গান্ধীজির নাম মুছে এবার ‘রামজি’ বিল! সংসদে সোচ্চার তৃণমূল
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৫৫: ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প বা মনরেগা (MGNREGA) থেকে এবার জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর নাম মুছে ফেলার অভিযোগ উঠল মোদী সরকারের (Modi government) বিরুদ্ধে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাবিত নতুন বিলে এই প্রকল্পের নাম বদলে ‘বিকশিত ভারত গ্যারান্টি ফর রোজগার অ্যান্ড আজীবিকা মিশন (গ্রামীণ)’ বা সংক্ষেপে ‘ভিবি-জি রাম-জি’ (VB-G RAM-G) করার কথা বলা হয়েছে। মঙ্গলবার সংসদে এই বিল পেশ হতেই তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়ে তৃণমূল কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি। এই পদক্ষেপকে ‘গান্ধীজির অপমান’ বলে আখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি বিলটিকে অবিলম্বে সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে।
এদিন বিলটি পেশ হওয়ার আগেই আলোচনার সময় তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় (Saugata Roy) সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “রামজি দেশজুড়ে পূজনীয়, তাতে দ্বিমত নেই। কিন্তু দেশগঠনে মহাত্মা গান্ধীর অবদান ও স্বাধীনতার ইতিহাসে তাঁর ভূমিকা কেউ অস্বীকার করতে পারেন না। এভাবে নাম বদল করে তাঁকে অপমান করার অধিকার সরকারের নেই।” নাম পরিবর্তনের বিতর্কের পাশাপাশি রাজ্যগুলির প্রতি কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনার প্রসঙ্গও তুলে ধরেন সৌগত রায়। তিনি অভিযোগ করেন, এই নতুন বিলে কেন্দ্রীয় বরাদ্দের পরিমাণ ৯০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৬০ শতাংশ করা হচ্ছে, যার ফলে রাজ্যগুলির রাজকোষের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি হবে।
বিরোধীদের তরফে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে, রামের নামে তাঁদের কোনও আপত্তি নেই, কিন্তু মহাত্মা গান্ধীকে অপমান করা মেনে নেওয়া হবে না। বিলটি পেশ হওয়ার পর বিরোধীরা ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান এবং শেষে ওয়াক আউট করেন। যদিও বিরোধীদের এই আপত্তিকে আমল দিতে নারাজ সরকার পক্ষ। সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, বিরোধীরা যতই প্রতিবাদ করুক, ‘রামজি’ বিল পাশ হবেই।
মনরেগার আদলে তৈরি হলেও মোদী সরকারের এই নতুন বিলে বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে:
১. কাজের সময়সীমা বৃদ্ধি: মনরেগায় বছরে ন্যূনতম ১০০ দিন কাজের গ্যারান্টি ছিল, যা বাড়িয়ে এই বিলে ১২৫ দিন করা হয়েছে।
২. মজুরি প্রদান: আগে টানা ১৫ দিন কাজ করার পর মজুরি দেওয়া হতো। নতুন নিয়মে প্রতি সপ্তাহের শেষে বা সপ্তাহান্তে কাজের মজুরি দেওয়া হবে।
৩. আর্থিক অনুপাত: মনরেগা প্রকল্পে আর্থিক অনুদানের সম্পূর্ণ দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রের। কিন্তু নতুন বিলে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে খরচের অনুপাত হবে ৬০:৪০। অর্থাৎ, রাজ্যগুলিকেও এখন প্রকল্পের ৪০ শতাংশ খরচ বহন করতে হবে।