বাংলাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ তকমা! প্রতিবাদে গর্জে উঠল পরম, কৌশিক, কমলেশ্বর সহ টলিপাড়া
বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য দাবি করেছেন বাংলা বলে নাকি কোনও ভাষাই নেই। এবার বাংলা ভাষার অপমানের প্রেক্ষিতে গর্জে উঠেছে টলিপাড়া।

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২১:৩৯: অমিত শাহের অধীনস্থ দিল্লি পুলিশ বাংলা ভাষাকে ‘বাংলাদেশি ভাষা’ বলে তকমা দিয়েছে। প্রতিবাদে গর্জে উঠেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী স্ট্যালিন সরব হয়েছে প্রতিবাদে। সঙ্গীত শিল্পী রূপম ইসলাম থেকে প্রখ্যাত ক্যুইজ মাস্টার ও লেখক সিদ্ধার্থ বসু, ক্ষোভে ফেটে পড়ছেন সকলেই। নানা মহল থেকে প্রতিবাদ শুরু হয়েছে। অন্যদিকে বিজেপি উঠে পড়ে লেগেছে দিল্লি পুলিশের তকমাকে সত্যি প্রমাণ করতে। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য দাবি করেছেন বাংলা বলে নাকি কোনও ভাষাই নেই। এবার বাংলা ভাষার অপমানের প্রেক্ষিতে গর্জে উঠেছে টলিপাড়া।
সমাজ মাধ্যমে এই ঘটনায় ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন পরিচালক সৃজিত মুখোপাধ্যায়। তিনি লিখেছেন, “মূর্খের দল, এটাকে বাংলাদেশি ভাষা বলে না। একে বাংলা বলা হয়। যে ভাষায় আপনাদের জাতীয় সঙ্গীত লেখা, সেটাই তো বাংলা ভাষা।” তিনি আরও মনে করিয়ে দিয়েছেন, বাংলা ভারতের সংবিধান স্বীকৃত ২২টি ভাষার মধ্যে অন্যতম।
আর এক পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় লিখছেন, “বাংলা ভাষা আমার প্রিয় বিষয় শুধু নয়, ৮ বছর আমি শিক্ষকতা করেছি বাংলা ভাষার শিক্ষক হিসেবে। ‘বাংলাদেশী ভাষা’র ‘টেক্সট’ বলে কোনো কিছুর অস্তিত্ব আছে জানতাম না। সেই ভাষা অনুবাদ না করলে তদন্ত বিঘ্নিত হচ্ছে এই চিঠিতে পড়লাম! দিল্লীতে অজস্র বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলা ভাষার বহু শ্রদ্ধেয় অধ্যাপকেরা আছেন। প্রশাসন কি পারে না তাঁদের কাছে গিয়ে নিজেদের বাংলা ভাষা সম্পর্কে ধারণাটা স্বচ্ছ করতে? উইলিয়াম কেরী বাংলা ভাষাটা প্রাণ দিয়ে শিখেছিলেন বাংলার আত্মাকে বুঝতে। আজকের প্রশাসন বাংলা বিষয়ে অস্বচ্ছ হলে সাহায্য নিন, নইলে প্রশাসনিক চিঠিতে নিজেদের মারাত্মক অজ্ঞতা এরম বারবার সামনে আসবে। বাংলা ভাষা থেকে হাজারটা আঞ্চলিক উপভাষা তৈরি হলেও, ‘টেক্সট’ একমাত্র বাংলা। ধন্যবাদ।”
পরিচালক কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায় নাম না করে অমিত মালব্যকে আক্রমণ করে লিখেছেন, “একটি ভাষা আছে, যেখানে তালব্য ‘শ’ দিয়ে একটি নিষ্পাপ পশু ও তার সন্তানাদির নাম শুরু হয়। কিন্তু, সে ভাষায় মালব্য ‘শ’ এর কোন ব্যবহার নেই। দুর্ভাগ্যজনক! কিন্তু আমরা সেই ভাষাতেই কথা বলে আনন্দ পাই।”
অভিনেতা ঋত্বিক চক্রবর্তী আবার নিশানা করেছেন বিজেপিকে। সমাজ মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, “বাংলা বিরোধী বাঙালি বিরোধী গান্ধীজি বিরোধী সংবিধান বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন বিরোধী একই সঙ্গে সেলুলার জেলে বসে মুচলেকার পক্ষে হিটলারের পক্ষে ডোলান্ড ট্রাম্পের পক্ষে নাথুরামের পক্ষে এমন কী গুমনামী বাবার পক্ষে এক কথায় প্রকাশ করুন।”
অভিনেতা পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় লিখেছেন, “বাংলা ভাষাকে স্বীকৃতি দিয়েছে আমাদের মহান সংবিধান।”
একদিকে বাঙালি হেনস্থা অন্যদিকে বাংলা ভাষাকে আক্রমণ; সমাজের নানা মহল থেকে প্রতিবাদের ঢেউ উঠছে। শিল্পী, লেখকেরা প্রতিবাদ করছেন। রাজ্যের শাসক দলও সরব।