পেগাসাস নজরদারি কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ দুই সাংবাদিক

পেগাসাস কাণ্ডে এই মূহুর্তে উত্তাল বিশ্ব রাজনীতি।

July 27, 2021 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

পেগাসাস কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ দেশের দুই বর্ষীয়ান সাংবাদিক। দ্য হিন্দু পত্রিকার প্রাক্তন সম্পাদক এন রাম এবং এশিয়ান কলেজ অফ জার্নালিজমের চেয়ারম্যান শশী কুমার স্পাইওয়্যার নজরদারিতে তদন্ত করার জন্যে সুপ্রিমকোর্টকে আর্জি জানিয়েছেন। এই নিয়ে পেগাসাস কাণ্ডে মোট তিনটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে।

পেগাসাস কাণ্ডে এই মূহুর্তে উত্তাল বিশ্ব রাজনীতি। সম্প্রতি ভারতের দ্য ওয়্যার সহ বিশ্বের মোট ১৭ টি সংবাদ সংস্থা ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার সংস্থার নজরদারির সম্ভাব্য লক্ষ্যের তালিকা প্রকাশ করেছে। সেই তালিকায় প্রায় ৪০ জন ভারতীয় সাংবাদিকের ফোন নম্বরও রয়েছে। সাংবাদিকদের মত গণতন্ত্রের চতূর্থ স্তম্ভ সংবাদ মাধ্যমগুলোকে যদি নজরদারির আওতায় রাখা হয়, তাহলে দেশে গণতন্ত্র কোথায়!

কাউকে বেকায়দায় ফেলে দেওয়া খবর প্রকাশিত বা সম্প্রচারিত হলে একটা সময়ে সেই সাংবাদিকের কাছে তাঁর সোর্স সম্পর্কে জানতে চাওয়া হতো। সাংবাদিকও অবলীলায় বলে দিতেন, তিনি সোর্স জানাতে আইনত বাধ্য নন। তবে সেটা প্রাক-পেগাসাস যুগের কথা। পেগাসাস যুগে সাংবাদিকদের কাছ থেকে ছলে-বলে-কৌশলে সোর্স জানারই দরকার নেই। ইজরায়েলি স্পাইওয়্যারই সাংবাদিকদের মোবাইল ফোন, এমনকী হোয়াটসঅ্যাপে আড়ি পেতে সোর্স-এর হদিশ দিচ্ছে। সংবাদমাধ্যমের বিরুদ্ধ স্বর থামাতে এর চেয়ে ভালো অস্ত্র আর কী হতে পারে!

সোর্সের পরিচয় ফাঁস হওয়া মানে তো সাংবাদিকই বিপদে। নিউজ পোর্টাল ‘দ্য ওয়্যার’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক সিদ্ধার্থ বরদারাজনের কথায়, ‘অত্যাচার চলছে।…এটা অবিশ্বাস্য রকমের অনধিকারচর্চা।’ ফরেন্সিক পরীক্ষায় জানা গিয়েছে, পেগাসাস দিয়ে বিশ্বের ১৮০ জন সাংবাদিকের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল, সেই তালিকায় ভারতের ৪০ জন এবং তাঁদের অন্যতম বরদারাজন। তাঁর সহকর্মী পরঞ্জয় গুহ ঠাকুরতার ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল ২০১৮ সালে। মোদী সরকার অনলাইনে ‘মিথ্যা তথ্য ছড়াতে’ কী ভাবে ‘পরিকল্পিত উপায়ে ফেসবুককে ব্যবহার’ করছিল, তার উপর পরঞ্জয় তখন অনুসন্ধান চালাচ্ছিলেন।

ওই নিউজ পোর্টালেরই সাংবাদিক রোহিণী সিং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর পুত্র জয় শাহর ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে তদন্তমূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন। পেগাসাস স্পাইওয়্যার দিয়ে আড়ি পাতা হয়েছে তাঁর ফোনেও। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের সাংবাদিক সুশান্ত সিংয়ের ফোনে ‘পেগাসাস সংক্রমণের’ অস্তিত্ব মিলেছে। ২০১৮ সালের যে সময়ে রাফাল যুদ্ধবিমান কেনা নিয়ে দেশ জুড়ে আলোড়ন, সেই সময়ে সুশান্তর ফোনে আড়ি পাতা হয়। সুশান্ত পর পর তদন্তমূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন রাফাল নিয়েই।

ভারতের প্রথম সারির বেশ কয়েকটি সংবাদপত্র, নিউজ চ্যানেল ও নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকদের মোবাইল ফোনে আড়ি পাতার তথ্য সামনে এসেছে। প্রেস ক্লাব অফ ইন্ডিয়া দ্ব্যর্থহীন ভাবে এর নিন্দা করে বলেছে, ‘এমন ঘটনা নজিরবিহীন।’ পিসিআই টুইট করে লেখে ‘এই প্রথম বার দেশের গণতন্ত্রের সব ক’টি স্তম্ভের উপর চরবৃত্তি করা হল। সরকারকে পরিষ্কার ভাবে এর ব্যাখ্যা দিতে হবে।’

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen