বিভিন্ন দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ও বহিষ্কৃতরাই এখন বিজেপিতে যাচ্ছেঃ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
বিজেপি যে সমানে বিভিন্ন নেতাকে একে অপরের বিরুদ্ধে খেপিয়ে দল ভাঙছে, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেন জনগণ ও কর্মীদের।

২০১৯ সালে তুলনামূলকভাবে রাজ্যে খারাপ ফল করার পর থেকেই তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) থেকে দলছুটের সংখ্যা সমানে বেড়েছে। কিছু অতিলোভী এবং কিছু দুর্নীতিতে জড়িত নেতাদের সিংহভাগ এখন পা বাড়িয়ে রেখেছে বিজেপির দিকে। আবার অনেক নেতার সঙ্গে কোনও কথা না হলেও হোয়াটস অ্যাপ এবং বিজেপির দলদাসে নিজেদের প্রমাণ করা টিভি মিডিয়া অনেকের নামেই বলে দিচ্ছে তারা তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাচ্ছেন।
আজ কোচবিহার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মীসভায় এইসকল নেতাদের রীতিমত কড়া বার্তা দিলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বিভিন্ন দুর্নীতি এবং গোলমালের দায়ে অভিযুক্ত তৃণমূল থেকে বহিস্কার হওয়া নিশীথ প্রামাণিক এখন বিজেপির টিকিটে সেখানকার সাংসদ। তিনি জেতার পর থেকে কোচবিহার অশান্ত হয়ে চলেছে। এই বিষয়ে সকলের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা দেখছেন যাদের জিতিয়েছেন তারা কীভাবে অশান্ত করছে শান্ত কোচবিহারকে। আমরা ওকে বহিস্কার করেছিলাম। টাকা দিয়ে, এপার ওপারে নানারকম কান্ডে জড়িয়ে আপনাদের ভোট পেয়ে জিতেছে।
দলের যেসব কর্মী বিজেপির (BJP) ভয়ে দল ছাড়তে চাইছে, তাদের নাম না করে তিনি বলেন, বিজেপি ভয় দেখালে ভয় পাবেন না। দুর্নীতিতে জড়িত এবং জেতার পরে মানুষের কাজ না করা নেতাদের টিকিট দেয় না তৃণমূল। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যারা জানে টিকিট পাবে না, তারা চলে যাচ্ছে। কেউ টাকার জন্য চলে যাচ্ছে। কেউ টাকা সুরক্ষিত রাখতে চলে যাচ্ছে। তিনি কর্মীদের বলেন, ভয় পাওয়ার কোনও কারণ নেই। নিজেদের বিরুদ্ধে লড়াই করবেন না।
এরকম নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, এরকম নেতারা জোয়ারে আসে ভাঁটায় চলে যায়। যারা প্রথম থেকে ছিল, তারা এখনও আছে, পরেও থাকবে। সময় বদলালে মানুষ কাপড় বদলায়, চরিত্র না। সবাই একসঙ্গে কাজ করুন। ভেদাভেদ নয় ঐক্য চাই। জোট বাঁধুন তৈরি হন। ডুবলে আমি ডুববো, আপনাদের ডুবতে দেব না।
কয়েকদিন আগে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী এবং বীরভূমের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে বিজেপির কোনও দিল্লির নেতা ফোন করে দেখা করতে চান। দুজনেই দেখা করতে অস্বীকার করেন। বিজেপির থেকে ন্যুনতম সৌজন্যতাও যে আশা করা যায় না, সেই কথাই তিনি বলেন।
বিজেপি যে সমানে বিভিন্ন নেতাকে একে অপরের বিরুদ্ধে খেপিয়ে দল ভাঙছে, সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেন জনগণ ও কর্মীদের। তিনি বলেন, বহিরাগত গুন্ডা পরিবারে লড়াই লাগালে সহ্য করবেন? নিচুতলা ও মধ্যতলার কর্মীদের দায়িত্ব নিতে হবে বিজেপির এই খেলা রোখার। যারা সিপিএমের বিরুদ্ধে ভয় পাননি লড়তে, আজও তারা ভয় পাবেন না।