পুজোর আগেই পুরোহিত ভাতা দেবে রাজ্য সরকার

সব জেলার জেলাশাসকদের পাশাপাশি এই প্রকল্পটিকে বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা জেলা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিকরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

October 11, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

সর্বমঙ্গলামঙ্গল্যে শিবে সর্বাথ সাধিকে, শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়ণি নমোস্তুতে। পুরহিতদের কণ্ঠে মা দুর্গার এই প্রণামমন্ত্রই রাজ্যের নানাপ্রান্তে উচ্চারিত হতে চলেছে কয়েকদিন পরেই। পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া থেকে পুজো দেওয়ার জন্য পুরোহিতদের শরণাপন্ন হবেন আপামর বাঙালি। কিন্তু, পুজো পার হলে ক’জনইবা তাঁদের খেয়াল রাখে। তাই পুজোর আগেই এবার সেই পুরোহিত সমাজের মুখে হাসি ফোটাতে উদ্যোগী রাজ্য সরকার। পুরোহিত ভাতা দেওয়ার কথা আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু, তা যেন বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসবের আগেই তাঁদের হাতে পৌঁছয় তাতে সচেষ্ট রাজ্য সরকার। পুজোর আগে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত অফিস হবে। প্রতি জেলার হাজার হাজার পূজারী যাতে সময়মতো টাকা পান তার জন্য শনিবার ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বৈঠক করলেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সব জেলার জেলাশাসকদের পাশাপাশি এই প্রকল্পটিকে বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা জেলা তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিকরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

তবে শুধু প্রতিমাসে হাজার টাকা করে ভাতা নয়, যে সব দরিদ্র পুরোহিতের বাড়ি নেই তাঁদের এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা করে বাড়ি করার জন্য দেবে রাজ্য সরকার।

দু’কিস্তিতে তাঁরা এই টাকা পাবেন। তবে শুধুমাত্র মন্দিরে পুজো করা পুরোহিতরাই নয়, খ্রিস্টান, জৈন, বুদ্ধ, পার্সি সম্প্রদায়ের যে সব মানুষ ধর্মীয় কার্যকলাপে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেন তাঁরাও এর আওতায় আসছেন। পুজোর আগেই দরিদ্র পুরোহিতদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন মন্দিরের প্রধান সেবাইতরা।

গ্রামে পূজারীদের আলাদা মর্যাদা ছিল। পুজো-অর্চনার বিষয়ে তাঁরা যেমন বিধান দিতেন, তেমনি অনেক সময়ে গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাও মিটিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু, বর্তমান সমাজ ব্যবস্থায় সেই অবস্থা আর নেই। এখন যাঁর যত অর্থ, সমাজে তাঁর স্থান উঁচুতে।

এই অবস্থায় দরিদ্র পুরোহিতদের অবস্থা করুণ। তাই তাঁদের উপার্জন ক্রমশ নিম্নমুখী। বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই তিনি পুরোহিত ভাতা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তাই পুজোর আগেই সেই ভাতার টাকা পুরোহিতদের অ্যাকাউন্টে দিতে চান তিনি। ইতিমধ্যেই নবান্ন থেকে একটি তালিকা জেলাগুলির তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

এর পাশাপাশি তথ্য সংস্কৃতি দপ্তরও তথ্য সংগ্রহ করছে। পুরোহিতদের ফোন করে বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হচ্ছেন দপ্তরের আধিকারিকরা। পুরো কাজটি কোন পর্যায়ে রয়েছে তা যাচাই করতে খোদ মুখ্যসচিব এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলাগুলির সঙ্গে বৈঠক করেন। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, পুজোর ছুটি পড়ার আগেই পুরোহিতদের কাছে টাকা পৌঁছে দিতে হবে।

রাজ্যের উদ্যোগ নিয়ে সাধুবাদ জানিয়েছে সবপক্ষই। কিন্তু সকলেরই দাবি, প্রকৃত দরিদ্ররা যেন সুযোগ পায়। সেই বিষয়টিতে যেন বাড়তি নজর দেয় প্রশাসন। কল্যা঩ণেশ্বরী মন্দিরের প্রধান সেবাইত দিলীপ দেওঘড়িয়া, দুর্গাপুর ভিড়িঙ্গি কালীবাড়ি মন্দিরের প্রধান সেবাইত সাধন রায় বলেন, আমরা মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। এতদিন পুরোহিতদের নিয়ে কেউ ভাবেননি। পুজোর আগেই সেই টাকা পেলে আরও ভালো।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen