বড় ঘোষণা: ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য করবে মমতার সরকার
এখন থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিল্পতালুক তৈরির জন্য যেকোনও সংস্থা বা উদ্যোগপতিকে ২ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে।

কর্মসংস্থানই পাখির চোখ। আর সেই লক্ষ্যে এবার প্রাইভেট ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক স্থাপণে উৎসাহ দিতে বিশেষ ইনসেনটিভ দেওয়ার কথা ঘোষণা করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। এখন থেকে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শিল্পতালুক তৈরির জন্য যেকোনও সংস্থা বা উদ্যোগপতিকে ২ থেকে ১০ কোটি টাকা পর্যন্ত আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। বুধবার এমনই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে স্বরাষ্ট্র সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে বিনিয়োগে উৎসাহ দিতে এবং কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ২০১৪ সালে ইনসেনটিভ পলিসি গ্রহণ করে সরকার। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে তার মেয়াদ শেষ হয়েছে। এবার ফের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে এবং শিল্প স্থাপণে উৎসাহ দিতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জন্যও পাঁচ বছরের জন্য সেই ইনসেনটিভ পলিসির পুনর্নবীকরণ করা হল। নীতি অনুযায়ী, যারা ২০ থেকে ৩৯ একর জমিতে শিল্পতালুক গড়বেন, তাদের ২ কোটি টাকা ইনসেনটিভ দেওয়া হবে। ৪০ থেকে ৫৯ একর জমির মধ্যে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ক্ষেত্রে মিলবে চার কোটি টাকা। ৬ কোটি টাকা আর্থিক সাহায্য পাবেন ৬০ থেকে ৭৯ একর জমিতে শিল্পতালুক গড়া সংস্থা বা শিল্পপতি। ৮০ থেকে ৯৯ একর জমি ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের ক্ষেত্রে সরকার দেবে ৮ কোটি টাকা। আর ১০০ একরের বেশি জমির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা ইনসেনটিভ দেবে রাজ্য।
এছাড়াও শিল্পোদ্যোগীদের জন্য একাধিক পদক্ষেপ ঘোষণা করা হয়েছে। তা হল—শিল্পতালুকের মধ্যে বিনামূল্যে বিদ্যুতের সাব-স্টেশন তৈরি করে দেবে রাজ্য সরকার। তবে জমি দিতে হবে সেই শিল্পসংস্থাকে। সরকারের পক্ষ থেকেই দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত রাস্তাও তৈরি করে দেওয়া হবে। জমি ক্রয়ের স্ট্যাম্প ডিউটিও পরে ফিরিয়ে দেবে নবান্ন। পাশাপাশি শিল্পতালুকের মধ্যে কমন এফলুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (সিইটিপি) তৈরি করলে দেওয়া হবে ৫ লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে রাজ্যে ১,৩০০ একর জমির উপরে এ ধরনের ১৪টি পার্ক তৈরি হয়েছে। সেই সংখ্যা আরও বাড়তে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার।
অন্যদিকে, এদিন মন্ত্রিসভার বৈঠকে ৬৪২ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। করোনা মোকাবিলায় হাসপাতালগুলিতে টেকনোলজিস্টদের চাহিদা বেড়েছে। সেই কারণে রাজ্যের ৭৫টি হাসপাতালে ৪৮৫টি পদ তৈরি করা হল। পাশাপাশি ক্রিটিক্যাল কেয়ারের জন্য ১৫৭ জন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের পদ বাড়ানো হয়েছে।
এদিন নবান্ন সভাঘরে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থি ছিলেন ৩৪ জন মন্ত্রী। অসুস্থতা এবং অন্যান্য কারণে অনুপস্থিত ছিলেন ১০ জন। পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর বাড়িতে দু’জন করোনা আক্রান্ত। সেই কারণে তিনি এদিন হাজির হননি বলে নবান্নে জানিয়েছেন। এছাড়া করোনা আক্রান্ত হওয়ায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সৌমেন মহাপাত্র, স্বপন দেবনাথরা এদিনের বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন।