কেতুগ্রামে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে নৃশংস খুন

শান্ত কেতুগ্রামকে অশান্ত করতে চাইছে বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। এই কেন্দ্রের বিজেপির পরাজিত প্রার্থী অনাদি ওরফে মথুরা ঘোষ বলেন, এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই।

May 5, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

গণনা পরবর্তী হিংসায় উত্তপ্ত হয়ে উঠল পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম। সোমবার রাতে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যকে কুপিয়ে নৃশংসভাবে খুন করার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। এমনকী তাঁর একটি পা কেটে নেওয়া হয়। মৃতের নাম শ্রীনিবাস ঘোষ(৬২)। তাঁর বাড়ি কেতুগ্রাম থানার মালগ্রামে। আরও তিন তৃণমূল কর্মীর উপরও আক্রমণ চালানো হয়। একজনের আঙুল কেটে নেওয়া হয়েছে। জখমদের কাটোয়া মহকুমা হাসপাতাল ও বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনার জেরে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। কেতুগ্রাম (Ketugram) থানার পুলিস পাঁচজনকে আটক করে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ কেতুগ্রাম-১ ব্লকের আগরডাঙা পঞ্চায়েতের মালগ্রামের তৃণমূলের সদস্য শ্রীনিবাসবাবু তাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের (Trinamool) ৪৮নম্বর বুথের এজেন্ট তরুণ ঘোষ। অভিযোগ, সেই সময় কয়েকজন তৃণমূলের পতাকা খুলছিল। ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজেপির লোকজন। এরপর তাঁরা উত্তর মাঝিপাড়ায় যেতেই আচমকা আক্রমণ চালায় বিজেপির লোকজন। হাঁসুয়া, লাঠি নিয়ে হামলা হয়। ঘটনার সময় ওই রাস্তা দিয়ে আসছিলেন আরও দুই তৃণমূল কর্মী সাগর ঘোষ ও চন্দ্রশেখর ঘোষ। তাঁদের উপরেও হাঁসুয়া নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে এলোপাথাড়ি কোপ মারা হয়। এমনকী শ্রীনিবাসবাবুর বাঁ পায়ের নীচের দিকের অংশ কেটে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। শরীরের একাধিক জায়গায় কোপানো হয়। ঘটনাস্থলেই তিনি লুটিয়ে পড়েন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর বিজেপির লোকেরা তরুণ ঘোষ, সাগর ঘোষ ও চন্দ্রশেখর ঘোষের উপরে হাঁসুয়ার কোপ মারতে থাকে। তাঁদের রক্তাক্ত অবস্থায় রাতেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চন্দ্রশেখরবাবুর হাতের একটি আঙুল কেটে নেওয়া হয়। ঘটনার পর গ্রামের বাসিন্দারা ছুটে এলে পালিয়ে যায় বিজেপির লোকজন। ঘটনার পর রাতেই কেতুগ্রাম থানার আইসির নেতৃত্বে বিশাল পুলিস বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। মঙ্গলবার সকালে মৃতের ছেলে অভিজিৎ ঘোষ কেতুগ্রাম থানায় ২০ জনের নামে লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, গ্রামেরই বেশ কয়েকজন এই ঘটনা ঘটায়।

এদিন গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, গোটা এলাকা শুনশান। কেতুগ্রাম থানার প্রচুর পুলিস গ্রামে টহল দিচ্ছে। গ্রামে অচেনা লোক দেখলেই পুলিস তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মৃতের স্ত্রী অপর্ণা ঘোষ বলেন, তৃণমূল করায় আমার স্বামীকে বিজেপির লোকেরা হুমকি দিয়ে রেখেছিল। রাতে স্বামী বাড়ি থেকে বের হতেই তাঁকে কুপিয়ে খুন করল বিজেপির লোকেরা। আমরা পথে বসে গেলাম।

আগরডাঙা অঞ্চলের তৃণমূলের সভাপতি সালেক হাসান বলেন, ওই বুথে বিজেপি (BJP) ৩০০ভোটে লিড পেয়েছে। ভোটের আগে এই অঞ্চল থেকেই বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মীর বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার হয়। তখন থেকেই ওরা এলাকায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে। এদিন আমাদের কর্মীকে খুন করে বুঝিয়ে দিল বাংলায় ক্ষমতায় এলে কী করত।

এদিন সকালেই নিহতের পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন কেতুগ্রামের তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী শেখ শাহনওয়াজ। তিনি বলেন, ভোটের আগে থেকেই বিজেপি এলাকায় গিয়ে তাদের কর্মীদের প্ররোচনা দিচ্ছিল। এটা তারই পরিণাম। শান্ত কেতুগ্রামকে অশান্ত করতে চাইছে বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। এই কেন্দ্রের বিজেপির পরাজিত প্রার্থী অনাদি ওরফে মথুরা ঘোষ বলেন, এর সঙ্গে বিজেপির কোনও যোগ নেই।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen