সিরিয়ালে সারাক্ষণ বিষ দেওয়া, ঝগড়া, গুন্ডামি— এসব দেখানো হচ্ছে, এতে বাচ্চারা ভুল শিখছে, ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৪৫: বৃহস্পতিবার মহানায়ক উত্তম কুমারের স্মৃতিতে আয়োজিত সম্মান প্রদান মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সিরিয়ালে সারাক্ষণ বিষ দেওয়া, ঝগড়া, গুন্ডামি— এসব দেখানো হচ্ছে। এতে বাচ্চারা ভুল শিখছে, অনেকে আত্মহননের পথ বেছে নিচ্ছে।”
প্রযোজক ও পরিচালকদের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “দয়া করে খারাপ কিছু শেখাবেন না। এটার দিকে নজর দিন। শুধুমাত্র সিরিয়াল টানতে গেলে রোজ গণ্ডগোল দেখাতে হবে, এটা ঠিক নয়। কত ভাল জিনিস রয়েছে, সেগুলিও দেখানো যায়।”
২০১৩ সালে রাজ্য সরকারের তরফে প্রথম ‘মহানায়ক’ সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। তারপর থেকে দেব, সোহম চক্রবর্তী, অঙ্কুশ হাজরা প্রতিবছর কোনও না কোনও তারকা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে এই পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এবার অভিনয়দুনিয়া থেকে গার্গী রায়চৌধুরীর হাতে মহানায়ক সম্মান তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধনধান্য স্টেডিয়ামের মহানায়ক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে এদিন উপস্থিত ছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, সোহম চক্রবর্তী, সৃজিত মুখোপাধ্যায়, অরিন্দম শীল, অম্বরীশ ভট্টচার্য, হরনাথ চক্রবর্তী, সৌমিতৃষা কুণ্ডু, অদিতি মুন্সী-সহ আরও অনেকে।
২০২৫ সালে মুখ্যমন্ত্রীর হাত থেকে মহানায়ক সম্মান নিলেন যাঁরা- পরিচালক- গৌতম ঘোষ, অভিনেত্রী- গার্গী রায়চৌধুরী, গায়িকা- ইমন চক্রবর্তী, গায়ক- রূপঙ্কর বাগচী, মেকআপ – সোমনাথ কুণ্ডু, প্রোডাকশন ডিজাইন – আনন্দ আঢ্য।
পুরস্কার প্রদানের পর মুখ্যমন্ত্রী সকলের সঙ্গে মঞ্চে একফ্রেমে ধরা দিলেন। এবং সর্বপরি মনে করিয়ে দিলেন ক্যামেরার নেপথ্যের মানুষেরা, অর্থাৎ কলাকুশলীদের অবদান অভিনেতা-অভিনেত্রীদের থেকে কম কিছু নয়। উল্লেখ্য, চলতি বছর পুরস্কারের তালিকায় ‘সুপারস্টার নাম’ ব্রাত্য বললেও অত্যুক্তি হয় না! বরং অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরীর পাশাপাশি পরিচালক, গায়ক-গায়িকা থেকে রূপটানশিল্পী, আর্ট ডিরেক্টরদের ‘মহানায়ক’ সম্মানে ভূষিত করলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের অনুষ্ঠানে শুধু ধারাবাহিক নয়, বাংলা ভাষা নিয়ে চলা ‘সন্ত্রাস’ এর বিরুদ্ধেও সরব হন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আজ বাংলা ভাষায় কথা বললেও শাস্তি পেতে হচ্ছে। তাদের জেলে ভরা হচ্ছে, এটা আমরা বরদাস্ত করব না। ৩০ কোটি মানুষ বাংলা বলেন। আমাদের নতুন ভাষা আন্দোলন গড়তে হবে।”
উত্তম কুমারকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মমতা বলেন, “উত্তম কুমার আমাদের দেশের, জাতির গর্ব। উনি প্রত্যেকটা গানে লিপ দিতেন, এটা ওনার বিউটি। আমি জীবনে আফশোস নিয়ে বেঁচে আছি, তাঁর সঙ্গে দেখা হয়নি কোনওদিন। সুচিত্রা সেন মৃত্যুর সাত দিন আগে দেখা করতে চেয়েছিলেন। সুপ্রিয়াদির সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল। কিন্তু উত্তমদার সঙ্গে দেখা না হওয়াটা বারবার কষ্ট দেয়।”