ত্রিপুরায় সরকারি চাকরির আউটসোর্সিং নোটিশ, বিতর্ক চরমে
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে বিভিন্ন বিভাগে সরাসরি নিয়োগ হবে না। চাহিদা মতো আউটসোর্সিং করে নিয়োগ দেওয়া হবে। একটি বেসরকারি সংস্থাকে এই বরাত দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ভিশন ডকুমেন্টে বিজেপির দাবি ছিল ঘরে ঘরে চাকরি, মিসড কলে চাকরি। সরকার গড়ার পর বেরোজগারি সূচক অথবা বেকারত্বের তালিকায় দেশে এখন দ্বিতীয় স্থানে ত্রিপুরা। সরকারে বিজেপি আইপিএফটি (IPFT) জোট।
এই বিতর্কের সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিভিন্ন বিভাগে আউটসোর্সিং নিয়োগ ঘিরে বিবাদ বিরাট আকার নিল। বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের প্রবল সমালোচক প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণ ফের বিস্ফোরক। তিনি সরকারি বিভিন্ন বিভাগে আউটসোর্সিংয়ের তীব্র বিরোধিতা করেন।
আগরতলায় সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপির (BJP) হেভিওয়েট বিধায়ক সূদীপ রায় বর্মণ বলেছেন, আমি সরকারপক্ষের বিধায়ক হয়েও এই আউটসোর্সিংয়ের বিরোধিতা করছি। বিধানসভায় একই অবস্থান নিয়েছিলাম।
সুদীপবাবুর এমন বিস্ফোরক মন্তব্যের পর রাজ্যে প্রবল আলোড়ন পড়েছে। বিরোধী দল সিপিআইএমের কটাক্ষ রাজ্যে এমন অবস্থা তৈরির দায় তাঁকেও নিতে হবে। কংগ্রেসেও সমালোচনায় মুখর। গত বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল কংগ্রেস ত্যাগ করে তাঁর নেতৃত্বে রাতারাতি বিরোধী বিধায়করা বিজেপি হন। বাম জমানার শেষ হয়ে ভোটে জিতে ক্ষমতায় বিজেপি।
সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এখন থেকে বিভিন্ন বিভাগে সরাসরি নিয়োগ হবে না। চাহিদা মতো আউটসোর্সিং করে নিয়োগ দেওয়া হবে। একটি বেসরকারি সংস্থাকে এই বরাত দেওয়া হয়েছে।
ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পিওন, নাইটগার্ড, কুক, মালি, স্টেনোগ্রাফার, ডিটিপি অপারেটর, জমাদার সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিভাগে সরাসরি নিয়োগ আর হবে না। এজেন্সি দিয়ে নিয়োগ করা হবে। এই নোটিশ ঘিরেই রাজনৈতিক পরিস্থিতি সরগরম।
দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে ত্রিপুরা (Tripura) বিজেপির অভ্যন্তর আগে থেকেই সরগরম। মুৃখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে দলেই প্রবল বিক্ষোভ। একাধিক বিধায়ক সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে দিল্লি গিয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। বিদ্রোহী বিজেপি বিধায়কদের নেতা সুদীপ রায় বর্মণ।
রাজ্যে বাম জমানার সময় সুদীপ বাবু ছিলেন কংগ্রেসের হেভিওয়েট নেতা। তিনি দল ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন। গত নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যান। রাজ্যে পরিবর্তনের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী হন। এর পরেই স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করেন। তাঁকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী নেতা মানিক সরকার বলেছিলেন, বাংলাবাসীরা সময় করে ত্রিপুরা আসুন পরিস্থিতি এমনিতেই বুঝে যাবেন। বিজেপির বিষ গলায় নেবেন না। মানিকবাবুর এই মন্তব্যের পর দেশ জুড়ে প্রবল আলোড়ন ছড়ায়। তবে বিজেপির বেশিরভাগ বিধায়করা নীরব থাকেন।