এবছর ধানের ফলন প্রায় এক লক্ষ মেট্রিক টন বেশি হওয়ার সম্ভাবনা
তাই এবছর জেলায় ধানের ফলন অনেকটাই ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলার সর্বত্র ধান কাটার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।

পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় এবছর খরিফ মরশুমে প্রায় সাড়ে ১৯ লক্ষ মেট্রিক টন ধানের ফলন হবে। জেলা কৃষিদপ্তরের সমীক্ষা থেকে এই তথ্য উঠে এসেছে। গত বছরের তুলনায় এবছর ধানের ফলন প্রায় এক লক্ষ মেট্রিক টন বেশি হবে কৃষিদপ্তরের আধিকারিকরা মনে করছেন। ধানের (Paddy) ফলন ভালো হওয়ায় চাষিদের মুখে চওড়া হাসি ফুটে উঠেছে। কারণ, ধানের ফলন ভালো হওয়ায় চাষিরাও সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করে ভালো টাকা আয় করতে পারবেন। অনেকেই জমি থেকে ধান কেটে আলু চাষ শুরু করে দিয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার উপ কৃষি অধিকর্তা (প্রশাসন) সুকান্ত দাশগুপ্ত বলেন, এবছর খরিফ মরশুমে প্রাকৃতিক বিপর্যয় কিছু হয়নি। তাই এবছর জেলায় ধানের ফলন অনেকটাই ভালো হয়েছে। ইতিমধ্যেই জেলার সর্বত্র ধান কাটার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
কৃষিদপ্তর (Agriculture Department) সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় গতবছর ৩ লক্ষ ৮০ হাজার ৮৯১ হেক্টর জমিতে ধান লাগানো হয়েছিল। তাতে গত বছর ১৮ লক্ষ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হয়েছিল। এবছর জেলায় ৩ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৩০ হেক্টর জমিতে ধান লাগানো হয়েছিল। গত বছরের তুলনায় সামান্য পরিমাণ বেশি জমিতে ধান লাগানো হয়েছিল। কিন্তু, ফলন গতবারের তুলনায় অনেকটাই ভালো হওয়ার আশা করছেন জেলা কৃষি আধিকারিকরা। ইতিমধ্যেই জেলার সর্বত্র ধান কাটার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। জেলায় প্রায় ৬০ শতাংশ জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। কৃষিদপ্তরের সমীক্ষা অনুযায়ী, এবছর ১৯ লক্ষ ৪৭ হাজার ৬৫০ মেট্রিক টন ধানের ফলন হবে। করোনা পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের মানুষ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। চাষিরাও ব্যাঙ্ক থেকে লোন নিয়ে চাষ করেছেন। ফলন খারাপ হলে চাষিরা সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতেন। ভালো ফলন হওয়ায় চাষিরা বেজায় খুশি। কারণ, ইতিমধ্যেই জেলাজুড়ে খাদ্যদপ্তরের পক্ষ থেকে শিবির করে ধান কেনা শুরু করা হয়েছে। ফলে, চাষিরা এখন সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করার জন্য বিভিন্ন শিবিরে গিয়ে লাইন দেওয়া শুরু করে দিয়েছেন।
জেলার গড়বেতা, শালবনী, মেদিনীপুর সদর ব্লক, চন্দ্রকোণা রোড সহ বিভিন্ন জায়গায় জমি থেকে ধান কাটার কাজ প্রায় শেষ হয়ে গিয়েছে। গড়বেতা, চন্দ্রকোণা রোড এলাকায় অধিকাংশ জমিতেই ধান কাটার পর সেখানে আলু লাগানো হয়ে গিয়েছে। গড়বতা-৩ ব্লকের রসকুণ্ডু এলাকার এক চাষি তাপস চক্রবর্তী বলেন, আমার আট বিঘা জমি রয়েছে। গত বছর সমস্ত জমিতেই ধান চাষ করেছিলাম। গতবছর ৫৫ কুইন্টাল ধান পেয়েছিলাম। গতবছর বৃষ্টির ঘাটতি ছিল বলে ফলন কিছুটা মার খেয়েছিল। এবছর সেটা হয়নি বলেই ফলনও ভালো হয়েছে। এবছর জমি থেকে প্রায় ৬৪ কুইন্টাল ধান পেয়েছি। ভেজা ধান সরকারি শিবিরে কেনা হয় না। তাই এখন জমি থেকে ধান বাড়িতে এনে তা শুকানোর কাজ চলছে। ধানের শিবির থেকে টোকেন নিয়ে এসেছি। নির্দিষ্ট দিনে গিয়ে ধান বিক্রি করে আসব।