শাহী সফরের আগে ভাঙন রুখতে তটস্থ বঙ্গ বিজেপি, চলছে বিক্ষুব্ধদের মানভঞ্জন

অমিত শাহের রাজ্য সফরের আগে বিদ্রোহী বঙ্গ নেতাদের বিদ্রোহ ও ক্ষোভ সামাল দেওয়াই এখন বঙ্গ বিজেপির লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

April 26, 2022 | 2 min read
Published by: Drishti Bhongi

একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবি। তার মধ্যে মাথাচাড়া দিয়েছে বিদ্রোহ। নেতাদের মধ্যে কোন্দল চরমে। সব মিলিয়ে শোচনীয় অবস্থা বঙ্গ বিজেপি শিবিরের। দিন দিন বাড়ছে বিদ্রোহীর সংখ্যা। কেউ পদত্যাগ করছেন, কেউ দিচ্ছেন কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের হুমকি। কিন্তু বিদ্রোহ সামাল দিতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া তো দূরের কথা, উল্টে বিদ্রোহীদের রীতিমতো জামাই আদরে তোয়াজ করছেন রাজ্য নেতারা। দিল্লির নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলে ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টাও জারি। আর তার কারণ একটাই, দলের প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বঙ্গ সফর। তার আগে দলের ভাঙন ঠেকাতে মরিয়া বঙ্গ বিজেপি। যে কোনও মূল্যে ঐক্যবদ্ধ চেহারা তুলে ধরাটাই তাদের লক্ষ্য। তাই বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং হোক কিংবা সৌমিত্র খাঁ, বিক্ষুব্ধদের সহানুভূতি দেখিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করছেন রাজ্য সভাপতি। পরিস্থিতি এমন যে অর্জুন সিং প্রকাশ্যে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁর দাবিকে সমর্থন জানাতে বাধ্য হয়েছেন সুকান্ত মজুমদার। সোমবার বহরমপুরে এসে তিনি জানিয়েছেন, ‘এব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে।’


রবিবারই জুটমিল ইস্যুতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামার হুমকি দেন অর্জুন সিং। এদিন আরও একধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, প্রয়োজনে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাত মেলাতেও পিছ পা হবেন না। দলের ভূমিকা যাই হোক না কেন তিনি পরোয়া করেন না। এদিন দলীয় কর্মসূচিতে যোগ দিতে বহরমপুরে এসে এই প্রসঙ্গে সুকান্তবাবু বলেন, ‘একজন সাংসদ হিসেবে অর্জুন সিংয়ের দায়িত্ব তাঁর এলাকার মানুষের কথা মন্ত্রীর কাছে তুলে ধরা। স্বাভাবিকভাবেই তিনি তুলে ধরবেন। গণতান্ত্রিকভাবে আন্দোলনও করতে পারেন। সেই অধিকার তাঁর আছে। আমরা বিষয়টি দেখছি। এব্যাপারে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার গুরুত্ব দিয়ে বিষয়টি দেখছে। খুব দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করছি।’


বাংলার মানুষের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার কিছুই করছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন অর্জুনবাবু। তাঁর দাবি, জুটমিল শ্রমিক, পাট চাষি পরিবার মিলিয়ে আড়াই কোটি মানুষ চরম সঙ্কটে। এনিয়ে কেন্দ্রের একাধিক মন্ত্রকে বহুবার আবেদন নিবেদন করেও কোনও লাভ হয়নি। এবার রাস্তায় নেমে আন্দোলন করা ছাড়া উপায় নেই। এরপরেও শুধু বিজেপির রাজ্য সভাপতিই নয়, দিলীপ ঘোষও অর্জুনবাবুকে সমর্থন করেছেন। 


অনেকে মনে করছেন, অমিত শাহের রাজ্য সফরের আগে বিদ্রোহী বঙ্গ নেতাদের বিদ্রোহ ও ক্ষোভ সামাল দেওয়াই এখন বঙ্গ বিজেপির লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, নেতাদের বিদ্রোহ, হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ত্যাগ, পদত্যাগের ঘটনা বেড়েই চলেছে। দলে ফাটল ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। আর তাতেই ঘোর বিপাকে রাজ্য থেকে দিল্লির তাবড় নেতারাও। 


তবে জামাই আদরের কৌশলেও তেমন কাজ হচ্ছে না। এদিনই সুকান্তবাবুর কর্মসূচিতে ছিলেন না দলের বিধায়ক গৌরীশঙ্কর ঘোষ। আসানসোল ও বালিগঞ্জ উপ নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর তিনি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে রাজ্য সম্পাদকের পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। যদিও এদিন বিক্ষুব্ধদের প্রসঙ্গে সুকান্তবাবু জানিয়েছেন, বেশিরভাগ জায়গায় দেখা যাচ্ছে ব্যক্তিগত স্বার্থের জন্য কেউ কেউ বিরোধিতা করছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

ভিডিও

আরও পড়ুন

Decorative Ring
Maa Ashchen