বন্ধ্যাত্ব প্রতিরোধ করার উপায়

মহিলাদের স্বাভাবিক মেনস্ট্রুয়েশনে প্রতি মাসে একটি করে ওভাম বা ডিম্বাণু তৈরি হয়। ওই ওভাম ফ্যালোপিয়ান টিউবের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছলে স্পার্ম দ্বারা নিষিক্ত হয়।

January 4, 2020 | 2 min read

Authored By:

Drishti Bhongi Drishti Bhongi
Published by: Drishti Bhongi
ছবি সৌজন্যেঃ rightasrain

মহিলাদের স্বাভাবিক মেনস্ট্রুয়েশনে প্রতি মাসে একটি করে ওভাম বা ডিম্বাণু তৈরি হয়। ওই ওভাম ফ্যালোপিয়ান টিউবের নির্দিষ্ট স্থানে পৌঁছলে স্পার্ম দ্বারা নিষিক্ত হয়। নিষিক্ত ডিম্বাণু বা ভ্রূণ ফ্যালোপিয়ান টিউবের মধ্যে দিয়ে জরায়ুর ভিতর পৌঁছয় এবং জরায়ুর দেওয়ালে (এন্ডোমেট্রিয়াম) ইমপ্লানটেশন হয়।

অতএব স্বাভাবিক পথে প্রাকৃতিকভাবে সন্তানধারণ না করতে পারার অনেক কারণ থাকে। আসুন দেখে নিই সেইরকম কিছু সমস্যা, এবং সেগুলি নিরসনের উপায়। 

১)  ওভামের সমস্যা: অনেকসময় মহিলাদের ডিম্বাণু প্রতি মাসে নিষ্ক্রমণ হয় না এবং তা ছোট ছোট সিস্টের আকার নেয়। একেই বলে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিন্ড্রোম (পিসিওএস)। এই সমস্যার শুরু হয় বয়ঃসন্ধিকালের কিছু পর থেকেই। রোগিণীর নিয়মিত মেনস্ট্রুয়েশন হয় না। রাত জাগা, অত্যধিক ফ্যাট জাতীয় খাদ্যগ্রহণ, অলস জীবনযাপন এবং স্ট্রেসই হল রোগের কারণ। 

এছাড়া মহিলাদের বয়স বাড়লে ডিম্বাণুর পরিমাণ ও গুণগত মান খারাপ হয়। সেক্ষেত্রে সন্তানধারণে সমস্যা হতে পারে। অনেক সময় অল্পবয়সি মহিলাদের বিভিন্ন ওভারিয়ান অপারেশন করতে হয়, সেক্ষেত্রেও ডিম্বাণু কমে যেতে পারে।

২) স্পার্মের সমস্যা: স্বাভাবিকভাবে বাচ্চা আসার জন্য অধিক সংখ্যায় স্বাভাবিকভাবে নড়াচড়ায় সক্ষম স্পার্ম প্রয়োজন। স্পার্ম সমস্যার মূল কারণ ইনফেকশন। এছাড়াও ভিটামিন, খনিজের অভাব এবং কিছু জিনগত সমস্যাও দায়ী থাকে।

৩) টিউবাল ফ্যাক্টর: ফ্যালোপিয়ান টিউবে প্রতিবন্ধকতার সমস্যার প্রধান কারণ সংক্রমণ যা মূলত স্বামী-স্ত্রী’র ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থেকে সংক্রমিত হয়। এছাড়া জন্মগত কিছু ত্রুটি এবং এন্ডোমেট্রিওসিস-এর কারণে টিউবাল ব্লক হয়ে থাকে।

৪) ইউটেরাইন ফ্যাক্টর: জরায়ুর ভেতরের দিকে ফাইব্রয়েড, পলিপ বা সেপটাম থাকলে সন্তানধারণে সমস্যা হয়।

এছাড়াও কিছু সংখ্যক দম্পতি আছেন যাঁদের সন্তান না আসার কোনও কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। এছাড়া বেশ কিছু সামাজিক সমস্যাও দেখা দিচ্ছে আজকাল। সেই সমস্যাগুলির অন্যতম হল, এখন পুরুষ এবং মহিলারা কাজের জগতে প্রবেশ করছেন। পেশাগত কারণে বিয়ে করছেন অনেক পরে। স্বভাবতই মহিলাদের মধ্যে বয়সজনিত রোগ বেড়ে চলেছে।

এছাড়া এখন আমরা অনেক দম্পতি দেখতে পাই যারা কাজের জন্য একে অন্যের থেকে দূরে থাকেন, ফলে নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক স্থাপিত হয় না। জীবনে স্ট্রেস লেভেল এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে তার জন্য স্বাভাবিক শারীরিক সম্পর্ক হয় না।

পাশাপাশি ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের মধ্যেই তামাক ও অ্যালকোহল-এর নেশার প্রবণতা বেড়ে গিয়েছে। ফলে তাঁরা বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। একইসঙ্গে বাড়ছে স্থূলত্ব, শারীরিক মিলনে অক্ষমতা এবং স্পার্মের সমস্যা।

অর্থাৎ বন্ধ্যত্বের মূল কারণগুলি হল— পিসিওএস, এন্ডোমেট্রিওসিস, টিউবাল ব্লক, স্পার্মের সমস্যা এবং অসংযমী জীবনযাত্রা।

সমাধান: 

  • জীবনযাত্রা বদলান। সারাদিনে অন্তত ঘাম ঝরিয়ে ৩৫ মিনিট শারীরিক পরিশ্রমের কাজ করতে হবে।
  • তেল, মিষ্টি ও শর্করাজাতীয় খাদ্য খাওয়া কমান।
  • পাতে রাখুন প্রচুর শাকসব্জি।
  • ধূমপান, অ্যালকোহলের নেশা ত্যাগ করুন।
  • মহিলারা সন্তান ধারণের চেষ্টা করুন ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যে।
TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen