দক্ষিণ ২৪ পরগনা তৃণমূলেরই, ব্যতিক্রম শুধুমাত্র ভাঙড়

আম্পানের ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ, আইএসএফের প্রভাব সহ একাধিক ইস্যু ছিল এই জেলায়।

May 3, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

নিজেদের গড় ধরে রাখল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩১টি আসনের মধ্যে ৩০টি আসনই ঘরে তুলল ঘাসফুল শিবির। চোনা হিসেবে পড়ে রইল ভাঙড়। বিজেপি দাবি করেছিল, এবার তারা এই জেলায় ন্যূনতম ১২টি আসন পাবে।  কাকদ্বীপ, সাগর, পাথরপ্রতিমা, কুলপি, সাতগাছিয়া, গোসাবা, জয়নগর ও কুলতলিকে তারা নিশ্চিত জয়ের তালিকায় রেখেছিল। কিন্তু সে সব কাগজে-কলমে থাকলেও জনাদেশ ধুয়ে মুছে সাফ করে দিয়েছে বিজেপিকে। পদ্ম শিবির একটি আসনও পায়নি। বরং এই জেলা থেকে মাথা উঁচু করে বিধানসভায় যাওয়ার ছাড়পত্র পেয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। ২০১৬ সালের বিধানসভা ভোটের নিরিখে এবার একাধিক কেন্দ্রে অনেকটাই ভোট বেড়েছে জোড়াফুলের। কয়েকটি কেন্দ্রে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও, শেষ শেষ হাসি হেসেছেন তৃণমূল প্রার্থীরা। তবে অধিকাংশ কেন্দ্রেই সহজ জয় পেয়েছে তৃণমূল।


আম্পানের ক্ষতিপূরণ বিলি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ, আইএসএফের প্রভাব সহ একাধিক ইস্যু ছিল এই জেলায়। অনেকেই ভেবেছিলেন, এই সব ফ্যাক্টর হয়তো চাপে ফেলবে তৃণমূলকে। গোসাবা, সাগর, ডায়মন্ডহারবার সহ একাধিক কেন্দ্রে খোদ দলের অন্দরেই দেখা দিয়েছিল নানা প্রশ্ন। কিন্তু ভোটের ফল বেরতেই দেখা গেল, গতবারের থেকেও ব্যবধান বেড়েছে জয়ের। উচ্ছ্বাসে ভেসেছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা।


ভোট গণনা শুরুর পর থেকেই সবার নজর কেড়েছিল ক্যানিং পূর্ব কেন্দ্র। কারণ এই আসনে গোড়ার দিকে লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। এক সময়ে তৃণমূল প্রার্থী শওকত মোল্লা পিছিয়ে ছিলেন বেশ খানিকটা। পরের রাউন্ডগুলিতে সেই ঘাটতি পুষিয়ে তিনি জয়ী হয়েছেন ৫২ হাজার ভোটে জয়ী হয়েছেন। এদিকে, এই জেলায় তারকা প্রার্থীদের লড়াইয়ে বাজিমাত করেছেন সোনারপুর দক্ষিণের তৃণমূল প্রার্থী লাভলি মৈত্র। এই কেন্দ্রে বিজেপি’র অঞ্জনা বসুর সঙ্গে তাঁর হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও, শেষ ল্যাপে ব্যবধান বাড়িয়ে জয়ী হয়েছেন লাভলি। সোনারপুর উত্তর কেন্দ্রেও গতবারের তুলনায় বেশি ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন তৃণমূল প্রার্থী ফিরদৌসি বেগম। এই জেলায় চারটি কেন্দ্রে তৃণমূলত্যাগী নেতাদের প্রার্থী করেছিল বিজেপি। কিন্তু তাঁদের একজনও দাগ কাটতে পারেননি।

রায়দিঘি, সোনারপুর উত্তর, গোসাবা এবং ডায়মন্ডহারবার কেন্দ্রে বড় ব্যবধানেই জয়লাভ করেছেন তৃণমূলের প্রার্থীরা। ব্যতিক্রম ভাঙড়। ভাঙড়ে প্রথম থেকেই এগিয়ে ছিলেন আইএসএফ-র প্রার্থী নওশাদ সিদ্দিকি। সকালের প্রবণতা বাস্তবে পরিণত হল বিকেলের দিকে। প্রায় ১৪ হাজার ভোটে তৃণমূল প্রার্থী রেজাউল করিমকে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন নওশাদ। প্রত্যাশিতভাবেই বড় ব্যবধানে (৬১ হাজার) জিতলেন বারুইপুর পশ্চিম কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী তথা বিদায়ী বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রথমবার ভোটে দাঁড়িয়ে বারুইপুর পূর্ব কেন্দ্রে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছেন বিভাস সর্দার।
তবে নিজের গড় অটুট রাখলেন সংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে সাতগাছিয়া নিয়ে প্রথম থেকেই চিন্তায় ছিল তৃণমূল। কিন্তু সেখানেও মসৃণ জয় পেল তৃণমূল। এদিকে, রায়দিঘি বিধানসভা আসনে সিপিএম প্রার্থী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় লড়াই দিলেও শেষমেশ হাসি ফুটেছে তৃণমূল প্রার্থী ডাঃ অলোক জলদাতার। এদিকে, মহেশতলা, বজবজ, কুলতলিতেও বিশাল ব্যবধানে জয় পেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থীরা।


উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ভোটে এই জেলায় ২৯টি আসন ছিল তৃণমূলের দখলে। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনেও সব আসনে এগিয়ে ছিল জোড়াফুল শিবির।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen