স্নাতকস্তরে বৈদিক গণিত, সূর্য-চন্দ্র-তারার গতিপথ গণনা! UGC-র সিদ্ধান্তে তুঙ্গে বিতর্ক

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ১৫:১৭: দেশ কি পিছনের দিকে চলতে শুরু করেছে? পৌরাণিক কাহিনিকে কি ইতিহাসের তকমা দেওয়া হচ্ছে? বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (UGC) নতুন পাঠক্রমের খসড়া প্রস্তাবে তেমনই ইঙ্গিত মিলছে। অভিযোগ, ঐতিহ্যের নামে মধ্যযুগীয় ধ্যানধারণা চাপিয়ে দিতে চাইছে কেন্দ্রের সরকার।
স্নাতকস্তরে প্রাচীন ভারতীয় গণিত পড়ানোর সুপারিশ করছে UGC। বৈদিক যুগের শুদ্ধসূত্রের জ্যামিতি, সূর্য-চন্দ্র-তারার গতিপথ ধরে সময় নির্ণয়, এমনকী পঞ্জিকা দেখে শুভক্ষণ নির্ধারণের প্রক্রিয়াও এবার পড়ানো হবে কলেজ পড়ুয়াদের। তবে বিশেষজ্ঞরা উদ্বিঘ্ন। তাঁদের বক্তব্য, পাঠক্রমে প্রাচীন ভারতীয় গণিতের উপর এত জোর দেওয়া হয়েছে যে, আধুনিক গণিতের গুরুত্ব কমে যেতে পারে। এই পাঠক্রম পড়ে পাস করা ছাত্রছাত্রীরা প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানে স্নাতকোত্তর পর্যায়ের গবেষণায় পিছিয়ে পড়বেন।
UGC সচিব মণীশ যোশীর সাফাই, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ অনুসারে প্রস্তাবিত পাঠক্রম মডেল কারিকুলাম হিসাবে কাজ করবে। এর লক্ষ্য পাঠ্যসূচির বিন্যাসে নতুনত্ব আনা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আরও নমনীয়তা দেওয়া। গণিতের খসড়া পাঠ্যক্রমটি বিভিন্ন প্রাচীন ভারতীয় ধারণার উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। স্নাতক স্তরে একটি ‘মাইনর’ কোর্স হিসাবে এই বিষয়ে শেখানোর প্রস্তাব করেছে। সূর্যসিদ্ধান্ত ও আর্যভট্টের প্রাচীন গ্রন্থ থেকে সময় পরিমাপের যুগ, কল্প, ব্রহ্মবর্ষ, এমনকী বিষ্ণু বর্ষ ও শিব বর্ষের মতো চক্র, পঞ্চাঙ্গও পড়ানো হবে। প্রাচীন ভারতীয় পণ্ডিতরা সূর্য, চন্দ্র, নক্ষত্র এবং পৃথিবীর গতি ব্যবহার করে কীভাবে সময় গণনা করতেন তাও শেখানো হবে। কীভাবে পঞ্জিকা দেখে শুভক্ষণ নির্ধারণ করা হয়, তাও থাকবে পাঠক্রমে। উজ্জয়িনীর প্রাইম মেরিডিয়ান, প্রাচীন ঘড়ি-ঘড়তি ইত্যাদি পড়ানো হবে।
সাফ কথায়, জ্যোতির্বিদ্যা, পৌরাণিক কাহিনি এবং সংস্কৃতির মিশ্রণ ঘটবে। তবে অধ্যাপকেরা রীতিমতো চিন্তিত এই বিষয়ে। এমন পাঠ্যক্রমে আধুনিক গণিত সম্পর্কে পড়ুয়াদের ধারণা তৈরি হবে না। ফলে নামী প্রতিষ্ঠানে স্নাতকোত্তর পর্যায়ে গণিত গবেষণার ক্ষেত্রে তাঁদের সমস্যা হবে। তাঁরা পিছিয়ে পড়বেন।