মন খারাপের অসুখে ভুগছে গোটা পৃথিবী, বলছে ল্যানসেটের সমীক্ষা

মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের অশিক্ষা এবং অসচেতনতা আরও জটিল করে তুলছে পরিস্থিতিকে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সম্প্রতি ল্যানসেটের একটি সমীক্ষা করেছে, তার ফলাফলে উঠে এসেছে বেশ ভয়াবহ ছবি।

January 21, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

সুনীল লিখে গিয়েছেন, “মন ভালো নেই মন ভালো নেই মন ভালো নেই
কেউ তা বোঝে না সকলি গোপন মুখে ছায়া নেই
চোখ খোলা তবু চোখ বুজে আছি কেউ তা দেখেনি”​​

মন খারাপের অসুখ করেছে গোটা পৃথিবীর। পেশাগত লড়াই, প্রতিদ্বন্ধীতা, পেশাগত চাপ, সম্পর্কের টানাপোড়েন, পারিবারিক সমস্যা, আকাঙ্খা, চাহিদা, পাওয়া, না পাওয়া, আর্থিকদুর্বলতা ইত্যাদি মানুষের মনকে দুর্বল করে তোলে। সমাধানহীন সমস্যা বাড়িয়ে তোলে অস্বস্তি, উদ্বেগ, আস্তে আস্তে ঘিরে ধরে মনকে। শরীরে অসুখের চেয়েও মারাত্মক মনের অসুখ। অবসাদের গ্রাস ডুবছেন মানুষজন। আট থেকে আশি যেকোনও বয়সের মানুষই মনের রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। মনের রোগটাও যে রোগ, তা আমরা অনেকেই আমল দিই না। মানসিক অবসাদে ভোগা মানুষ, সমাজের কথা ভেবেই জনসমক্ষে তা বলতে চান না। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আমাদের অশিক্ষা এবং অসচেতনতা আরও জটিল করে তুলছে পরিস্থিতিকে। মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সম্প্রতি ল্যানসেটের একটি সমীক্ষা করেছে, তার ফলাফলে উঠে এসেছে বেশ ভয়াবহ ছবি।

‘ল্যানসেট কমিশন অন এন্ডিং স্টিগমা অ্যান্ড ডিসক্রিমিনেশন ইন মেন্টাল হেলথ’-এর মতানুযায়ী বিশ্বজুড়ে প্রায় ১০০ কোটি মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। গড়ে গোটা বিশ্বে প্রতি আট জনের মধ্যে এক জন করে মানুষ মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। কৈশোরে ও বয়:সন্ধির বয়সীদের মধ্যে এই সমস্যা আরও বেশি জাঁকিয়ে বসছে। ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের ক্ষেত্রে প্রতি সাত জনে এক জন মানসিক উদ্বেগ বা অবসাদে ভুগছেন। এই পরিসংখ্যান সত্যিই চিন্তার। করোনার প্রথম বছরেই মানসিক সমস্যায় আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ২৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আপনিও মানসিক অসুস্থতায় আক্রান্ত হতে পারেন। মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে হরমোনের ভূমিকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হলেই মুশকিল। মনঃসংযোগের সমস্যা হলে, অবসন্ন লাগলে, কাজের ইচ্ছে চলে গেলে, ধরে নেওয়া হয় মস্তিষ্কে ডোপামিনের মাত্রা কমে গিয়েছে। কোনও কাজে চট করেই হাল ছেড়ে দেওয়া, অপরাধবোধে ভোগা, আত্মহত্যার প্রবণতা, ইত্যাদি বলে দেয় সেরোটোনিনের মাত্রার ভরসাম্য বিঘ্নিত হয়েছে। ঘুমের পরিমাণ বিঘ্নিত হওয়া, যৌনইচ্ছা কমে যাওয়া, ইত্যাদি এর অন্যতম উপসর্গ। নরএপিনেফ্রিনের প্রভাবে সারা শরীর ব্যথা বা জ্বালা করা। কোনওরকম সমস্যা হলেই দ্রুত মনোবিদের পরামর্শ নিতে হবে। মনের অসুখ খুবই সাধারণ একটি বিষয়। সমাজের কথা না ভেবে নিজের ভাল থাকাকে অগ্রাধিকার দিন, দেখবেন মন কেমনের অসুখ পালিয়ে গিয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen