বিধবাদের জীবনে আলোর পথের দিশারী স্বয়ং বিদ্যাসাগর 

পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় ব্রিটিশ সরকার ভারতে ১৮৫৬ সালে হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন- প্রণয়ন করে।

June 23, 2020 | < 1 min read
Published by: Drishti Bhongi

উনবিংশ শতাব্দীতে সমাজসংস্কারমূলক  যে কটি আন্দোলন হয়েছিল তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘হিন্দু বিধবা বিবাহ’ আন্দোলন। সেই সময় বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ ব্যাপক হারে বাড়তে থাকে। আর এ কারণে অল্প বয়সী বিধবার সংখ্যাও বাড়তে থাকে। বিধবা বিবাহের প্রচলন তখনও হয়নি।

সেই সমাজ ব্যবস্থায় বিধবাদের এক অভিশপ্ত জীবনযাপন করতে হত। এমনকি যারা শৈশবে বা কৈশোরে বিধবা হয়েছিলেন তারাও বৈরাগ্য ও কঠোর ত্যাগস্বীকার করে জীবনযাপন করতে বাধ্য হতেন। পারিবারিক সম্মানের নামে তাদেরকে এক বঞ্চনাময় জীবনে ঠেলে দেওয়া হয়।  

পণ্ডিত ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় ব্রিটিশ সরকার ভারতে ১৮৫৬ সালে হিন্দু বিধবা পুনর্বিবাহ আইন- প্রণয়ন করে। যার মাধ্যমে বিধবাদের উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্য সম্পত্তির অধিকার, পুনর্বিবাহ  ইত্যাদি সামাজিক অধিকার প্রদান করা হয়।

বিদ্যাসাগরের প্রচেষ্টায় তৎকালীন বড়লাট লর্ড ডালহৌসি আইন প্রণয়ন করে বিধবা বিবাহকে আইনী স্বীকৃতি দেন। লর্ড উইলিয়ম বেন্টিনয়ের দ্বারা সতীদাহ বিলুপ্ত করার পর এটিই প্রথম বড় সমাজ সংস্কার আইন।

শোনা যায় বীরসিংহে বিদ্যাসাগরের এক বাল্যসহচরী ছিল। সে অকালে বিধবা হয়। এক দিন তিনি শুনলেন একাদশী বলে সে সারা দিন খায়নি। এ কথা শুনে তিনি কেঁদে ফেলেন।

বিদ্যাসাগর

আরো শোনা যায় বিদ্যাসাগরের মা একদিন তাঁকে বলেন,‘তুই এত দিন যে শাস্ত্র পড়িলি, তাহাতে বিধবাদের কোনও উপায় আছে কিনা?’ তার বাবাও তখন জানতে চাইলেন, ‘ধর্মশাস্ত্রে বিধবাদের প্রতি শাস্ত্রকারেরা কী কী ব্যবস্থা করেছেন?’

এর পরই নাকি তিনি ‘তত্ত্ববোধিনী পত্রিকা’য়, ‘বিধবাবিবাহ প্রচলিত হওয়া উচিত কিনা’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ লেখেন। রাজকৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে ১৮৫৬ সালের ৭ই ডিসেম্বর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর-এর উপস্থিতিতে প্রথম বিধবা বিবাহের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen