বিজেপির কাছে কাজের হিসেব চেয়ে প্রচারে তৃণমূল

মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের বেশ কিছু রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় বছরের পর বছর ধরে সমস্যায় ভুগতে হয়েছে মানুষকে।

January 6, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

মাদারিহাটের (Madarihat) বিজেপি বিধায়কের কাছে উন্নয়নমূলক কাজের হিসেব চেয়ে প্রচারে নামতে চলেছে তৃণমূল (Trinamool)। দলের জেলা কর্মিটি থেকে শুরু করে চা বাগানের শ্রমিক কর্মচারী সংগঠনগুলির অভিযোগ, এলাকায় উন্নয়নে বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগগার ভূমিকা শৃন্য।

বীরপাড়া পঞ্চায়েত সর্মিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ রশিদুল আলম বলেন, “রাস্তাঘাটের উন্নয়ন, পানীয় জলের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে বিধায়ক মনোজ টিগগা মিথ্যে প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই দিতে পারেননি। ভোটের আগে মনোজবাবুর কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব চাইবে সাধারণ মানুষ।”

টিগগা অবশ্য সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বিধায়কের পালটা অভিযোগ, তীব্র প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের অসহযোগিতার জন্যই সমস্যাগুলির সমাধান হয়নি।

মাদারিহাট বিধানসভাটি বিজেপির (BJP) দখলে থাকলেও পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, গ্রাম পঞ্চায়েতগুলি তৃণমূলের দখলে। তাই পঞ্চায়েতের কাজকর্মের সাফল্যের হিসেব তুলে ধরে ভোটে নামবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। পাশাপাশি বিজেপি বিধায়ক কোনও উন্নয়নমূলক কাজ করেননি বলে ভোটারদের কাছে প্রচার করা হবে। বীরপাড়ার কেন্দ্রস্থলে লেভেল ক্রসিংয়ে ওভারব্রিজ তৈরি হয়নি আজও। ফলে প্রতিদিন লেভেল ক্রসিংয়ের যানজটে আটকে থাকে আ্যাম্বুল্যাস সহ হাজার হাজার যানবাহন। এমনকি যানজটে আটকে থেকে একাধিকবার রোগীর মৃত্যুও হয়েছে। দলগাঁও রেলস্টেশন চত্বরে ট্রাক থেকে নামিয়ে ওয়াগনে তোলা হয় ডলোমাইট। ডলোমাইটের গুঁড়ো বীরপাড়ার বাতাসে সারাদিনই ভাসতে থাকে। অথচ ডলোমাইট ওঠানামার কাজ আটকে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে।

তৃণমূল নেতা রশিদুল আলম বলেন, “ভোটে জিতলে ছয় মাসের মধ্যে সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন টিগগা। অথচ রেলমন্ত্রক কেন্দ্রের হাতে থাকা সত্ত্বেও কিছু করতে পারলেন না।”

মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের বেশ কিছু রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় বছরের পর বছর ধরে সমস্যায় ভুগতে হয়েছে মানুষকে। লঙ্কাপাড়া, বান্দাপানি, তুলসীপাড়ার মতো চা বাগানগুলিতে জলের সমস্যা রয়েছে।

তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের মূল রাস্তাঘাটগুলি মেরামত ও পুনর্নির্মাণের কাজ ৯০ শতাংশেরও বেশি সম্পন্ন হয়েছে। ১৩৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বীরপাড়া থেকে লঙ্কাপাড়া পর্যন্ত দীর্ঘ ১৮ কিমি রাস্তাটি পুনর্নির্মাণের কাজ হয়েছে। এছাড়া রাঙ্গালিবাজনা থেকে পাঁচ মাইল, ডিমডিমা চা বাগান থেকে বান্দাপানি চা বাগান, টোট্টোপাড়া মোড় থেকে টেট্টোপাড়া বল্লালগুড়ি জিপি পর্যন্ত কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা পুনর্নির্মাণ করা হয়েছে।

জয় জহার, বন্ধু প্রকল্পে ১০০ শতাংশ উপতোক্তা বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন। গ্রামের বহু ছোট ছোট রাস্তা পাকা ও কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। চা বাগানগুলিতে পানীয় জলের সমস্যা ৮০ শতাংশেরও বেশি মিটে গিয়েছে বলে দাবি তৃণমূল নেতাদের। চা বাগান তৃণমূল কংগ্রেস মজদুর ইউনিয়নের সহ সভাপতি মান্নালাল জৈন বলেন, “চা বাগান থেকে শুরু করে মাদারিহাটের সমস্যা মেটাতে বিধায়ক মনোজ টিগগার কোনও ভূমিকা নেই। পানীয় জল, রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে চা সুন্দরী প্রকল্পে চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য ঘর তৈরির প্রকল্প রাজ্য সরকারই নিয়েছে।”

নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সম্পর্কে বিধায়ক মনোজ টিগগা বলেন, “বীরপাড়ায় ওভারত্রিজ তৈরির দাবি বিধানসভাতেও তুলেছি। ডলোমাইট ওঠানামার জায়গাটি রেলমন্ত্রকের উদ্যোগে হরিপুরে স্থানান্তরিত করার কাজ শুরু হয়েছিল। মঙ্গলবার রেলের জেনারেল ম্যানেজারকে একই দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু রাজ্য সরকার হরিপুরে জমি দিচ্ছে না। ওভারব্রিজ তৈরির জন্যও সহযোগিতা করছে না।”

তার দাবি, বীরপাড়া থেকে লঙ্কাপাড়া রাস্তা পুনর্নির্মাণের টাকা কেন্দ্রীয় সরকারই দিয়েছে। বাংলার গ্রামীণ সড়ক যোজনা নামে পাকা রাস্তা তৈরির যে প্রকল্পটি রাজ্য সরকার চালাচ্ছে তা আদতে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা। কেন্দ্রীয় সরকারের টাকায় নাম পালটে প্রকল্প চালাচ্ছে রাজ্য সরকার।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen