আজ শীতলা অষ্টমী, বসন্তর প্রকোপ থেকে বাঁচতেই শুরু হয়েছিল শীতলা পুজো
দেবী শীতলা গুটি বসন্ত, জল বসন্ত ও হামের মতো অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখেন বলে বিশ্বাস করা হয়। তিনি যেমন অসুখ নিরাময় করতে পারেন, আবার তিনিই অসুখ ছড়িয়ে দিতে পারেন।
Authored By:

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আজ শীতলা অষ্টমী। চৈত্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথি শীতলা অষ্টমী হিসেবে পালিত হয়। দোল পূর্ণিমার আট দিন পর দেবী শীতলার পুজো হয়। শীতলা অষ্টমী তিথিটি বসোদা অষ্টমী নামেও পরিচিত। এখন বসন্তকাল, বসন্ত নানান রোগ-ব্যাধি নিয়ে আসে। একদা বসন্তের কারণে গ্রামের পর গ্রাম উজাড় হয়ে যেত। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, শীতলা মায়ের পুজো করলে বসন্ত ঠেকানো সম্ভব। দেবী শীতলা গুটি বসন্ত, জল বসন্ত ও হামের মতো অসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখেন বলে বিশ্বাস করা হয়। তিনি যেমন অসুখ নিরাময় করতে পারেন, আবার তিনিই অসুখ ছড়িয়ে দিতে পারেন।
পুরাণ মতে, জ্বরাসুর বাচ্চাদের মধ্যে জ্বর ছড়িয়ে দিত। একদা জ্বরাসুরের কারণে মর্ত্যলোকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় শিব ও পার্বতী জ্বরাসুরকে দমন করতে আবির্ভূত হন। মহাদেব ভৈরব রূপ ধারণ করেন এবং জ্বরাসুরের সঙ্গে যুদ্ধে আরম্ভ করেন। পার্বতী দেবী শীতলার রূপ নিয়ে ধরণীকে শীতল করতে নেমে আসেন। নিজের পাত্র থেকে তিনি সর্বত্র জল ছড়িয়ে দেন এবং ঝাড়ু দিয়ে রোগ বহনকারী জীবাণু দূরে সরিয়ে দেন।

পুরাণ মতে, দেবী শীতলা আদ্যাশক্তি দুর্গারই রূপ। শীতলা দেবী সবকিছু শীতল রাখেন। প্রচলিত বিশ্বাস মতে, স্মলপক্স, চিকেনপক্স, হামের মতো যে’সব অসুখে গায়ে গুটি বের হয়, সেই সব অসুখ শীতলা নিয়ন্ত্রণে রাখেন। দেবী শীতলা গাধার উপরে আসীন। তাঁর এক হাতে পাত্র, অন্যহাতে ঝাঁটা থাকে। গোটা বাংলায় শীতলা পূজিতা হন। পুজোর দিন শীতলা মাকে বাসি খাবার নিবেদন করা হয় এবং তাঁর ভক্তরাও বাসি খাবার খেয়ে থাকেন। এক সময় গ্রাম বাংলায় কেউ বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে বলা হত, তার ‘মায়ের দয়া’ হয়েছে। একসময় বসন্ত ছিল মহামারীর মতো, সেই সময় দেবীর আরাধনা করলে গ্রামের মানুষ বসন্তের প্রকোপ থেকে মুক্তি পেত।