সিনেমা হলে বাড়ল দর্শকসংখ্যা, আশায় বুক বাঁধছেন প্রযোজকরা

করোনার জেরে আবারও বিধি নিষেধের গেড়োয় অর্ধেক দর্শকাসন নিয়ে চলছিল সিনেমা হল। তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর আবারও বুকে বল পাচ্ছেন বাংলা ছবির প্রযোজকরা।

February 1, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

রাজ্যে করোনা সংক্রমণের গ্রাফ নিম্নমুখী। এই পরিস্থিতিতে সোমবার বিকেলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, এবার থেকে রাজ্যের সিনেমা হলে ৭৫ শতাংশ দর্শকাসন নিয়ে ছবি প্রদর্শন করা যাবে। মহামারীর জেরে দীর্ঘদিন সিনেমা হল বন্ধ ছিল। তারপরে সিনেমা হল খুললেও ব্যবসা আবার চাঙ্গা হতে সময় লাগছিল। অবশেষে ‘টনিক’-এর মতো ছবি মুক্তি পাওয়ার পর ব্যবসা বেশ খানিকটা বেড়েছিল। কিন্তু সুখের সময় বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। করোনার জেরে আবারও বিধি নিষেধের গেড়োয় অর্ধেক দর্শকাসন নিয়ে চলছিল সিনেমা হল। তবে এদিন মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পর আবারও বুকে বল পাচ্ছেন বাংলা ছবির প্রযোজকরা।

আগামী কয়েকদিনের মধ্যে দু’টি ছবিও মুক্তি পেতে চলেছে। তার মধ্যে রয়েছে সৃজিত মুখোপাধ্যায় পরিচালিত ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ ও অরিত্র মুখোপাধ্যায়ের ‘বাবা, বেবি ও’। এরই মধ্যে গত ২৬ জানুয়ারি ‘৮/১২ বিনয়-বাদল-দীনেশ’ ও ‘স্বস্তিক সঙ্কেত’ মুক্তি পেয়েছিল। নতুন নির্দেশিকার কথা শুনে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত প্রযোজকরা। নুসরত জাহান, গৌরব চক্রবর্তী, শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় অভিনীত সায়ন্তন ঘোষাল পরিচালিত ‘স্বস্তিক সঙ্কেত’ ছবির প্রযোজক অশোক ধানুকা বলছিলেন, ‘এই ঘোষণার ফলে আমরা অতিরিক্ত সাহস পেলাম। আমাদের ইন্ডাস্ট্রির জন্য মুখ্যমন্ত্রী যা করছেন, এর চেয়ে ভালো আর কেউ করতে পারেন বলে আমার মনে হয় না।’ একই সুর শোনা গেল অরুণ রায়ের ‘৮/১২…’ ছবির প্রযোজক কান সিং সোধার গলায়, ‘গত রবিবারই টিকিট না পেয়ে নন্দন থেকে প্রায় শ’খানেক দর্শক ফেরত চলে গিয়েছেন। দর্শকাসন বাড়লে তো খুবই ভালো। দর্শকদের মধ্যে ভয়ও কমবে।’

যদিও এখনও পর্যন্ত ‘স্বস্তিক সঙ্কেত’ বক্স অফিসে যা ব্যবসা করেছে, তা নিয়ে খুব একটা খুশি নন অশোক ধানুকা। তার জন্য মহামারীকেই দায়ি করছেন তিনি। তাঁর যুক্তি, ‘এতদিন অর্ধেক দর্শকাসন নিয়ে সিনেমা হল খোলা ছিল। দর্শকদের মধ্যে ভয়ও ছিল। সেই কারণে আমাদের আশানুরূপ ব্যবসা হয়নি। এখন প্রতিদিন ধীরে ধীরে ব্যবসার অঙ্কটা বাড়ছে।’ তবে এরই মধ্যে বিনয়-বাদল-দীনেশের জয়গাথার গল্প দর্শক দেখতে আসছেন। কান সিং সোধার কথায়, ‘আমার লক্ষ্য শুধুমাত্র টাকা নয়। আমার কনটেন্ট সকলের পছন্দ হয়েছে। মহামারীর কারণে শুরুর দিকটা ধীর গতিতে হলেও, সপ্তাহান্তে বক্স অফিসে ভালোই ব্যবসা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত বক্স অফিসের হিসেবে আমি খুশি।’

বহু প্রতীক্ষিত প্রসেনজিত্ চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ মুক্তি পেতে চলেছে ৪ ফেব্রুয়ারি। ছবির প্রযোজনা সংস্থা এসভিএফের অন্যতম কর্ণধার মহেন্দ্র সোনি বলছিলেন, ‘অর্ধেক দর্শকাসন নিয়ে সিনেমা হল চলাকালীনও দর্শক সিনেমা হলে এসেছেন। প্রায় এক বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করার পর আমাদের বড় প্রজেক্ট ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ মুক্তি পেতে চলেছে। ৭৫ শতাংশ দর্শকাসন নিয়ে সিনেমা হল চালু হওয়ার খবরে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত।’ ওই একই দিনে যিশু সেনগুপ্ত ও শোলাঙ্কি রায় অভিনীত ‘বাবা, বেবি ও’ মুক্তি পাচ্ছে। এই ছবির প্রযোজক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বলছিলেন, ‘মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অসংখ্য ধন্যবাদ এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য। বাংলা সিনেমার প্রযোজক, পরিবেশকদের জন্য এটা একটা দারুণ স্বস্তির খবর।’ মহমারীর কারণেই বেশ অনেকদিন ধরে আটকে ছিল এই ছবির মুক্তি। পুজো বা ছুটির সময় না বেছে, এই ফেব্রুয়ারি মাসটাই মুক্তির জন্য কেন বাছলেন প্রযোজক? ‘আমাদের ছবি নন প্রাইম টাইমেই মুক্তি পায়। ‘মুখার্জিদার বউ’ ৮ মার্চ মুক্তি পেয়েছিল। তখন কোনও ছুটি ছিল না। আগে মে মাসে কোনও ছবি মুক্তি পেত না। ‘ইচ্ছে’ ভরা বর্ষায় মুক্তি পেয়েছিল। আমাদের ছবি তখনও দর্শক ভিড় করে দেখতে এসেছিলেন। তখন থেকেই মে মাসে ছবি মুক্তি হয়ে থাকে।’ সৃজিতের ‘কাকাবাবুর প্রত্যাবর্তন’ মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল ২০২০-র বড়দিনে। মহামারীর কারণেই মুক্তি পিছিয়ে ভ্যালেন্টাইনস ডে-সরস্বতী পুজোর সময়ের উত্সবের আমেজকেই ধরতে চাইছে প্রযোজনা সংস্থা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen