১১ লক্ষ পাতার নথি নিয়ে ছাত্রনেতা উমরকে জেরা দিল্লি পুলিশের!

আজ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অমিতাভ রাওয়াতের সামনে ভিডিয়ো শুনানিতে উমরের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে তাঁকে।

September 15, 2020 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

৫০০ নয়। হাজার নয়। ১ লক্ষও নয়। একেবারে ১১ লক্ষ পাতার নথির পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ নিয়ে তাঁকে জেরা করতে হবে! তাই ছাত্রনেতা উমর খালিদকে হেফাজতে চাইল দিল্লি পুলিশ। আজ অতিরিক্ত দায়রা বিচারক অমিতাভ রাওয়াতের সামনে ভিডিয়ো শুনানিতে উমরের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত মঞ্জুর হয়েছে। ২৪ সেপ্টেম্বর ফের আদালতে তোলা হবে তাঁকে।

উমরের আইনজীবী সওয়াল করেছিলেন, দিল্লিতে ২৩-২৬ ফেব্রুয়ারি অর্থাৎ সংঘর্ষের সময়ে উমর সেখানে ছিলেনই না। যদিও এফআইআরে অমিত শাহের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন দিল্লি পুলিশের দাবি, এই সংঘর্ষ পুর্বপরিকল্পিত, যার অন্যতম মাথা উমর। তিনি বক্তৃতায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দিল্লি সফরের সময় সাধারণ মানুষকে পথ অবরোধ করতে বলেছিলেন। এবং এ-ও বলেছিলেন, ভারতে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত, সে কথা আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরতে হবে। আন্দোলনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্রও মজুত করা হয়েছিল বলে এফআইআরে অভিযোগ। উমরের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ, খুন, খুনের ষড়যন্ত্র করার অভিযোগ আনা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ৪ সেপ্টেম্বর উমর বলেছিলেন, তাঁর মিনিট পনেরোর বক্তৃতার মধ্যে একটি ৩০-৪০ সেকেন্ডের ক্লিপ ২ থেকে ৪ মার্চ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে বিজেপির আইটি সেল। ৬ মার্চ তাঁর নামে এফআইআর দায়ের করা হয় অবিকল ওই অভিযোগের ভিত্তিতে!

উমর দিন দশেক আগে এ-ও বলেছিলেন, সত্যিই কি ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর গোষ্ঠী সংঘর্ষের নেপথ্যের ষড়যন্ত্র খুঁজতে তদন্ত চালাচ্ছে দিল্লি পুলিশ? না কি সেই তদন্ত ষড়যন্ত্র সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে? ১১ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার রাতে তাঁর গ্রেফতারির পরে ক্ষুব্ধ পড়ুয়া এবং বিরোধী শিবিরের দাবি, এ বার স্পষ্ট যে, পুলিশের নিশানা সিএএ-এনআরসির প্রতিবাদীরাই।

উমরকে যে ভাবে সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা আইনে (ইউএপিএ) গ্রেফতার করা হয়েছে, তার পর সিপিএমের অভিযোগ, গোষ্ঠী সংঘর্ষের আগে যে সমস্ত বিজেপি নেতা সত্যিই প্ররোচনামূলক কথা বলেছিলেন, তাদের কাউকে ছোঁয়নি দিল্লি পুলিশ। অথচ এই কড়া আইনে গ্রেফতার করা হচ্ছে একের পর এক ছাত্রনেতাকে।  যে সমস্ত বিজেপি নেতার দিকে প্ররোচনার অভিযোগের আঙুল, তাঁদের অন্যতম কপিল মিশ্র উমরের গ্রেফতারির জন্য ধন্যবাদ দিয়েছেন দিল্লি পুলিশকে। দাবি করেছেন, দীর্ঘ দিন ধরে দিল্লিতে বড় মাপের গোষ্ঠী সংঘর্ষের সলতে পাকাচ্ছিলেন তাঁরা। যা নাকি মুম্বইয়ের ২৬/১১-র হামলার থেকে কম ভয়ঙ্কর হত না। সেই কারণে উমরের মতো দোষীদের ফাঁসি কিংবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের মতো কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত বলে ভিডিয়ো-টুইটে তাঁর দাবি।

সমাজকর্মী হর্ষ মান্দের, যোগেন্দ্র যাদব, অপূর্বানন্দদের অভিযোগ, দিল্লির গোষ্ঠী সংঘর্ষের তদন্ত গত কয়েক মাসে যে ভাবে এগিয়েছে, তাতে স্পষ্ট, ‘উঁচু তলার’ নির্দেশ মেনে শুধু প্রমাণ ‘সাজিয়ে যাচ্ছে’ পুলিশ। যোগেন্দ্রর প্রশ্ন, তদন্ত শুরুর আগেই মার্চে সংসদে দাঁড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ চক্রান্তকারীদের নাম বলেছিলেন কী ভাবে? সেই তালিকা কি তবে তদন্তের আগেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল?

প্রতিবাদীদের মতে, আগামী দিনের সম্ভাব্য আন্দোলনের মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়ারও চেষ্টা হচ্ছে। না হলে অন্তত অর্থনীতির অধ্যাপক জয়তী ঘোষ, সমাজকর্মী যোগেন্দ্রদের নাম চার্জশিটে থাকত না বলে তাঁদের দাবি।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen