লোকসভার আগে বঙ্গ BJP-তে ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে ‘দলবদলু’রা, চিন্তায় ‘আদি’রা

দলবদলুদের হাতেই চলে যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি।

December 12, 2023 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi
বঙ্গ বিজেপিতে লোকসভা নির্বাচনের আগে ফের সক্রিয় হয়ে উঠছে ‘দলবদলু’রা, চিন্তায় ‘আদি’রা

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দলবদলুদের হাতেই চলে যাচ্ছে বঙ্গ বিজেপি। দলের আদিরা বহু জেলা ও মণ্ডলে অপসারিত, কোথাও বহিষ্কৃত, আবার অনেক জোনে নিষ্ক্রিয়। অধিকাংশ জেলাতেই সিপিএম, তৃণমূলের লোকজন নিয়ন্ত্রণ করছে গেরুয়া পার্টি। দলের রাজ্য কমিটির মাথায় সুকান্ত মজুমদার থাকলেও আসলে যে নিচুতলায় যে তাঁর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই, তা নিয়ে প্রকাশ্যেই একাধিক সময়ে সরব হতে দেখা গেছে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।

আগামী লোকসভা নির্বাচনেও দলবদলুরাই বেশি গুরুত্ব পেতে চলেছে বলে আশঙ্কায় রয়েছে দলের আদিরা। গত বিধানসভা ভোটের মুখে বেনোজল ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছিল বঙ্গ বিজেপি। নবান্ন দখল লড়াইয়ের শেষ লগ্নে পার্টির রাশ চলে গিয়েছিল দলবদলুদের হাতে। তাই প্রার্থী তালিকায় আদি নেতাদের চেয়ে বাড়তি অগ্রাধিকার পেয়েছেন নব্যরা। ২০০ আসন জয়ের স্বপ্নভঙ্গের পর গেরুয়া পার্টির অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে এই বিষয়গুলি উঠে এসেছিল। ২০২৪ লোকসভা ভোটের প্রাক্কালে ফের একই আশঙ্কা তাড়া করছে পদ্ম শিবিরকে। কারণ, এই মুহূর্তে পার্টির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর শীর্ষ পদাধিকারীরা পুরনো নেতাদের তুলনায় অনভিজ্ঞ। স্বভাবতই লোকসভার আগে জার্সি বদলে গেরুয়া খাতায় নাম তোলার ভিড় সামাল দেওয়া তাঁদের কাছে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ। পাশাপাশি এমপি টিকিটের আশায় বহু প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বের চাপ হজম করাও কঠিন। অন্যদিকে, গত রবিবার তিন রাজ্যে বিজেপির আশাতীত সাফল্যে বঙ্গ বিজেপিকে বাড়তি চাঙ্গা করেছে। নতুন করে বিজেপির ‘মরা গাঙে বান’ এসেছে। তবুও তাতে জয় মা বলে তরী ভাসালে, তা ডোবা নিশ্চিত বলেই মনে করছেন আদি নেতাদের একাংশ।

সম্প্রতি বীরভূম, উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ সহ রাজ্যের একাধিক জেলায় বিভিন্ন অপরাধে দলের মাঝারি ও নিচুতলায় নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ, কালো টাকা সাদা করা কিংবা মহিলার নগ্ন ছবি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। যাঁদের অধিকাংই যুব মোর্চা, মহিলা মোর্চা সহ একাধিক সহযোগী সংগঠনের জেলা কিংবা মণ্ডলস্তরের নেতা-কর্মী। এ প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির আদি এক নেতা বলেন, কোনও রকম ছাঁকনি ছাড়াই যাকে তাকে পার্টির পতাকা হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কিছুদিনের মধ্যেই পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে পদ। এলাকাবাসী তাঁদের স্থানীয়স্তরে বিজেপির মুখ হিসেবে দেখছেন। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা নিজেদের অতীত ঝেড়ে ফেলতে পারছে না। তাই নানা অভিযোগে পুলিসের হাতে পাকড়াও হতে হচ্ছে তাঁদের। যার জেরে বিজেপির ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে।

সবমিলিয়ে ‘দুষ্টু গোরু’ থেকে ‘গোয়াল’ রক্ষা করাই এখন বিজেপির নেতাদের মাথা ব্যাথার কারণ হয়ে উঠেছে। বিষয়টি প্রকারন্তরে স্বীকার করে নিয়েছেন দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, স্ক্রুটিনি করে পার্টিতে লোক নিতে হবে। না হলে বিধানসভার মতো তিক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে হবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen