বাংলার মসলিন – এক ‘অমলিন’ ঐতিহ্য

বাংলা মসলিনের সুনাম বিশ্বজোড়া। সূক্ষ্ণ কাজের জন্য সমাদৃত এই কাজ বংশ পরম্পরায় করে চলেছেন বাংলার তাঁতিরা।

January 24, 2020 | < 1 min read
Published by: Drishti Bhongi

বাংলা মসলিনের সুনাম বিশ্বজোড়া। সূক্ষ্ণ কাজের জন্য সমাদৃত এই কাজ বংশ পরম্পরায় করে চলেছেন বাংলার তাঁতিরা। এই শিল্প ছিল অবিভক্ত বাংলার গৌরব। প্রাচীন ভারতে এই মসলিন ছিল বিলাসিতার প্রতীক।

বাংলার মসলিন। ছবি সৌজন্যেঃ bongodorshon

অত্যন্ত সূক্ষ্ণ, হাতে বোনা এই কাপড় তৈরী হত ব্রহ্মপুত্রের তীরে উৎপাদিত কার্পাস তুলো দিয়ে। কাঁচামালের একচেটিয়া যোগানের জন্যে ঢাকা এই শিল্পের কেন্দ্র বিন্দু হয়ে ওঠে। বুনুনে দক্ষ কারীগর দিয়ে শুরু হয় মসলিন তৈরী।

এই মসলিনের আকর্ষণ এবং গুণমান এতটাই ভাল ছিল যে প্রাচীন রোমের সাথে ভারতের মসলিন বাণিজ্য চালু হয়। ধীরে ধীরে বাংলার মসলিন শিল্পের প্রতীক হয়ে ওঠে। সম্ভবত তৎকালীন ভারতের বন্দর শহর ‘মাসুলিপাটনাম’ থেকে মসলিন কথাটি এসেছে। এখানেই গ্রীক এবং রোমান সওদাগররা এই বিখ্যাত কাপড়ের খোঁজে ভীড় জমাতেন।

এই উঁচুদরের কাপড় সেই সময় পশ্চিম বিশ্বে বাংলার মুখ উজ্জ্বল করেছিল। ভারতে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আগমনের সাথে সাথেই মসলিন শিল্প সাম্রাজ্যবাদী নিপীড়নের শিকার হয়। মসলিন শিল্পের সাথে তাদের উৎপাদিত কলের মোটা কাপড় কখনোই প্রতিযোগীতায় পেরে উঠবে না; এই ভয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি নির্মম সিদ্ধান্ত নেয়। তারা সমস্ত মসলিন শিল্পীর হাতের বুড়ো আঙুল কেটে দেয়, যাতে তারা কখনোই আর এই কাপড় বুনতে না পারেন। 

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ দুই জায়গাতেই এই শিল্প পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করছে। আশা করা যায় বাংলার ঐতিহ্যর এই মসলিন ‘অমলিন’ থেকে যাবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen