অন্তঃসত্ত্বা সোনালী ইস্যুতে কেন্দ্রকে তীব্র আক্রমণ, অমিত শাহকে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তৃণমূলের

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৬:৫৩: দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে কলকাতায় এসে ‘সোনার সরকার’ গড়ার বার্তা দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah)। আর তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দাগলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা (Shashi Panja) ও দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)।
বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা সোনালী বিবিকে বাংলাদেশি বলে পুশব্যাক করার ঘটনায় কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে কুণাল বলেন, “একজন অন্তঃসত্ত্বা মাকে পরিযায়ী দেখিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল। আদালতের রায়ে প্রমাণ হল বিজেপির নারী বিরোধী, বাংলা বিরোধী নীতি।”
তৃণমূলের দাবি, এই ঘটনায় কেন্দ্রের প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া উচিত। শশী পাঁজার বক্তব্যে উঠে আসে নারী ক্ষমতায়ন ও বাংলার সংস্কৃতির প্রতি বিজেপির ‘অবজ্ঞা’। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মহিলাদের আর্থিক ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করেছেন। বিদ্যাসাগরের আদর্শকে বাস্তব রূপ দিয়েছেন।”
কুণাল ঘোষ কটাক্ষ করে বলেন, “বাংলা বলা কি অপরাধ? বিএসএফ বেছে বেছে বাংলাভাষীদের বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দিচ্ছে। বিজেপি (BJP) বলেছে বাংলা ভাষা নেই, অথচ অমিত শাহ বলছেন বিদ্যাসাগর বাংলা ভাষার সৃষ্টা!”
সোনালী ইস্যুতে কলকাতা হাই কোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে ও আরও পাঁচজনকে বাংলাদেশ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। এই রায়কে হাতিয়ার করে তৃণমূল আরও জোরালোভাবে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ায়।
অমিত শাহের ‘সোনার সরকার’ গড়ার মন্তব্যের জবাবে কুণাল বলেন, “মা দুর্গার সামনে দাঁড়িয়ে অসুরের দিকে তাকিয়ে সরকার চাইছেন শাহ! কিন্তু মা দুর্গা বাংলায় অসুরের সরকার হতে দেবেন না। চতুর্থবার সরকার গড়বেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।”
বিদ্যাসাগরের প্রসঙ্গেও তৃণমূলের কটাক্ষ। নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীর দিকে ইঙ্গিত করে কুণাল জানান, যে মঞ্চে শাহ বিদ্যাসাগর নিয়ে বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, সেখানে ছিলেন সেই ব্যক্তি, যিনি ২০১৯ সালে শাহের বিরুদ্ধেই মূর্তি ভাঙার অভিযোগ করেছিলেন।
এ প্রসঙ্গে আজ এক্স হ্যান্ডেলে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানালেন, “আইনের দীর্ঘ হাত অবশেষে পৌঁছেছে। FRRO (Delhi)-র আটক ও নির্বাসনের নির্দেশকে কলকাতা হাই কোর্ট অবৈধ ঘোষণা করেছে এবং বীরভূমের অন্তঃসত্ত্বা মহিলাসহ ছয়জনকে অবিলম্বে দেশে ফিরিয়ে আনার নির্দেশ দিয়েছে।”
হাইকোর্টের রায় প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, “এই রায় প্রমাণ করে, বাঙালিদের বিরুদ্ধে একটি নিষ্ঠুর ও পরিকল্পিত হয়রানির প্রচার চালিয়েছে বাংলা-বিরোধী জমিদাররা। আমরা আদালতে, জনমত গঠনে এবং নির্বাচনে তাঁদের জবাবদিহি করাব।”
তিনি আরও লেখেন, “বাংলার মানুষ জাতিবিদ্বেষ, অপমান এবং বর্জনের রাজনীতি সহ্য করবে না। ২০২৬-এ যারা ভয় ও নিপীড়নের রাজনীতি করেছে, তারা জনগণের রায় পাবে।”
শেষে অভিষেকের বার্তা, “ন্যায় প্রতিষ্ঠার পথ শুরু হয়েছে। বাংলার মানুষের মর্যাদা, অধিকার ও ভাষা রক্ষায় আমাদের সংকল্প অটুট।”
Today, the long arm of the law has finally caught up. The Hon’ble Calcutta High Court has held the FRRO (Delhi) detention and deportation order unlawful and directed the immediate repatriation of six people, including the pregnant woman from BIRBHUM, who were labelled…
— Abhishek Banerjee (@abhishekaitc) September 26, 2025