাংলার উপর আক্রমনকে প্রতিহত করতে অসংখ্য গান-কবিতা-গল্প-উপন্যাস রচিত হয়, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখীবন্ধন উৎসবের সূচনা করেন।

এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে চিত্রশিল্পী অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আঁকা এক ছবি বাংলা তথা ভারতকে নাড়িয়ে দেয়। হৃদয়ে জাতীয়তাবাদের আগুন জ্বালায়। প্রথমে ছবির নাম ‘বঙ্গমাতা’ দিলেও পরে তিনি নাম দেন ‘ভারতমাতা’। 

জন্মভূমিকে এক বঙ্গ নারীর রূপ দেন তিনি। ‘বঙ্গমাতা’ এক পদ্মপুকুরের সামনে দাঁড়িয়ে, গৈরিক বসনা তিনি। মাথার উপর অদ্ভুত এক আলোর জ্যোতি, অর্থাৎ শিল্পী দেবত্ব আরোপ করেন শস্যশ্যামলা-শিক্ষার পীঠস্থান বাংলা মাকে। তিনি চতুর্ভুজা, এক হাতে বস্ত্র, এক হাতে পুস্তক ও অন্য দু হাতে ধানের শিস এবং মালা। অর্থাৎ শিক্ষা, দীক্ষা, অন্ন ও বস্ত্র -কোনো কিছুরই অভাব নেই এই বাংলায়। এভাবেই তিনি বাঙালিকে জাগিয়ে তোলেন, স্বদেশী আন্দোলনকে অন্যরূপ দেন।

খুব দ্রুত এই ছবি ভারতবর্ষে জাতীয়তাবাদের প্রতীক হয়ে ওঠে। বিভিন্ন স্থানভেদে ও বিভিন্ন শিল্পী ‘ভারতমাতা’র নতুন রূপ আঁকেন। গড়ে ওঠে ‘ভারতমাতা’র মন্দির, গান্ধীজী স্বয়ং এই মন্দির উদ্বোধন করেন। আজ ‘ভারতমাতা’ ছবির কথা ভাবলেই চোখের সামনে এক দুর্গার রূপ ভেসে ওঠে। ভারতের মানচিত্রের মধ্যে তেরঙা হাতে অধিষ্ঠিতা দেবী। কখনও চোখে পড়ে শেকলে বন্দী এক নারীর ছবি, যিনি তাঁর সন্তান-সন্ততির কাছে ব্রিটিশদের থেকে মুক্তি চাইছেন। চোখে পড়ে না আসল ছবিটা। 

খুব কম মানুষই জানেন এই ‘ভারতমাতা’ ছবির ইতিহাস। এই ইতিহাসে যেন অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও বাঙালির কোনো স্থান নেই। ‘ভারতমাতা’ এখন আর এক বঙ্গনারী না, তিনি অন্য এক জাতীয়তাবাদের প্রতীক আজ। বাঙালীকে এই ইতিহাস জানতে হবে। চিনতে হবে অবণ ঠাকুরকে। জাতীয় সঙ্গীত, ‘জয় হিন্দ’, ‘বন্দেমাতরম’, ‘ভারতমাতা’- সব কিছুরই পিছনে আছে বাঙালি। 

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen