ট্রাম্পের শান্তিচুক্তি দাবি খারিজ, কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি থাইল্যান্ডের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২২.৪০: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) শান্তিচুক্তির দাবি কার্যত ধুলোয় মিশিয়ে দিল থাইল্যান্ড (Thailand)। কম্বোডিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতি তো দূর, বরং পুরোদমে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দিল ব্যাঙ্কক। শনিবার থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী ফুমথাম ওয়েচায়াচাই (Phumtham Wechayachai) স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কম্বোডিয়ার সেনার হাতে তাঁদের চার জওয়ান নিহত হয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে পিছু হঠার বা যুদ্ধ থামানোর কোনও প্রশ্নই নেই।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুই প্রতিবেশী দেশ, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার মধ্যে নতুন করে যুদ্ধের মেঘ ঘনিয়েছে। গত সোমবার থেকেই সীমান্তে উত্তেজনা চরমে। থাইল্যান্ডের অভিযোগ, সোমবার সকালে তাদের ভূখণ্ড লক্ষ্য করে ব্যাপক গোলাবর্ষণ করে কম্বোডিয়া (Cambodia)। এর জবাবে পালটা বিমানহানা চালায় থাই সেনা। সেই সময় এক থাই জওয়ানের মৃত্যুর খবর মিলেছিল। কিন্তু শনিবার পরিস্থিতি আরও ভয়ানক মোড় নেয় যখন থাইল্যান্ড দাবি করে, সংঘর্ষ চলাকালীন কম্বোডিয়ার হামলায় তাদের আরও চারজন সেনার মৃত্যু হয়েছে।
এই সংঘাতের আবহেই আসরে নেমেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার তিনি দাবি করেছিলেন যে, তাঁর মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে রাজি হয়েছে। কিন্তু শনিবার সকালেই সেই দাবি সরাসরি উড়িয়ে দেন থাইল্যান্ডের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী। ফুমথাম ওয়েচায়াচাই সাফ জানান, শত্রুপক্ষ যেখানে তাদের চার সেনাকে হত্যা করেছে, সেখানে যুদ্ধবিরতির কোনও জায়গাই নেই।
উল্লেখ্য, দুই দেশের এই সংঘাত নতুন নয়। চলতি বছরের জুলাই মাসেও টানা পাঁচদিন ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলেছিল দুই পক্ষের মধ্যে। সেই সময় অন্তত ৪০ জনের মৃত্যু হয়। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে তিনদিন গোলাবর্ষণের পর থাইল্যান্ডের কাছে যুদ্ধ থামানোর আর্জি জানিয়েছিল কম্বোডিয়া, যা প্রথমে প্রত্যাখ্যান করে ব্যাঙ্কক। শেষমেশ মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।
এরপর গত ২৬ অক্টোবর মালয়েশিয়ার মাটিতেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপস্থিতিতে এক স্থায়ী শান্তিচুক্তিতে সই করেছিলেন থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়ার রাষ্ট্রপ্রধানরা। সেই সময় ট্রাম্প দাবি করেছিলেন, তাঁর উদ্যোগেই হিংসা বন্ধে রাজি হয়েছে দুই দেশ। অক্টোবরের সেই চুক্তির পর মনে করা হয়েছিল সীমান্তে হয়তো স্থায়ী শান্তি ফিরবে। কিন্তু বছর শেষ হওয়ার আগেই ডিসেম্বরে ফের ভেস্তে গেল সেই চুক্তি।