পূর্বস্থলীর নতুনগ্রাম যেন কাঠের পুতুলের দেশ
এসবের মধ্যেও থাকছে পেঁচার ছোঁয়া। এছাড়াও ঘর সাজানোর জন্য ছোট ছোট পেঁচার চেন, পেঁচা দিয়ে ঘড়ির মতো জিনিসও নজর টানে ক্রেতাদের।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলীর নতুনগ্রাম যেন কাঠের পুতুলের দেশ। এই গ্রামে ঘরে ঘরে দিন-রাত এক করে তৈরি হচ্ছে কাঠের পুতুল। নতুনগ্রামের পরিচয় কাঠের পুতুলের জন্যে, যা বাংলার কৃষ্টি সংস্কৃতির অঙ্গ হয়ে উঠেছে। কাঠের পুতুল তৈরি করতে করতে গ্রামের নামই হয়ে গিয়েছে কাঠের পুতুলের গ্রাম। অধিকাংশ গ্রামবাসীই কাঠের পুতুল তৈরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কাঠ কেটে তৈরি হয় রাধাকৃষ্ণ, গৌড় নিতাই, জগন্নাথ-বলরাম-সুভদ্রা, বর-কনে কাঠের পেঁচা আরো নানান রকমের পুতুল।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গত ২৫০-৩০০ বছরে যার শিকড় ক্রমশ ছড়িয়ে পড়েছে। এই গ্রামের ৫০টি পরিবার গত কয়েক পুরুষ ধরে বংশ পরম্পরায় কাঠের পেঁচা তৈরি করে আসছেন। এটাই নতুনগ্রামের সিগনেচার। তবে চাহিদা থাকায় লক্ষ্মীর বাহন ছাড়াও এখন রাজা-রানি, গৌর-নিতাই, বর-বউ তৈরি করেন শিল্পীরা। এছাড়াও ঘর সাজানোর জন্য কাঠের সুদৃশ্য জিনিসপত্র, আসবাব মেলে। এমনকী পুরনো আমলের সিন্দুকও তৈরি করছেন শিল্পীরা। এসবের মধ্যেও থাকছে পেঁচার ছোঁয়া। এছাড়াও ঘর সাজানোর জন্য ছোট ছোট পেঁচার চেন, পেঁচা দিয়ে ঘড়ির মতো জিনিসও নজর টানে ক্রেতাদের।
বর্তমানে বেঙ্গালুরু, দিল্লি, মুম্বই সহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পাড়ি দিচ্ছে এই শিল্পকর্ম। সমাদর পেয়েছে দেশের বাইরেও। শিল্পীদের তৈরি কাঠের রাশিয়ান ডল স্পেনের মিউজিয়ামে স্থান পেয়েছে। শুধু তাই নয়, আফ্রিকান ডলের আদলেই কাঠের দুর্গাপ্রতিমা স্থান পেয়েছে রাজ্যের বিশ্ববাংলার বিপণন কেন্দ্রগুলিতেও। এখানকার শিল্পীদের তৈরি কাঠের মুখোশ ব্যবহার করা হচ্ছে গুজরাতের বেশ কয়েকটি সিনেমার সেট সাজাতে।
এই কাঠের পুতুলের হাত ধরেই শ্রী ফিরেছে নতুনগ্রামের। শিল্পীদের উপরে নজর পড়েছে প্রশাসনেরও। সম্প্রতি খাদি বোর্ড থেকে শিল্পীদের জন্য ওয়ার্কশপ করা হয়েছে। সারা বছর পর্যটকরা গ্রামে আসেন। তাঁদের কথা ভেবে গ্রামে তৈরি হয়েছে গেস্ট হাউস।