হরিয়ানায় ‘ভোটচুরি’: এক তরুণীর ২২টি এপিক কার্ড! রাহুলের অভিযোগে এ কী সাফাই সুকান্তর?

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি, ২০:৪৬: হরিয়ানার ভোটার তালিকায় ব্রাজিলিয়ান মডেল এক তরুণীর ছবি ঘিরে উত্তাল রাজনীতি। কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর (RahulGandhi) অভিযোগ, ব্রাজিলের এক মহিলার ছবি ব্যবহার করে হরিয়ানার (Haryana) একাধিক ভোটার আইডি (Voter ID) তৈরি হয়েছে, যার মাধ্যমে ব্যাপক ভোট জালিয়াতি হয়েছে। তাঁর দাবি, “একই ছবিতে তৈরি হয়েছে ২২টি এপিক কার্ড!” এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবার মুখ খুললেন বিজেপির (BJP) কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar)।
বিশ্বভারতীতে (Visva-Bharati) আয়োজিত ‘বাণিজ্য শিক্ষা সম্মেলন ২০২৫’-এর মঞ্চ থেকে রাহুলকে কটাক্ষ করে সুকান্ত বলেন, “এর আগে পশ্চিমবঙ্গের ভোটার লিস্টে ওসামা বিন লাদেনের ছবিও পাওয়া গিয়েছিল!” তাঁর বক্তব্য, “ভুল হতে পারে। অনেক সময় সরকারি কর্মীরা কম্পিউটারে ডেটা রিপ্লেস করতে গিয়ে ভুল করে ফেলেন। ব্রাজিলের মডেলের নাম আদৌ আছে কি না, সেটাও পরিষ্কার নয়। এ রাজ্যেও প্রশান্ত কিশোরের নাম একাধিক জায়গায় পাওয়া গিয়েছে। এগুলি সব সরকারি দপ্তরের ত্রুটি।”
রাহুল গান্ধীর (Rahul Gandhi) অভিযোগকে ‘অবাস্তব’ বলে উড়িয়ে দিয়ে সুকান্ত বলেন, “রাহুল গান্ধীর বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে কোনও ধারণাই নেই। উনি তো এসি রুম থেকে বেরোন না। যাঁরা মাঠে-ঘাটে কাজ করেন, মানুষের সঙ্গে থাকেন, তাঁরাই বাস্তবটা জানেন।” ২০২৪ সালের হরিয়ানা বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসকে পরাজিত করে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। তবে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, ভোটে কারচুপি করেই জয় ছিনিয়ে নিয়েছে পদ্মশিবির।
তবে বিজেপি (BJP) নেতার এই মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছেন তৃণমূল (TMC) নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayprakash Majumder )। তাঁর প্রশ্ন, “এখন বোঝা যাচ্ছে না সুকান্ত মজুমদাররা নির্বাচন কমিশনের পক্ষে না বিপক্ষে। বিএলও থেকে শুরু করে ভোট প্রক্রিয়ায় যুক্ত সকলেই তো কমিশনের অঙ্গ। ভোটার তালিকা তৈরির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ভুল থাকা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।” তিনি আরও বলেন, “২৭ ফেব্রুয়ারি নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়েই সতর্ক করেছিলেন। কমিশনের কাজকর্মে গলদ আছে বলে দেখিয়ে দেন। আজ তাঁর আশঙ্কাই সত্যি হচ্ছে। গণতন্ত্রের ভিত্তি রক্ষায় কমিশনকে আরও দায়িত্ববান হতে হবে।”
ঘটনার সূত্রপাত রাহুল গান্ধীর সাংবাদিক সম্মেলন থেকে। তিনি অভিযোগ করেন, হরিয়ানার রাই বিধানসভা কেন্দ্রে একই ছবির মহিলা ২২ বার ভোট দিয়েছেন, বিভিন্ন নামে- সীমা, সুইটি, সরস্বতী, রশ্মি, বিমলা প্রমুখ। তাঁর দাবি, “এটা বুথ-লেভেলের নয়, কেন্দ্রীয় পর্যায়ের জালিয়াতি। কমিশন চাইলে এক সেকেন্ডেই এই ডুপ্লিকেট ভোটার বাদ দিতে পারে, কিন্তু তারা বিজেপিকে সাহায্য করছে।”
এই অভিযোগের জবাবে নির্বাচন কমিশনের সূত্র জানায়, “ভোটের দিন কংগ্রেসের পোলিং এজেন্টরা কী করছিলেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা উচিত। যদি একই ভোটার বারবার আসে, এজেন্টদেরই প্রথম আপত্তি জানানোর কথা।”