সমাজমাধ্যমে এখন জোর আলোচনার চলছে গেরুয়া বসনধারী এই বৃদ্ধকে নিয়ে, জেনে নিন তাঁর আসল পরিচয়

এই পরিস্থিতিতে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন এক বিক্ষোভকারী। মঙ্গলবার ‘ছাত্র সমাজ’-এর নবান্ন অভিযানে সবচেয়ে আলোচিত মুখ গেরুয়া বসনধারী এই বৃদ্ধ।

August 29, 2024 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: “চুড়ি পরে বসে থাকুক এরা। এদের বাড়িতেও মা-বোন আছে। কি না, আমরা মহিলাদের সুরক্ষার জন্য আন্দোলন করতে এসেছি। কারো হাতে তো কোনও অস্ত্র নেই। জাতীয় পতাকা নিয়ে এসেছি আমরা।” গেরুয়া বসন পরে জাতীয় পতাকা হাতে আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছিলেন। কিন্তু, পুলিশের টানা জলকামানের সামনে কার্যত দাঁড়াতে পারেননি। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিলেন এক বিক্ষোভকারী। মঙ্গলবার ‘ছাত্র সমাজ’-এর নবান্ন অভিযানে সবচেয়ে আলোচিত মুখ গেরুয়া বসনধারী এই বৃদ্ধ।

শুরু নয়া বিতর্ক। কেউ তাঁকে আন্দোলনের নির্ভয় মুখ বলে দাবি করেন, কেউ আবার প্রশ্ন তোলেন ছাত্র আন্দোলনে বুড়ো সাধু কী করছিল? খোঁজ শুরু হয় কে সেই বৃদ্ধ? জানা যায়, ওই গেরুয়া বসন বৃদ্ধের নাম বলরাম বসু। ঋষি অরবিন্দের আদর্শে অনুপ্রাণিত বলরামের সাফাই তিনি পুলিশকে মোটেই চুড়ি পরার কথা তিনি বলেননি।
যদিও সেই বিতর্কিত ‘নারীবিদ্বেষী মন্তব্য’নিয়ে সরব টলিউডের প্রমিলা ব্রিগেড। সংবাদমাধ্যমে এই নিয়ে মুখ খুলেছেন অপরাজিতা আঢ্য। তিনি বলেন,’তাঁর মা জন্ম দিয়েছেন। মা দুর্গাও চুড়ি পরেন, মা কালীও চুড়ি পরেন। যাঁদের আমরা পুজো করি, যে শক্তির আরাধনা করি… তাঁদের হাতের চুড়ি তো শক্তির প্রতীক’। ছোটপর্দার লক্ষ্মী কাকিমার কথায়, ‘শিব-শিবা মিলে কিন্তু শক্তি এবং চুড়ির অনেক তাৎপর্য রয়েছে।….উনি যদি সেটা না জানেন সেটা ওঁর অজ্ঞতা।’ তবে সবাই সবটা নাও জানতে পারে, কিন্তু এই ধরণের মানসিকতার সমালোচনার করেন অপরাজিতা।

টেলিপাড়ার জাঁদরেল খলনায়িকা মিশমি। আপতত কোন গোপনে মন ভেসেছে ধারাবাহিকে দেখা যাচ্ছে তাঁকে নায়কের বোনের ভূমিকায়। মিশমির কথায়, ‘এটা তো একদিক থেকে মেয়েদের অপমান করাই। যাঁরা হাতে চুড়ি পরে থাকে তাঁরা কি দু্র্বল? না তো! এ শক্তির প্রতীক। আমার মনে হয় এই সমস্ত কিছু করে আসল লক্ষ্য থেকে সবাই সরে যাচ্ছি। এসব করা উচিত নয়। যা মূল লক্ষ্য সেদিকেই স্থির থাকা উচিত।’ লেখিকা তথা রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, এটি দীর্ঘকালের যে সংস্কার পুরষতন্ত্র বয়ে বেড়িয়েছে এটা তারই প্রতিফলন মাত্র।

বিষয়টি নিয়ে সোশাল মিডিয়ায় সরব রূপম ইসলামের স্ত্রী রূপসা দাশগুপ্তও। সেই নিয়ে ‘হল্লা বোল’ লেখা পোস্টারও শেয়ার করেন রূপসা। বিতর্কের জল গড়াতেই বুধবার সন্ধ্যায় বলরাম বসু সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে জানান ওই ভঙ্গির মাধ্যমে তিনি ঠিক কী বোঝাতে চেয়েছিলেন। বৃদ্ধ বলেন, ‘আমি দেখাতে চেয়েছিলাম পুলিশ একনায়কতন্ত্রের দাসত্ব করছে। সেই দাসত্বকে ভেঙে ফেলার কথা বলেছিলাম। বলেছিলাম হাতক়ড়া ছেড়ে চলে এসো। বলেছিলাম আরও জল ফেলো আমরা সব বয়ে চলে যাই’।

এর পাশাপাশি কে এই বলরাম বসু তা নিয়ে সামজমাধ্যমে চলছে আলোচনা। একজন ফেসবুকে লেখেন, ‘বৃদ্ধ সন্ন্যাসী ” শ্যামবাজারের বলরাম বসু, কস্মিনকালেও প্রাক্তন মেয়র কমল কুমার বসুর ছেলে দুরে থাক, দুর সম্পর্কের আত্মীয় নন। গবেষক টবেষক কত কিছুই বলরামের নামের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে। যতদুর জানি ও বোধহয় কলেজেও কোনদিন যায় নি। টিভি মেকানিক ছিল। পরে বিয়ে বাড়ির ভিডিও তুলত। ওর ঘনিষ্ঠ বন্ধু, লালু, মিঠু, রনবীর, শ্যাম। শ্যাম আকাশ বাংলা চ্যানেলে আছে। যে কেউ খোঁজ নিতে পারেন। এটা ঠিক ও ওর বাবার মতোই আশৈশব কট্টর আর এস এসের অনুরাগী। হাফ প্যান্ট পরে গোয়া বাগান পার্কে কুচকাওয়াজ করত। বয়েস পঞ্চাশের কাছাকাছি হবে। দাঁত পরে যাওয়ায় বয়সের তুলনায় বৃদ্ধ লাগে। কিছুদিন ধরে ও এই রক্তজবা পোষাক পরছে। কিন্তু সন্ন্যাসী মোটেও নয়। সর্বত্যাগী তো নয় ই। অনেকেই বলা কে প্রায় আনন্দ মঠের চরিত্র করছেন না জেনে। বলরাম রাজনীতির লোক। ওর তান্ত্রিক সাজা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। ফলে আমি বা আমরা অন্তত এই ভন্ডামি সমর্থন করতে পারছিনা।’ সব মিলিয়ে মঙ্গলাবারের পর থেকে সমাজমাধ্যমে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছেন গেরুয়া বসনধারী এই বৃদ্ধ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen